জুনান নাশিত
হাসান হাফিজের কবিতা পাঠের পর বোধের উঠানে এক ছায়াশরীর নড়ে ওঠে। এই ছায়াশরীর কাঁপায় এবং ভাবায়। তার যেকোনো কবিতার শেষ লাইন পর্যন্ত পৌঁছার আগেই চৈতন্যের দুয়ার আঁটা প্রান্তর উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। কড়া নাড়তে শুরু করে সঞ্চরণশীলতা। তাতে পাঠের আনন্দের পাশাপাশি শৈল্পিক সিদ্ধিও ঘটে। তাঁর কবিতার বহুরৈখিকতা পাঠককে তৃষ্ণার চূড়ায় ওঠায়। আবার যে পরিমাণে শিল্পের রসদ তিনি জোগান দেন, তাতে তৃপ্তির মেজাজ নিয়ে পাঠক ফিরে যান মায়াময় আনন্দের অলৌকিক ঘরে।
কবিতার হিসাব কষতে গিয়ে দশককে আমরা নানাভাবেই দূরে সরানোর চেষ্টা করি। কিন্তু পারি না। কীভাবে কী করে যেন তার চৌহদ্দিতেই প্রবেশ করি। তাই বলছি, কবি হাসান হাফিজের কথা বলতে গিয়েও দশকের সীমানাকেই জারি রাখছি।
হাসান হাফিজ সত্তরের দশকের কবি। আর এই দশকটি কতটা উন্মাতাল এবং অস্থিরতার ভরা কলস ছিল, তা এ দেশের সচেতন ব্যক্তিমাত্রই জানেন। এদিকে সত্তরের দশকের কবিদের পরবর্তী প্রজন্মের কবিরা কিছুটা দূরবর্তী করার চেষ্টা চালান। কারণটা এই যে এ সময়ের কবিতায় স্লোগানধর্মিতা বেশি। কবিতার শিল্প-সুষমার চর্চা খুব একটা দাঁড় করাতে পারেননি তাঁরা...ইত্যাদি ইত্যাদি।
কবিতা লেখা এক জার্নি। এই যাত্রাপথের একটি গন্তব্য হয়তো থাকে। হয়তো থাকে না। যার যার মতো করে এক ধরনের গন্তব্য তৈরির চেষ্টা করে। এই চেষ্টা ও আসক্তিই কবিতার চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। কবি থেমে যেতে পারেন না। তিনি নিয়ত ভ্রমণ করেন। ভ্রামণিক মনের পিঠে সওয়ার হয়ে পাড়ি দেন নানা চড়াই-উতরাই। এ এক বিরামহীন যাত্রা। কবি হাসান হাফিজও সে পথেরই পথিক। তাঁর যাত্রা এখনো থেমে যায়নি। তিনি ধাবমান। অন্তর্গত তাড়নায় তিনি এখনো সক্রিয় ও সজীব। তাঁর এই কাব্যিক সজীবতা বজায় থাকুক।
এই বিতর্কের ময়দানে বরং না ঢুকি। ফিরে আসি হাসান হাফিজে। কবি হাসান হাফিজ। কেবল কবিই নন তিনি। একাধারে সাংবাদিক, ছড়াকার, শিশুসাহিত্যিক, রম্য লেখক, প্রাবন্ধিক এবং সম্পাদকও। তাঁর জন্ম ১৯৫৫ সালের ১৫ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার এলাহিনগরে।
দীর্ঘ ৪৯ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত তিনি। সাহিত্য ও সাংবাদিকতা বিষয়ে তাঁর প্রায় দুই শ গ্রন্থ রয়েছে। পেয়েছেন শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর স্বর্ণপদক, ডাকসু সাহিত্য পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার, কলকাতার সৌহার্দ্য কবিতা উৎসব সম্মাননা, জাতীয় প্রেস ক্লাব লেখক সম্মাননা, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি লেখক সম্মাননাসহ বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা।
অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে হাসান হাফিজ কবিতার ময়দানে তাঁর লড়াই জারি রেখেছেন। পেশাসহ জীবনের নানা মোড় ও বাঁককে সুস্থির রেখে এতটা সময় ধরে কবিতার হাতে হাত রেখে চলা যথেষ্টই কঠিন। প্রত্যেক কাব্যযোদ্ধাই এ কথা জানেন। কতটা রক্তক্ষরণ আর কাঁটা মাড়িয়ে তাঁকে চলতে হয়, তা এর ভেতর দিয়ে যে না গেছে সে বুঝতে পারবে না কিছুতেই। শৃঙ্খলার সঙ্গে ও নিপুণভাবে এই দীর্ঘপথে হাঁটা জারি রাখার জন্য একজন অনুজ পথিক হিসেবে আমি এই কবিকে অভিনন্দন জানাই।
হাসান হাফিজের মৌলিক কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ৫০-এর অধিক। ছোটোদের জন্য লিখেছেনও দুহাতে। সাহিত্যের নানা শাখায় তাঁর যোগ্য বিচরণ আমাদের অবাক করে বৈকি। কারণ পেশাগত জীবনেও তিনি সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন। যুগপৎ সফলতা সত্যিই ঈর্ষণীয়।তাঁর উলেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হলো-‘এখন যৌবন যার’ (১৯৮২), ‘অবাধ্য অর্জুন’ (১৯৮৬), ‘হয়তো কিছু হবে’ (১৯৮৭), ‘দূরে পাহাড়ের ঘুম’ (১৯৯৫), ‘সকল ডুবুরি নয় সমান সন্ধিৎসু’ (১৯৯৫), ‘তৃষ্ণার তানপুরা’ (১৯৯৬), ‘ভালোবাসার অগ্নিচুমুক’ (১৯৯৭), ‘নীরবতাই অস্ত্র আমার’ (২০০২), ‘ধাবমান সন্ধ্যার গৌরব’ (২০০৮), ‘ছায়ামানুষ ভাঙামানুষ’ (২০০৯), ‘অপেক্ষা এক নদীর নাম’ (২০১৩), ‘পিপাসা ও পরম্পরা’ (২০১৬), ‘অপমানে বেজে উঠি’ (২০১৮)।
এ ছাড়া তিনি শিশু-কিশোরদের জন্যও লিখেছেন অনেক। এর মধ্যে উলেখ করার মতো-‘ছন্দে ছড়ায় ঈশপ’ (১৯৮৮), ‘ম্যারাডোনা ও বিশ্বকাপ’ (১৯৯৪), ‘গল্পগুলো রূপকথা’ (২০০০), ‘তিল যদি হয় তাল’ (২০০২), ‘ঈশপের গল্প থেকে ছড়া’ (২০০২), ‘সজনে পাতা কলমী ফুল’ (২০০৪), ‘টোনাটুনি ছড়া শুনি’ (২০০৫), ‘ইষ্টিকুটুম মিষ্টি নয়’ (২০০৫), ‘ঘরের মধ্যেই সমুদ্দুর’ (২০০৯), ‘তিড়িং বিড়িং কাঠবেড়ালি’ (২০১০), ‘দোল দুলুনি মন ভুলুনি’ (২০১০), ‘আহা আহা ইশ রে’ (২০১০), ‘ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিরা উড়ুক’ (২০১২), ‘আয় ছড়া তৈ তৈ’ (২০১২)।কবি হাসান হাফিজের সঙ্গে আমার পরিচয় বেশ অনেক দিন। কিন্তু তিনি যে এত নিবিড় পরিশ্রমী এবং পাথর কেটে কেটে কবিতার পথকে এতটা মসৃণ করে চলেছেন তা বোঝার ফুসরত মেলেনি। মানুষ হিসেবে তাঁর যে সরল সৌন্দর্য, তাতেই হয়তো ঢেকে গেছে তাঁর এই শ্রম-নিবিড়তা।
কবির কবিতা পড়তে পড়তে একটা লাইনে এসে থমকে দাঁড়ালাম। ‘মন পোড়ে, শব্দহীন’। আপাত খুবই সাদামাটা কথা। কিন্তু আড়ালে রয়েছে গভীরতর ব্যঞ্জনা। আর এটিই তাঁর কবিতার মূল সুর। কবিকে কেউ রোমান্টিক, কেউ লিরিকধর্মী, কেউ বা আবার কেবলই ভালোবাসার কবি বলেছেন। কেউ কেউ মানুষ ও প্রকৃতির সাযুজ্যকে তাঁর কবিতার মৌল অনুষঙ্গ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। মূলত হাসান হাফিজ এই সবকিছু নিয়েই এক উজ্জ্বল জীবনবোধের কবি। যার প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে অবারিত আশার ঝলক এবং সহৃদয়তা। সহজতার অলিন্দে তিনি যে দার্শনিক স্বজ্ঞার আভাস ফোটান, তাতে আনন্দের হোমশিখা জ্বলে ওঠে বোধের চাতালে।
তাইতো পাঠক পিছু হটেন না, হটতে পারেন না। ‘জন্মের ভিতর শব্দ’ কবিতায় তিনি যেমনটা বলছেন-
‘জেগে থাকলে সাড়া দাওগোঙানি হলেও আলতো শব্দ করোশব্দই জীবন জানি, শব্দওমে ফুল ফোটেপ্রবাহিত হয় নদী, হাওয়া বয়চাঁদের চঞ্চল জোছনা ঠিকরে পড়েসমুদ্র ফেনায়, আর্ত চরাচরেমাটির ভিতরে বীজবীজের ভিতরে ভ্রূণভ্রূণের ভিতরে জন্মজন্মের ভিতরে শব্দসুপ্তি হয়ে অধিষ্ঠান করে, থাকে অপেক্ষায়-’
এই কবিতায় ডুব দেওয়া যায়। ভাবের ঢেউয়ে আকুল জিজ্ঞাসাকে তীক্ষ্ণ ও তীব্র করা যায়। কবি এই সুযোগ আমাদের দিয়েছেন তাঁর সরল অথচ অধরা চিন্তার মাধুর্য দিয়ে। এই অধরামাধুরীর খোঁজ আমরা তাঁর অনেক কবিতায় পেয়ে যাই। এটি আমাদের শান্ত করে, নিরুদ্বেগ করে। তাঁর কবিতার মসৃণ বহমানতা ঘোর ও মুগ্ধতার রেশ পাঠের আনন্দকে ঊর্ধ্বমুখী করে।
তবে হাসান হাফিজের কবিতাকে নিরীহ ভাবলে ভুল হবে। সাধাসিধের আড়ালেও যে বারুদের জ্বলে ওঠার উন্মুখতা, তা তিনি যথেষ্ট কুশলীভাবেই ফুটিয়েছেন কবিতায়। তাঁর ব্যক্তি চারিত্র্যের সঙ্গে কবিতার এ রৈখিক যোগ সমন্বিতভাবে ধরা পড়ে। ‘অবাধ্য অর্জুন’ কবিতায় কবি বলছেন-
‘আমার হাতে কোন আগ্নেয়াস্ত্র নেইভোর-বাতাসের মতো নম্র ও লাজুকআমার সামান্য দুটি চোখদেখে মনে হবে এর কোন শত্রু নেইআমার দুপায়ে কাদার গন্ধএরা কোন মার্চ পাস্টে অংশ নেয় নাআমার মুখে কোন নিন্দাবাদও নেইকতোদিন বহুদিন মৌন এই ঠোঁটআমার চুলে লুকিয়ে পড়তে চায়বসন্তের ফেরারি বাতাসআমার উপস্থিতি খুবই নগণ্য দীনমনে হয় না কারো চোখে পড়তে পারেতবু আমি কেন জানিআস্তে আস্তে হয়ে উঠছি বিপদজনকঅশান্ত ও উন্মাতাল অবাধ্য অর্জুন।’
এই অবাধ্য অর্জুন হয়ে ওঠার গল্প কিন্তু এখানেই শেষ হয়ে যায়নি। ব্যক্তিমানসের চারিত্র্য বৈশিষ্ট্য যে কবিতায়ও প্রতিফলিত হয় তা কমবেশি সকল পাঠকই জানেন। বিনয়ী কিন্তু দৃঢ়তার মেলবন্ধনে গড়ে ওঠা ব্যক্তিত্বের ছাপ কবি তাঁর আরো অনেক কবিতায়ই ছড়িয়ে দিয়েছেন।
‘স্বপ্ন, তুমি কতোটা চঞ্চলমানুষ যতোটা জ্বলে প্রেমে প্রতিবাদেআমি ততো সঞ্জীবিত বেশি আয়ুষ্মানরাজপথে প্রাণ ঝরে, আমি আরও বহুধাবিস্তৃত হই, অলঙ্ঘ্য উজ্জ্বল হয়ে উঠি’(উজ্জ্বল নতুন মাত্রা)
কবির মানস যাত্রায় উজ্জ্বলতার যে সমারোহ, কবিতায়ও তার যথার্থ প্রতিফলন রয়েছে। বলতে গেলে কবির প্রতিটি কবিতাই উজ্জ্বল, প্রাণবান ও গতিময়। একেবারে টগবগে বলা না গেলেও তাঁর কবিতার জমিনে যে মসৃণ প্রবহমানতা রয়েছে, তাতে পাঠক আকৃষ্ট হন। পাঠের আনন্দ ও আরাম খুঁজে পান।
হাসান হাফিজের কবিতায় প্রেম ও মানবিকতা এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে। ব্যক্তিক প্রেমের চেয়েও সামষ্টিক বোধে তিনি অধিক তাড়িত। এছাড়া তাঁর মনোযোগের কেন্দ্রে রয়েছে স্বভূমি, সমাজ ও রাজনীতি। বিষয়বৈচিত্র্যের সমাহারে ঋদ্ধ তাঁর কবিতা। রয়েছে বহুকৌণিকতা ও বহুরৈখিকতা। বিষয় থেকে বিষয়ান্তরে চলে যান তিনি অতি সহজেই।
আগেও বলেছি, জীবনবোধের উজ্জ্বল আরতি তাঁর কবিতার বিন্যাসজুড়ে খেলা করে। পরিপক্ব জীবনচেতনায় রয়েছে সৌজন্যনিবিড়তা। রয়েছে আনন্দ, বেদনা, হাহাকার, আর্তি ও আততি। তবে বেদনার প্রলাপ নেই, কিংবা হতাশার কোনো সুর। বরং আশাবাদী তিনি। আকাঙ্ক্ষার মুকুরে তিনি সতত ইতিবাচক। বাস্তববাদী চিন্তার ঢেউকে বরং তিনি প্রসারিত করেন কবিতার ছত্রে। যেমনটা বলছেন তিনি-
‘আবেগের কানাকড়ি মূল্য নেইযুক্তি ও বুদ্ধিই বড়ো কথা।’(যে স্পর্ধা জরুরি)
যুক্তি ও বুদ্ধিসচেতন এই কবি শেষ পর্যন্ত মানুষকেই শেষ আশ্রয় মানেন। মানুষের মাঝেই রয়েছে অপার সম্ভাবনার স্রোত। আশা ও ভালোবাসাকে প্রাধান্য দিলে প্রকৃতির পাশাপাশি মানুষই হয়ে উঠবে মানুষের নিকট আশ্রয়। তাই তাঁর কবিতায় প্রাণ, প্রকৃতি ও মানুষও ব্যাপক প্রভাব বিস্তারকারী।
‘লোকালয়ে এতো শব্দ, আরণ্যক কোলাহলঅশান্তির কালো নষ্ট দূষণের ধোঁয়াএত ভালোবাসাহীন রুক্ষ সম্পর্কের ভানআমার সকল ইন্দ্রিয় তবু নিয়োজিতআপাতবিফল এই ভাঙাচোরা মানুষেরই দিকে’(তবু মানুষেরই দিকে)
নানাভাবে দার্শনিক জিজ্ঞাসারও কমতি নেই তাঁর। তাইতো বলছেন-
‘পিপাসারও তাপ আছেসে জানে অঙ্গার হতেফুল ফোটানোর মতোইচ্ছাসাধ্য পিপাসার নাইতারপরও পিপাসার্ত হতে কেনআমরা চাই, ভালোবাসিজানি না উত্তর।’
কবির উদার মনোভাবের প্রকাশ আমরা পাই যেভাবে-
‘সুখী হও, এই অভিশাপভালোবেসে তোমাকে দিলামভুলেও কখনো তুমিজানতে চেয়ো না প্রিয়বিনিময়ে আমি কী পেলাম!’
দ্রুত পরিবর্তনশীল এই সময়ে হাসান হাফিজের কবিতা আমাদের আবেগময়তা ও মানবিকতার পথেই ফিরিয়ে আনে, যা খুব জরুরি। রাজনীতি ও সমাজের বিশৃঙ্খলার মধ্যে তাঁর কবিতা মনে করিয়ে দেয়, সত্য, ন্যায়, প্রেম ও মানবিকতা সবচেয়ে বড় শক্তি। এই শক্তি ফুরিয়ে গেলে মানুষ কেবলই ফাঁপা আর অন্তঃসারশূন্য হয়ে পড়ে।
কবিতা লেখা এক জার্নি। এই যাত্রাপথের একটি গন্তব্য হয়তো থাকে। হয়তো থাকে না। যার যার মতো করে এক ধরনের গন্তব্য তৈরির চেষ্টা করে। এই চেষ্টা ও আসক্তিই কবিতার চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। কবি থেমে যেতে পারেন না। তিনি নিয়ত ভ্রমণ করেন। ভ্রামণিক মনের পিঠে সওয়ার হয়ে পাড়ি দেন নানা চড়াই-উতরাই। এ এক বিরামহীন যাত্রা। কবি হাসান হাফিজও সে পথেরই পথিক। তাঁর যাত্রা এখনো থেমে যায়নি। তিনি ধাবমান। অন্তর্গত তাড়নায় তিনি এখনো সক্রিয় ও সজীব। তাঁর এই কাব্যিক সজীবতা বজায় থাকুক।জন্মদিনে কবির প্রতি রইল অনেক অনেক শুভ কামনা।
এইচআর/এএসএম