মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় অনলাইন কাউন্সেলিংয়ের জনপ্রিয়তা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। নাম-পরিচয় গোপন রেখে কেবল অডিও কলে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নেওয়ার পরিমাণ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বেসরকারি সংস্থা ‘মনের বন্ধু’ এর সিনিয়র কাউন্সেলর মেহেদী মোবারক আমান।
জাগো নিউজ-২৪ আয়োজিত ‘বিপর্যয়-জরুরি অবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্যসেবা’ শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে তিনি এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, অনলাইন কাউন্সেলিং জনপ্রিয়তা বাড়ার কয়েকটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, এটি নিরাপদ। অনেকে নিজের যেহেতু সমাজে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে এখনো স্টিগমা রয়েছে, তাই অনেকে অ্যানোনিমাস অবস্থায় অনলাইন কাউন্সেলিংকেই বেশি নিরাপদ মনে করেন। দ্বিতীয়ত, এটি সহজে পাওয়া যায়। যদিও মানসিক স্বাস্থ্যসেবাগুলো এখনও শহরকেন্দ্রিক, তবু এখন গ্রামাঞ্চলেও ইন্টারনেট ব্যবহারের হার বেড়েছে। ফলে রুরাল এরিয়ার মানুষও অনলাইনে এসব সেবা নিতে পারছে।
তিনি বলেন, অনলাইন কাউন্সেলিংয়ে গোপনীয়তা রক্ষা করার সুবিধাও আছে। কেউ চাইলে নিজের পরিচয় প্রকাশ না করেই সেবা নিতে পারে। অনেকেই এখন গুগল মিট, জুম ইত্যাদি প্ল্যাটফর্মে কাউন্সেলিং নিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
আরও পড়ুন:মানসিক রোগী মানেই বলে ‘পাগল’, চিকিৎসার বাইরে ৯২ শতাংশইন্টারনেট আসক্তিতে বাড়ছে তরুণদের মানসিক চাপশিশুর ইন্টারনেট আসক্তি মোকাবিলায় নেতৃত্ব দিতে হবে পরিবারকেই
অনলাইনে সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করে এই কাউন্সেলর বলেন, অনলাইনে পুরোপুরি কনফিডেনশিয়ালিটি নিশ্চিত করা সব সময় সম্ভব হয় না। তারপরও আমরা যতটুকু সম্ভব, সেবাগুলোকে নিরাপদ ও সহজপ্রাপ্য রাখার চেষ্টা করছি।
মেহেদী মোবারক আমান বলেন, জরুরি পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে এনজিওগুলোর কাজের ক্ষেত্র আরও বিস্তৃত হয়েছে। আগে বাংলাদেশের বেশিরভাগ এনজিও মূলত কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়নকেন্দ্রিক ছিল। কিন্তু রোহিঙ্গা সংকট, রানা প্লাজা দুর্ঘটনা, কোভিড মহামারি এসব ঘটনার পর থেকে পরিস্থিতি একেবারেই বদলে গেছে। এখন এনজিওগুলো জরুরি পরিস্থিতিতে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখছে।
তিনি বলেন, সত্যি বলতে আমাদের দেশে যখনই কোনো সংকট আসে, তখনই মানুষ সচেতন হয়। আমাদের সংগঠন ‘মনের বন্ধু’র ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। কোভিড পরবর্তী সময়ে আমাদের কার্যক্রম অনেক প্রসারিত হয়। কারণ মানুষ তখন অনলাইনে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিতে শুরু করে। আমরা তখন ইউএনডিপির সঙ্গে একটি প্রজেক্টে কাজ করেছি, যেখানে দেশের ৬৪ জেলার মানুষ অনলাইনে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ও কাউন্সেলিং নিয়েছে। এই অভিজ্ঞতার পর থেকেই জরুরি পরিস্থিতিতে এনজিওগুলোর ভূমিকা অনেক বেড়েছে এবং আমরাও তাতে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছি।
আরএএস/এসএনআর/এমএস