দেশজুড়ে

তথ্য গোপন করে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলারশিপ, বরাদ্দ স্থগিত

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় তথ্য গোপন করে নীতিমালা বহির্ভূতভাবে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অনিয়মের অভিযোগ তুলে একজন আবেদনকারী জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে ও ওই ডিলারশিপের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।

উপজেলা কার্যালয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ জুলাই উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে লটারির মাধ্যমে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল ইকবাল। এতে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের ১২টি বিক্রয়কেন্দ্রের জন্য ২৩ জন আবেদনকারীর মধ্যে ১১ জন ডিলার চূড়ান্ত করা হয়। তাদেরই একজন গোপালপুর ইউনিয়নের দুই নম্বর ইউনিটের (কুচিয়াগ্রাম বটতলা বাজার) মো. অনিক শেখ।

নিয়োগপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে জানানো হয়, ‘আবেদনপত্র যাচাইবাছাই ও সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে প্রার্থীদের যোগ্যতা বিবেচনা করে নীতিমালার আলোকে উপজেলা খাদ্য বান্ধব কমিটির সুপারিশক্রমে’ এ নিয়োগ দেওয়া হয়।

এদিকে গোপালপুর ইউনিয়নের কুচিয়াগ্রাম এলাকার নান্নু মিয়ার ছেলে মো. আরিফুজ্জামান(আবেদনকারী) জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন। তথ্য গোপন করে ডিলারশিপ নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ডিলারশিপ বাতিলের আবেদন করেন তিনি।

মো. আরিফুজ্জামান অভিযোগে করেন, ডিলারশিপ পাওয়া অনিক শেখ ব্যবসায়ী নন। চাল রাখার জন্য যে ঘর তিনি দেখিয়েছেন সেটি ইউনিয়নের বাইরে পৌরসভার মধ্যে অবস্থিত ও আকারে ছোট যেখানে ১৫ মেট্রিক টন চাল রাখা সম্ভব না। তার নিজের নামে সম্পত্তি নেই, তার বাবার নামের জমি সংক্রান্ত দলিল দাখিল করেছেন। সেখানে তিনি কোনো চুক্তিপত্র কিংবা ওয়ারিশ সনদ দাখিল করেননি। এভাবে তিনি তথ্য গোপন করে পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ না করে গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স দাখিল করেছেন। যা খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির বিধিবর্হিভূত। এ কারণে তার ডিলারশিপটি বাতিলযোগ্য।

পরবর্তীতে এ অভিযোগের তদন্তের ভার দেওয়া হয় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলামকে। গত ৬ অক্টোবর সরেজমিনে তদন্ত করেন মো. রফিকুল ইসলাম।

এ বিষয়ে ডিলারশিপ পাওয়া অনিক শেখ জানান, তথ্য গোপনের বিষয়টি সঠিক নয়। গোপালপুর ইউনিয়নে আমার বড় ঘর রয়েছে। কিন্তু ভুলবশত পৌরসভার জায়গার দলিল জমা দেওয়া হয়েছে, এটা ভুল। এ বিষয়ে তদন্ত হয়েছে। এ ভুলটি মার্জনার দৃষ্টিতে দেখা হলে আমার ডিলারশিপ থাকবে। তিনি নিজেকে একজন ব্যবসায়ী বলে দাবি করে বলেন, আমার একটি রাইস মিলও আছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, সোমবার প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। গোপালপুর ইউনিয়নের মধ্যেও অনিকের ঘর রয়েছে। তবে ডিলারশিপের যে ঘরটি তিনি দেখিয়েছেন সেটি পৌরসভার মধ্যে অবস্থিত।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা খাদ্য বান্ধব কমিটির সভাপতি রাসেল ইকবাল জাগো নিউজকে বলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। তিনি এখন পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেননি। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। তবে প্রাথমিকভাবে ওই ডিলারের কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে।

এন কে বি নয়ন/এমএন/এমএস