ফিচার

একবার আলমের চা খাইলে, অন্য চা পাইনসা লাগে

মালাই চা কিংবা কাজুবাদাম চা, কোন পদের চা নেই এখানে! দৈনিক বিক্রি প্রায় ১ হাজার দুশো কাপ। পুরান ঢাকার চা-প্রেমীরা তাই বলেন, ‘একবার আলমের চা খাইলে, অন্য চা পাইনসা লাগে।’

`পুরান ঢাকার আলম খান টি’। পুরান ঢাকার নাজিরা বাজারের বিখ্যাত এই চা খেতে প্রতিদিন ভিড় করেন শত শত মানুষ। বিরিয়ানি খাওয়ার পর কোমল পানীয় খাওয়ার প্রচলন থাকলেও, আলম খানের চা সেখানে এই রীতি ভেঙে দিয়েছে।

রাত বারোটায় শহর যখন ঘুমের কোলে ঢলে পড়ে, পুরান ঢাকা তখনও জেগে। হাজি, নান্না, হানিফ বিরিয়ানিসহ ঐতিহ্যবাহী মুখরোচক খাবারের ঘ্রাণে সেখানে যেন দিন শুরু হয় রাতের বেলায়। খাওয়া শেষে এক কাপ চা।

জিরো চা ১০ টাকা, স্পেশাল চা ২০ টাকা, কোয়ার্টার মালাই চা ৩০ টাকা, হাফ মালাই চা ৫০ টাকা। প্রতিটি চায়েরই আলাদা ভক্তগোষ্ঠী। এদিকে হরলিক্স চা, মাইলো চা, পনির চা সবই ৫০ টাকায়। তবে নরমাল কফি চা ৩০ টাকা। কাজুবাদাম মালাই চা চেখে দেখতে চান? তাদের জন্য হাফ ৬০, ফুল ১২০ টাকা। আছে ভিআইপি হট কফি হাফ ৬০ টাকা, ফুল ১০০ টাকা। তাও এমন গাঢ় স্বাদের, যা পুরান ঢাকার গলির মতোই দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলে মনে।

চায়ের সঙ্গে আছে মুখরোচক বাটার বন। দাম ২৫ টাকা। চায়ে চুবিয়ে খেতে পছন্দ করেন? তাহলে আপনার জন্য ‘পারফেক্ট চয়েস’ আলম খানের চা। ঘরে বসে পার্সেল চায়ের আনন্দ নিতে চাইলে শুরু হবে ৩০ টাকা থেকে। বিরিয়ানি খাওয়া শেষে দোকানে ঢুকতেই নাকে আসে মালাই চায়ের সুবাস। পাশে বসা এক ক্রেতা আলাপে বলছিলেন, ‘ট্রেন্ড নয়, বহু বছর ধরেই জনপ্রিয় এই চা।’

‘কোন চা দিমু?’ বললেন দোকানি। এক ক্রেতা বলেই বসলেন, ‘ভাই, আমারটা ট্রাই করেন।’ দোকানিও বুঝে সেই চা-ই নিয়ে এলেন, ঘন দুধের চা। ওপরে পড়েছে সর, কিছুটা পাউডার দুধের গুঁড়ার মতো ছেটানো। চুমুক দেওয়ার পর বোঝা যায়, যা শোনা যায়, তা মিথ্যে নয়।

আলম খানের চায়ের দোকানটা বড় নয়, তবে গোছানো। দেয়ালে টাঙানো চায়ের মেনু, আর প্রবেশপথে ভিড়ের মাঝে চা ঢালার দৃশ্য কৌতূহল জাগাবে।

রাত তখন প্রায় ১টা। তবু ক্রেতা কমছিল না সেদিন। কেউ বাইক থামিয়ে, কেউ রিকশা থেকে নেমে এক কাপ চা নিয়ে শুরু করছেন গল্প।

আরএমডি/এএমপি/এএসএম