চিরাচরিত নিয়মে হাত দিয়ে খেলে ‘অভদ্রতা’ হবে, তাই ছুরি-কাঁটাচামচ দিয়ে ‘ভদ্রভাবে’ সমুচা খাওয়া শেখালেন ভারতের এক শিষ্টাচার প্রশিক্ষক। সেই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
ভিডিওতে দেখা যায়, এক ভারতীয় ‘এটিকেট কোচ’ বা শিষ্টাচার প্রশিক্ষক তার শিক্ষার্থীদের ছুরি ও কাঁটাচামচ ব্যবহার করে কীভাবে সমুচা খেতে হয়, তা শিখাচ্ছেন।
বাংলাদেশ-ভারতসহ বিশ্বের বহু দেশে জনপ্রিয় এক নাশতা হলো সমুচা। এর মচমচে বাইরের স্তর ও মশলাদার পুরের স্বাদ অনেকের কাছেই প্রিয়। এ অঞ্চলের সমুচাপ্রেমীরা সাধারণত হাত দিয়েই খাবারটি খেয়ে থাকেন।
আরও পড়ুন>>সমুচার দাম ৪০০ টাকা!চাকরি ছেড়ে সমুচা বেচে দম্পতির দিনে আয় ১৫ লাখ টাকামুচমুচে পিনহিল সমুচা তৈরির সহজ রেসিপি
তবে ভিডিওটিতে ওই শিষ্টাচার প্রশিক্ষককে ডাইনিং টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে ছুরি-কাঁটাচামক দিয়ে সমুচা খেতে দেখা যায়। তিনি প্রথমে কাঁটাচামচ দিয়ে সমুচাটি চেপে ধরেন, এরপর সাবধানে ছুরি দিয়ে কাটেন—তবে মাঝখান থেকে নয়, যাতে ভেতরের পুর ছড়িয়ে না যায়। এরপর তিনি দেখান, কীভাবে অল্প অল্প করে সমুচার টুকরো তুলে চাটনিতে ডুবিয়ে খেতে হয়।
ভিডিওটি ‘এক্স’-এ (সাবেক টুইটার) শেয়ার হতেই দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। এ পর্যন্ত প্রায় সাত লাখবার দেখা হয়েছে ভিডিওটি। এ নিয়ে অনলাইনে শুরু হয়েছে ‘নিজস্ব সংস্কৃতি’ বনাম ‘পশ্চিমা ভদ্রাচার’ বিষয়ক বিতর্কও।
অনেকে অবশ্য বিষয়টিকে একেবারে হাস্যকর বলেই মনে করছেন। এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘এটা তো অপরাধ!’ আরেকজন মজা করে বলেছেন, ‘আমাদের পূর্বপুরুষেরা নিশ্চয় এখন কাঁদছেন।’
আরেকজন লিখেছেন, ‘আজকের সবচেয়ে হাস্যকর জিনিস এটা। পশ্চিমা খাবার মূলত সংরক্ষিত মাংসভিত্তিক, তাই ওদের ছুরি-কাঁটাচামচ দরকার হয়। ভারতীয় খাবার বৈচিত্র্যে ভরা—ওগুলোকে পারমাণবিক বর্জ্যের মতো ব্যবহার করার দরকার নেই।’
কেউ কেউ মজা করে লিখেছেন, ‘এই ধারা চলতে থাকলে একদিন দেখা যাবে চা পরিবেশন হচ্ছে ওয়াইন গ্লাসে।’
কিছু ব্যবহারকারী অবশ্য বলছেন, নতুন খাবার খাওয়ার অভিজ্ঞতা বা ভিন্নতা গ্রহণ করা খারাপ কিছু নয়।
এর আগে, কলা খাওয়ারও ‘সঠিক’ ও ‘ভুল’ পদ্ধতি আছে দাবি করে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন যুক্তরাজ্যের শিষ্টাচার বিশেষজ্ঞ উইলিয়াম হ্যানসন। তার মতে, টেবিলে ছুরি-কাঁটাচামচ দিয়ে কলা খাওয়াই শালীন উপায়, সরাসরি খোসা ছিঁড়ে কামড় দেওয়া নয়। তাঁ এই অদ্ভুত পরামর্শও তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাসির খোরাক হয়েছিল।
সূত্র: এনডিটিভিকেএএ/