অনলাইনে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতারণা চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে কম্বোডিয়া থেকে ফেরত আনা ৬৪ জন নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার (১৮ অক্টোবর) ইনচন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাদের আটক করে দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশ।
বার্তা সংস্থা এএফপি'র তথ্য মতে, বিশেষ একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে অভিযুক্তদের দক্ষিণ কোরিয়ায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ৬৪ জন নাগরিকের সবাইকে অপরাধী চক্রে জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। করোনা মহামারির পর চীনা মালিকানাধীন অনেক ক্যাসিনো ও হোটেল অবৈধ অনলাইন প্রতারণা কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়। এসব কেন্দ্র থেকে ‘পিগ-বাচারিং’ নামে হওয়া প্রতারণা পরিচালিত হত। যেখানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্পর্ক করে ভুয়া ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগে মানুষকে প্রলুব্ধ করা হত এবং পরবর্তীতে তাদের অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হত।
মানবপাচার ও নির্যাতনের ঘটনাও এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। অনুমান করা হচ্ছে,বর্তমানে শুধু কম্বোডিয়াতেই প্রায় দুই লাখ মানুষ এসব চক্রে কাজ করছে, যার মধ্যে প্রায় এক হাজার দক্ষিণ কোরিয়ান নাগরিক রয়েছেন। এ প্রতারণার জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে বহু মানুষকে উচ্চ বেতনে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে আনা হয়। এরপর তাদেরকে দিয়ে জোরপূর্বক এসব প্রতারণার কাজ করানো হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা উই সাং-লাক জানান, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ কেউ স্বেচ্ছায় প্রতারণা চক্রে যুক্ত হয়েছিলেন, আবার অনেককে জোরপূর্বক সেখানে কাজ করানো হয়েছে।
কম্বোডিয়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র টাচ সোখাক বলেছেন, এই প্রত্যর্পণ দুই দেশের মধ্যে প্রতারণা দমনে ভালো সহযোগিতার ফল।
আরও পড়ুন>>যুক্তরাষ্ট্রে কম্বোডিয়ান প্রতারকের ১৪০০ কোটি ডলারের বিটকয়েন জব্দ
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য কম্বোডিয়া ভিত্তিক বহুজাতিক অপরাধচক্র ‘প্রিন্স গ্রুপ’-এর বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে। প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের রিয়েল এস্টেট ও আর্থিক সেবাদাতা হিসেবে পরিচয় দিলেও, প্রকৃতপক্ষে তারা আঞ্চলিক প্রতারণা কেন্দ্র পরিচালনা করছিল বলে অভিযোগ।
প্রিন্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ক্যাম্বোডিয়ান ধনকুবের চেন ঝি বর্তমানে পলাতক। তার বিরুদ্ধে ওয়্যার ফ্রড ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে মামলা হয়েছে। দোষী প্রমাণিত হলে তার ৪০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
কেএম