বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের বক্তব্য ঘিরে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী এবং উপ-প্রেস সচিবের বক্তব্য দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত বলে উল্লেখ করেছে বিজিএমইএ।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এবং উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদারের কিছু বক্তব্য আজ গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, যা বিজিএমইএর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।’
বিজিএমইএ মনে করে, ‘বিশেষ সহকারী ও উপ-প্রেস সচিব উভয়েই বিষয়টি বিভ্রান্তিকরভাবে উপস্থাপন করেছেন, যা দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। তাদের এই বক্তব্যের মাধ্যমে দেশের প্রধান রপ্তানিমুখী খাত পোশাকশিল্পকে পরোক্ষভাবে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। বিজিএমইএ এ ধরনের বক্তব্যের প্রতি তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।’
এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে বিজিএমইএ। এতে বলা হয়েছে, ‘প্রথমত, বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে উল্লেখ করেন যে, গত চার মাস ধরে পোশাকশিল্পের নীতি প্রণয়ন, প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বজায় রাখা এবং চলমান সংকট মোকাবিলা বিষয়ে সরাসরি আলোচনার জন্য প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে একান্ত বৈঠকের অনুরোধ জানানো হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়নি।’
আরও পড়ুনসময় চেয়ে ৪ মাসেও প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ পাননি বিজিএমইএ সভাপতিশিল্পে অস্থিতিশীলতা রোধে শ্রম আইন পুনর্বিবেচনার আহ্বান বিজিএমইএর
‘দ্বিতীয়ত, বিশেষ সহকারী ও উপ-প্রেস সচিব যে সভার কথা উল্লেখ করেছেন, সেটি ছিল এলডিসি উত্তরণ-সংক্রান্ত একটি সাধারণ পর্যালোচনা সভা। যেখানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা ও অংশীজনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এটি কোনোভাবেই বিজিএমইএ বা পোশাকশিল্পের জন্য বিশেষভাবে নির্ধারিত আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক কোনো বৈঠক ছিল না। একটি সাধারণ সভায় উপস্থিত থাকা এবং শিল্পখাতের প্রতিনিধিদের সাথে একান্ত সাক্ষাৎ পাওয়া- এই দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়।’
‘তৃতীয়ত, সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি গভীর উদ্বেগ ও হতাশা থেকে বলেন- আমরা চার মাস ধরে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চেয়েও পাইনি। অথচ স্টারলিংকের কোম্পানি স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট এলে তার সঙ্গে দেখা করা হয়। যে কোম্পানি ১০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চায়, অথচ ৪০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক খাতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করার সময় পাওয়া যায় না।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘বিজিএমইএ সভাপতি দেশের বৃহত্তর রপ্তানিখাত ও শিল্পের স্বার্থে তার উদ্বেগের কথা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু বিশেষ সহকারী ও উপ-প্রেস সচিব ওই বক্তব্যকে প্রেক্ষিতহীনভাবে উপস্থাপন করেছেন, যা বিভ্রান্তিকর এবং শিল্পখাতের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর।’
এতে বলা হয়, ‘বিজিএমইএ আশা করে, ভবিষ্যতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও উপ-প্রেস সচিব দেশের বৃহত্তম রপ্তানিমুখী খাত সম্পর্কে বক্তব্য প্রদানের ক্ষেত্রে পেশাদারত্ব ও দায়িত্বশীলতা বজায় রাখবেন। বিজিএমইএ পুনরায় আশা প্রকাশ করছে যে, দেশের রপ্তানি খাতের বর্তমান চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও নীতিগত বিষয়াদি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দ্রুত একটি আনুষ্ঠানিক বৈঠক আয়োজন করা হবে।’
কেএসআর/এমএস