দেশজুড়ে ঘরে ঘরে জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগীই জ্বরের সঙ্গে শরীরের জোড়ায় জোড়ায় তীব্র ব্যথা, মাথা ব্যথা ও চোখমুখ ফুলে যাওয়ার মতো উপসর্গে ভুগছেন। জ্বর কমে যাওয়ার পরও সপ্তাহের পর সপ্তাহ শরীরে ব্যথা থেকে যাচ্ছে। অনেক রোগীই বলছেন—এরআগে এমন জ্বরের অভিজ্ঞতা হয়নি তাদের।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) ফেসবুক স্ট্যাটাসে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী জানিয়েছেন, এসব উপসর্গের মূল কারণ হচ্ছে চিকুনগুনিয়া—যা ডেঙ্গুর মতোই এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। তার ভাষায়, ‘চিকুনগুনিয়া জ্বরে জোড়ায় জোড়ায় তীব্র ব্যথা হয়, রোগীর হাঁটা-চলা কষ্টকর হয়ে পড়ে। অনেকের চোখ-মুখ ফুলে যায়। জ্বর সেরে গেলেও হাড়ের জোড়ার ব্যথা কয়েক সপ্তাহ থেকে মাসব্যাপী থেকে যেতে পারে।’
ডা. লেলিন আরও জানান, এবছর দেশে জ্বরের বিস্তারের পেছনে মোট ছয়টি ভাইরাসজনিত কারণ রয়েছে। সেগুলো হলো—ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, করোনা, ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জা, পানিবাহিত ভাইরাসজনিত জ্বর ও শ্বাসতন্ত্রীয় সংক্রমণ।
ভাইরাস জ্বর নিয়ে পরামর্শডা. লেলিন চৌধুরীর মতে, এসব ভাইরাসজনিত জ্বরের একে অপরের সঙ্গে উপসর্গে মিল থাকায় নিজের মতো করে ওষুধ না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
‘ডাক্তার রোগীর উপসর্গ, শারীরিক পরীক্ষা ও রক্ত পরীক্ষার ভিত্তিতে সঠিক কারণ নির্ধারণ করবেন। এতে জটিলতা, হাসপাতালে ভর্তি বা মৃত্যু ঝুঁকি কমবে,’ বলেন ডা. লেলিন।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন আরও বলেন, সময়ের সঙ্গে ভাইরাসের রূপান্তর ঘটে, ফলে একই রোগের লক্ষণও পরিবর্তিত হতে পারে। এজন্য ভাইরাস ও বাহক নিয়ে ধারাবাহিক গবেষণার প্রয়োজন। এক্ষেত্রে আমাদের দেশের বড় দুর্বলতা রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
করণীয় নিয়ে যা বললেন ডা. লেলিন
ভাইরাসজনিত জ্বরের প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে ডা. লেলিন বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন। এরমধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত বিশ্রাম, বেশি করে পানি ও তরল খাবার গ্রহণ, দেশি তাজা ফলমূল খাওয়া ও প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ সেবন। আর চিকুনগুনিয়ার পরবর্তী ব্যথা থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে ডা. লেলিন বলেন, নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং প্রয়োজনে প্যারাসিটামলই সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
এসইউজে/এমএমকে/জিকেএস