আজকাল প্রায় সব কাজেই আমরা স্মার্টফোনের ওপর নির্ভর করি — কেনাকাটা, ছবি তোলা, ব্যাংকিং, এমনকি ব্যক্তিগত আলাপচারিতাও হয় নানা অ্যাপে। কিন্তু প্রতিটি অ্যাপ ইনস্টল করার সময় যে ‘পারমিশন’ চাওয়া হয়, সেগুলো কতটা নিরাপদ তা অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না। তাই সামান্য ভুল সিদ্ধান্তেই ফাঁস হতে পারে ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি কিংবা ব্যাংক ডেটা।
যখন আপনি কোনো অ্যাপ ইনস্টল করেন, সেটি কাজ করতে কিছু নির্দিষ্ট অনুমতি (পারমিশন) চায় — যেমন ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, কনট্যাক্ট লিস্ট বা লোকেশন ব্যবহারের অনুমতি।
সব পারমিশনই যে ক্ষতিকর, তা নয়। কিন্তু অপ্রয়োজনীয় পারমিশন মঞ্জুর করলে অ্যাপ আপনার ফোনের ভেতরের তথ্যেও প্রবেশ করতে পারে।
ভুল পারমিশন দিলে কী হতে পারে?১. ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসঅনেক অ্যাপ আপনার নাম, নম্বর, লোকেশন বা গ্যালারির ছবি সংগ্রহ করে অননুমোদিতভাবে ব্যবহার করতে পারে।
২. বিজ্ঞাপনের টার্গেটিংকিছু অ্যাপ আপনার সার্চ বা কথোপকথন বিশ্লেষণ করে নির্দিষ্ট বিজ্ঞাপন দেখায়।
৩. আর্থিক ঝুঁকিব্যাংকিং বা পেমেন্ট অ্যাপের তথ্য কোনো অনিরাপদ অ্যাপ পেলে আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।
৪. ম্যালওয়্যার সংক্রমণসন্দেহজনক অ্যাপ অনেক সময় ভাইরাস বা ট্র্যাকিং সফটওয়্যার ইনস্টল করে ফোনের নিরাপত্তা নষ্ট করে।
কীভাবে নিরাপদ থাকবেন>> অ্যাপ ইনস্টল করার সময় সব পারমিশন ‘অ্যালাই’ না করে ‘ওনলি হোয়াইল ইউজিং দ্য অ্যাপ’ বা ‘ডিনাই’ বেছে নিন।
>> যেসব অ্যাপ নিয়মিত ব্যবহার করেন না, সেগুলোর পারমিশন বন্ধ রাখুন।
>> অ্যান্ড্রয়েড ও আইফোন উভয়েই প্রাইভেসি সেটিংস-এ গিয়ে পারমিশন লিস্ট চেক করতে পারেন।
>>ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, লোকেশন–এর মতো সেনসিটিভ পারমিশন শুধু বিশ্বস্ত অ্যাপকেই দিন।
>> শুধু গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপল অ্যাপ স্টোর থেকে অ্যাপ ইনস্টল করুন।>> অজানা লিংক বা থার্ড পার্টি সাইট থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করবেন না।>> ফোনের সিকিউরিটি আপডেট নিয়মিত দিন।>> সময়মতো ‘অ্যাপ পারমিশন রিভিউ’ করুন।
স্মার্টফোন আমাদের জীবনের অংশ হয়ে গেছে, কিন্তু নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে সেটিই হয়ে উঠতে পারে বিপদের উৎস। তাই অ্যাপ ইনস্টল করার আগে এক মুহূর্ত ভেবে নিন — এই পারমিশন সত্যিই প্রয়োজন কি না।
সূত্র: গুগল প্রাইভেসি গাইড (২০২৪), অ্যান্ড্রয়েড সিকিউরিটি ব্লগ, নর্টন সাইবারসেফটি রিপোর্ট
এএমপি/জেআইএম