শেখ হাসিনার শাসনামলে গুমের শিকার বন্দিদের আলাদা ‘কোড নেম’ ছিল। বিশেষ বন্দিদের ডাকা হতো ‘মোনালিসা’ নামে। আর আর গুমঘরকে বলা হতো ‘আর্ট গ্যালারি’, যা পরবর্তীসময় পরিচিতি পায় ‘আয়নাঘর’ নামে।
বুধবার (৮ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ শুনানি শেষে এ তথ্য জানান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এদিন শুনানিতে শেখ হাসিনার শাসনামলে গুমের শিকার ব্যক্তিদের লোমহর্ষক নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরেন তিনি।
এক পর্যায়ে চিফ প্রসিকিউটর ট্রাইব্যুনালকে বলেন, গুমের শিকার ব্যক্তির হাত কেটে ফেলা, নখ উপড়ে ফেলা, ঘূর্ণায়মান চেয়ারে বসিয়ে কিংবা ইলেকট্রনিক শক দিয়ে লোমহর্ষক সব নির্যাতন করা হতো।
তিনি বলেন, গুমের শিকার বন্দিদের আলাদা ‘কোড নেম’ ছিল। বিশেষ বন্দিদের ডাকা হতো ‘মোনালিসা’ নামে। আর গুমঘরকে বলা হতো ‘আর্ট গ্যালারি’, যা পরবর্তীসময় ‘আয়নাঘর’ হিসেবে পরিচিতি পায়। অন্যদিকে গোপন বন্দিশালাগুলোকে ‘হাসপাতাল’ বা ‘ক্লিনিক’ নামে ডাকা হতো। আর গুমের শিকার ভুক্তভোগীদের বলা হতো ‘সাবজেক্ট’।
আরও পড়ুনশেখ হাসিনাসহ বিভিন্ন বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা
শুনানি শেষে আজ আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুমের মাধ্যমে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক দুই মামলার অভিযোগ আমলে নিয়ে ২৮ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনাল-১।
ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ দুই মামলায় অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। ট্রাইব্যুনালে অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে আবেদনের শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তাকে সহযোগিতা করেন প্রসিকিউটর গাজি মনোয়ার হুসাইন তামিম। মামলার বিষয়ে অগ্রগতি ও আসামিদের গ্রেফতার করে হাজির করা এবং পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২২ অক্টোবর দিন ঠিক করা হয়েছে।
এফএইচ/বিএ/জিকেএস