ভ্রমণ

পাহাড় ও সমুদ্রের খোঁজে আমরা

সাফিনাতুন জাহান সাবরিন

কিছুদিন হলো পরীক্ষা শেষ হয়েছে। কোথায় যাবো সবাই মিলে ভাবছিলাম। পরীক্ষা দিয়ে ক্লান্ত বেশ। ইচ্ছা করছিল কোথাও যাই একটু। যেহেতু ডে লং ট্যুর দেবো। তাই শহর থেকে কিছুটা দূরে। সবার পছন্দ পাহাড় আর সমুদ্র। ঠিক করলাম, চট্টগ্রাম শহর থেকে একটু দূরেই বাঁশখালী যাবো। যেহেতু সবাই মেয়ে। আমাদের সুবিধার জন্য বাঁশখালী ইকোপার্ক এবং সমুদ্রসৈকত ঠিক করি।

একসঙ্গে পাহাড় এবং সমুদ্র দেখা হবে। কারণ বাঁশখালী একমাত্র জায়গা; যেখানে পাহাড় এবং সমুদ্রের মেলবন্ধন লক্ষ্য করা যায়। অরণ্যঘেরা ও জলধারার বন্ধনে আবদ্ধ। চট্টগ্রাম শহরের অন্যতম সুন্দর একটি উপজেলা। তাই প্রথমে ইকোপার্কে যাবো। এরপর সমুদ্রসৈকতে যাবো।

বাঁশখালী ইকোপার্ক শান্ত ও মনোরম। এর মূল আকর্ষণ এখানকার ঝুলন্ত সেতু কিংবা সুইং ব্রিজ। পাহাড়ের কোলঘেঁষে গড়ে উঠেছে কৃত্রিম লেক। লেকের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত সুইং ব্রিজ। নৈসর্গিক সৌন্দর্যমণ্ডিত উঁচু-নিচু পাহাড়, লেকের স্বচ্ছ পানি, বনাঞ্চল নিয়ে বাঁশখালী ইকোপার্ক। ইকোপার্কের সুউচ্চ পাহাড়ের শীর্ষে উঠলে দেখা মেলে বঙ্গোপসাগরের বিস্তৃত জলরাশি। পুরো ইকোপার্কের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য আছে ওয়াচ টাওয়ার। দক্ষিণ চট্টগ্রামের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বেশ পরিচিত ইকোপার্কটি।

ইকোপার্ক ভ্রমণের পর চলে যাই দুপুরের খাবার খেতে। খাবার শেষ করে চলে যাই বাঁশখালী সমুদ্রসৈকতে। সমুদ্রের বিশলতা দেখে সবার ক্লান্তি যেন শেষ হয়ে গেল। সমুদ্র যেন তার অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে, এসো আমার কাছে, হারিয়ে যাও আমার গভীরতায়।

আরও পড়ুনতপ্ত দুপুরে সিক্ত হলাম জাফলংয়ে মোহনীয় জাদুতে ঘেরা ক্যামেলিয়া লেক 

এটি কক্সবাজারের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত। যেটি বাঁশখালী সমুদ্রসৈকত ছাড়াও বাহারছড়া সমুদ্রসৈকত হিসেবে বেশ পরিচিত। এটি বেশ নির্জনতার জন্য পরিচিত। সৈকতের বিশেষত্ব হচ্ছে শান্ত। এখানে ভিড় কম হওয়ায় সমুদ্রপ্রেমীরা সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন কোলাহল ছাড়াই।

সৈকতরের সূর্যাস্তের দৃশ্য অনন্য। যে কাউকে মুগ্ধ করবে। চারপাশে ঝাউ বাগান। যা সমুদ্রসৈকতের সৌন্দর্য দ্বিগুণ বৃদ্ধি করেছে। যতদূর চোখ যায় দেখা মেলে নীল আকাশ আর জলরাশি। যেন একে অপরের সাথে মিশে আছে। চুপচাপ, নিরিবিলি ও শান্ত মনোরম পরিবেশ পছন্দ করা ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য একদম উপযুক্ত স্পট।

বাঁশখালী ইকোপার্ক এবং সমুদ্রসৈকত যেতে হলে দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে চট্টগ্রাম শহরের নতুন ব্রিজ যেতে হবে। সেখান থেকে রিজার্ভ ট্যাক্সি পাওয়া যায় সারাদিনের জন্য। সে ক্ষেত্রে খরচ পড়বে ১৫০০-১৬০০ টাকা। এ ছাড়া বাসে করেও যাওয়া যায়।

লেখক: শিক্ষার্থী, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ, পোর্টসিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রাম।

এসইউ/জিকেএস