রাজধানীতে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন শরিফুল। যার প্রকৃত নাম মুকুল রানা। সাতক্ষীরার ধুলিহর ইউনিয়নের বালুইগাছা গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে। এলাকাবাসীর কাছে সুপরিচিত ও শান্ত স্বভাবের ছেলে মুকুল। চাকরির কথা বলে দুই বছর আগে বাড়ি থেকে ঢাকায় এসেছিল মুকুল।গত ফেব্রুয়ারি মাসের ১৯ তারিখ যশোরের বসুন্দিয়া গ্রামের মোবারক আলীর মেয়ে মহুয়া আক্তার রিয়ার সঙ্গে পারিবারিকভাবে মুকুলের বিয়ে হয়। বিয়ের একদিন পরই ২০ ফেব্রুয়ারি ডিবি পুলিশ পরিচয়ে শ্বশুর বাড়ি থেকে মুকুলকে তুলে নিয়ে যায়। নিখোঁজের পর মুকুলের শালা বাদী হয়ে যশোরের কোতোয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সে সময় থেকেই নিখোঁজ ছিল মুকুল। অবশেষে গত শনিবার রাত ৩টার দিকে ঢাকার মেরাদিয়ায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় শরিফুল ওরফে মুকুল রানা। মুকুলের বাবা আবুল কালাম আজাদ জাগো নিউজকে জানান, ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় ভালো মুকুল। ব্যবহারেও ভালো। কারো সঙ্গে কোনো গোলযোগ নেই। এলাকায় কেউ বলতেও পারবে না। বিয়ে হওয়ার পরদিন ২০ ফেব্রুয়ারি শ্বশুর বাড়ি থেকে ডিবি পরিচয়ে পুলিশ মুকুলকে তুলে নিয়ে যায়। আর এ ঘটনার পর থানায় একটি জিডিও করা হয়। সেই থেকেই নিখোঁজ ছিল মুকুল। তিনি আরো বলেন, মুকুল দুই বছর আগে ঢাকায় যায়। বাড়ি এসে বলে ঢাকায় রাজউক (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) অফিসে চাকরি করছে। আমি তাকে রাজনীতি করতে নিষেধ করেছি। আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি। আমার ছেলে অপরাধ করলে প্রচলিত আইনে বিচার করতে পারতো। কিন্তু তা তো করলো না।মুকুলের বোন শারমিন সুলতানা রিয়া বলেন, ভাইয়া ২০০৮ সালে এসএসসি ও ২০১০ সালে এইচএসসি জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করে। বর্তমানে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে ইংরেজি বিভাগে অনার্স তৃতীয় বর্ষে লেখাপড়া করছে। ঢাকায় যাওয়ার পরে ভাইয়া ফোন দিলেই আমাদের সঙ্গে কথা হতো।বালুইগাছা গ্রামের আব্দুল মাজেদ বলেন, ছোট বেলায় আমাদের সামনে বড় হয়েছে। এলাকার আদর্শ স্কুলে লেখাপড়া করেছে, কলেজে পড়েছে। তারপর শুনি দুই বছর আগে থেকে ঢাকার রাজউকে চাকরি করে। এলাকায় কারো সঙ্গে তাকে কোনো বিবাদে জড়াতে দেখিনি। শান্ত প্রকৃতির ছেলে ছিল মুকুল। সে যে জঙ্গি সংগঠনে জড়িয়েছে সেটা জানতাম না। প্রতিবেশি জামেলা খাতুন বলেন, এখন আর ভালো মন্দ জেনে কি হবে। তার জীবনটা কেউতো ফেরত দিতে পারবে না। ধুলিহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, বেশ কিছু দিন আগে থেকে শুনছি আজাদের একটা ছেলে নিখোঁজ রয়েছে। পরবর্তীতে মাস খানেক আগে পত্রিকায় জঙ্গি তালিকার ছবি প্রকাশের পর তার বাবা ছবি দেখে শনাক্ত করে এটা আমার ছেলে। যদি সে জঙ্গির সঙ্গে জড়িত হয়, তবে প্রচলিত আইনের আওতায় বিচার হবে এটা আমরাও চাই। সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমদাদুল হক শেখ জাগো নিউজকে জানান, জঙ্গি শরিফুল ওরফে রানা ঢাকায় বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে বলে শুনেছি। তার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা নেই। নিহতের মরদেহ আনতে ঢাকায় গেছেন পরিবারের সদস্যরা। আকরামুল ইসলাম/এআরএ/এমএস