শিক্ষা

উপদেষ্টা-সচিব ছাড়াই তো বৈঠকে বসলেন, শিক্ষকদের কেন রাস্তায় রাখলেন?

বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধিসহ তিন দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের দাবি পূরণে অর্থ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বৈঠকে বসেছেন বলে জানিয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী।

তিনি বলেন, ‘গত ১২ অক্টোবর শিক্ষকরা যখন প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিলেন, তখন আপনারা ডাকলেন, আমরাও গেলাম। তারা বললেন—অর্থ উপদেষ্টা ও সচিব দেশে নেই, সেজন্য নাকি অপেক্ষা করতে হবে। অথচ আজকে উপদেষ্টা-সচিব ছাড়াই তারা বৈঠকে বসেছেন বলে জানতে পারলাম। ঠেলার নাম বাবাজি! উপদেষ্টা-সচিব ছাড়াই যদি বৈঠকে বসতে পারেন, তাহলে হাজার হাজার শিক্ষকদের তিনটা দিন কেন রাস্তায় রাখলেন?’

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষকদের চলমান অবস্থান কর্মসূচিতে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুনশিক্ষকদের কর্মবিরতি গড়ালো দ্বিতীয় দিনে, আজ ‘মার্চ টু সচিবালয়’পাঠ ছেড়ে মাঠে শিক্ষকরা, ‘নির্লিপ্ত’ শিক্ষা মন্ত্রণালয়বাড়িভাড়ার দাবিতে ঘরছাড়া শিক্ষকরা, রাত কাটছে খোলা আকাশের নিচে

অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘শুনতে পাচ্ছি কিছুটা কম বাড়িভাড়ি বাড়িয়ে শিক্ষকদের কোনোমতে থামাতে চাচ্ছেন। এটা শিক্ষকরা মানবে না। ছয় লক্ষাধিক শিক্ষক পরিবারের সঙ্গে বিদ্রোহ করবেন? দেখি কার কত বড় ক্ষমতা। স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ২০ শতাংশ মানে ২০ শতাংশই, ১৫০০ মানে ১৫০০-ই, ৭৫ শতাংশ মানে ৭৫ শতাংশ। ১৯-এও হবে না, ১৪৯৯-এও হবে না, ৭৪-এও হবে না। যদি উল্টাপাল্টা সিদ্ধান্ত নেন, এ আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষকদের আন্দোলন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১ হাজার ৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা ও কর্মচারীদের ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়া যাবে না। দুই মন্ত্রণালয় আজ মিটিংয়ে বসছে। অথচ বলেছিলেন, অর্থ উপদেষ্টা ও সচিব দেশে না ফিরলে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না।’

অধ্যক্ষ আজিজী বলেন, ‘গতকাল থেকে সারাদেশের প্রত্যেকটি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কঠোরভাবে কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অচল ও স্থবির হয়ে পড়েছে। আমাদের কোনো শিক্ষক-কর্মচারী শ্রেণি-পাঠ্যক্রমে অংশগ্রহণ করবে না।’

শিক্ষকরা জানিয়েছেন, অর্থ মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা মঙ্গলবার সকালে বৈঠকে বসেছেন। তারা শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া সুরাহা করার চেষ্টা করছেন। তাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য বা তথ্য দিতে রাজি হননি। ফলে বিষয়টি ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী—দুপুর ১২টা থেকে সচিবালয় অভিমুখে ‘লং মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি করতে শহীদ মিনারে অবস্থান করা শিক্ষকরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত তথ্যের জন্য লং মার্চ কর্মসূচি কিছুটা দেরিতে শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন।

এএএইচ/ইএ/এএসএম