দীর্ঘ সাত বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ফিরেই অভাবনীয় সাফল্য দেখালো বাংলাদেশের রোলার স্কেটাররা। এই সাফল্যের মূল তারকা বগুড়ার সন্তান নাবীয়্যূন ইসলাম পৃথিবী, যিনি একাই ছিনিয়ে এনেছে দুটি স্বর্ণপদক।
চীনের জিনজিয়াং রাজ্যের কারামাই শহরে অনুষ্ঠিত ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড চায়না-আসিয়ান স্পিড রোলার স্কেটিং সিটি ইনভাইটেশনাল টুর্নামেন্ট’-এ বাংলাদেশের স্কেটাররা দুটি স্বর্ণপদকসহ মোট চারটি পদক জয় করে ৩০ বছরের পুরনো রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।
ওয়ার্ল্ড এশিয়া স্কেটিং এবং চায়না রোলার স্কেটিং ফেডারেশনের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় নাবীয়্যূন ইসলাম পৃথিবীর পারফরম্যান্স ছিল অবিশ্বাস্য। ১১ ও ১২ অক্টোবর রচিত হওয়া এই সাফল্যের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ রোলার স্কেটিং ফেডারেশনের ইতিহাসে এক শ্রেষ্ঠ অধ্যায় যুক্ত হলো।
জুনিয়র-এ গ্রুপ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নাবীয়্যূন প্রথম দিনে ৫০০ মিটার স্পিড রেসে এবং দ্বিতীয় দিনে ১০০০ মিটার স্প্রিন্ট রেসে প্রথম স্থান অধিকার করে জোড়া স্বর্ণপদক অর্জন করেন।
বাংলাদেশ রোলার স্কেটিংয়ের ৩০ বছরের ইতিহাসে বাঙালি ছেলে হিসেবে এশিয়া মহাদেশের ১৭টি দেশের মধ্যে প্রতিযোগিতা করে একসঙ্গে দুটি স্বর্ণপদক অর্জনের ঘটনা এটিই প্রথম। গত ৩০ বছরে আন্তর্জাতিক রোলার স্কেটিং ইভেন্টে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অর্জন।
বাংলাদেশ রোলার স্কেটিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, নাবীয়্যূন ইসলাম পৃথিবী চীনে বেল্ট অ্যান্ড রোড এশিয়ান রোলার স্কেটিং প্রতিযোগিতায় অবিশ্বাস্য দক্ষতায় পারফর্ম করেছে। এই জয় শুধু বাংলাদেশের নয়, এটি এশিয়ার রোলার স্কেটিং ইতিহাসেও এক মাইলফলক।
নাবীয়্যূনের জোড়া স্বর্ণপদক ছাড়াও, বাংলাদেশ দলের হয়ে অংশ নেওয়া আতাহার শিহাব অদিত আরও দুইটি পদক অর্জন করেছে বলে জানা গেছে।
ঢাকার বাইরের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া নাবীয়্যূন ইসলাম পৃথিবীর ওপর এবার বিশেষ নজর ছিল। প্রায় আট বছর ধরে স্কেটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত তিনি।
বগুড়া রোলার স্কেটিং ক্লাবের হয়ে অনুশীলনকারী নাবীয়্যূন ক্লাবটির প্রতিষ্ঠাতা ও কোচ আশরাফুল ইসলাম রহিতের বড় ছেলে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে নামার আগে দুটি জাতীয় ইভেন্টে রৌপ্যপদক এবং রোপ স্কিপিংয়ে চলতি বছর উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন তিনি।
ছেলের এমন ঐতিহাসিক সাফল্যে গর্বিত বাবা ও কোচ আশরাফুল ইসলাম রহিত জানান, এশিয়ার ১৭টি দেশের মধ্যে প্রতিযোগিতা করে ৩০ বছরের ইতিহাসে বাঙালি ছেলে হিসেবে দুটি গোল্ড মেডেল পাওয়াটা এক বিশাল অর্জন। দোয়া করি সে যেন আরও এগিয়ে যায়।
গত ৮ অক্টোবর ১০ সদস্যের বাংলাদেশ দল চীনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। দলের খেলোয়াড়রা হলেন-আকিফ হামিদ, মুনজির আফনান বিশ্বাস, আতাহার শিহাব অদিত, জারিফ আহমেদ সরকার, ফ্যালিশা রুজবেহ, আফরাজ বিন আরিফ এবং নাবীয়্যূন ইসলাম পৃথিবী।
প্রতিযোগিতা শেষে আগামী ১৫ অক্টোবর দেশে ফিরবে বাংলাদেশ দল।
এলবি/এমএমআর/জেআইএম