যে কোনো অসুস্থতার কারণে কারো যদি স্মৃতিশক্তি নষ্ট হয়ে যায়; এ রকম অবস্থা হয় যে নামাজের সময় মনে রাখতে পারে না, নামাজ পড়ার সময় রাকাত মনে রাখতে পারে না, অথবা শারীরিকভাবে এতটা অক্ষম হয়ে যায় যে মাথা নেড়ে ইশারায় নামাজ আদায়ের সক্ষমতাও তার না থাকে এবং এ অবস্থা একদিন ও এক রাতের বেশি দীর্ঘ হয়, তাহলে তার ওপর আর নামাজ ফরজ থাকে না।
তবে ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত যেহেতু নামাজ, তাই তার পরিবার বা অভিভাবকদের উচিত তাকে নামাজ পড়তে যথাসম্ভব সাহায্য করা। তাকে নামাজ পড়িয়ে দেওয়া। নামাজের সময় হলে তাকে নামাজের কথা মনে করিয়ে দেওয়া, পবিত্রতা অর্জন করতে সাহায্য করা এবং নামাজে দাঁড় করিয়ে তাকে পাশ থেকে বলে দেওয়া কোন কাজের পর কোন কাজ করতে হবে।
বিশিষ্ট তাবেঈ রুকাইন ইবনে রাবী (রহ.) বলেন, একবার আমি হজরত আসমার (রা.) কাছে গেলাম। তখন তিনি বয়োবৃদ্ধ হয়ে গেছেন। দেখলাম, তিনি নামাজ পড়ছেন আর একজন নারী তাকে বলে দিচ্ছেন, এখন রুকু করুন, এখন সিজদা করুন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা: ৩৪৯৭)
এভাবে চেষ্টা করলে ওই অসুস্থ ব্যক্তির অভিভাবকরা সওয়াব লাভ করবেন। কিন্তু তার ওপর নামাজ ফরজ না হওয়ার কারণে কখনো সাহায্য করার কেউ না থাকলে, নামাজ কাজা হয়ে গেলে ওই নামাজ কাজা করতে হবে না বা তার মৃত্যু হলে সেগুলোর ফিদিয়াও দিতে হবে না।
একজন মানুষ যতক্ষণ মানসিকভাবে সুস্থ থাকে এবং ইশারায় নামাজ আদায় করতে পারে, ততক্ষণ সে নামাজ আদায়ে সক্ষম বিবেচিত হয় এবং নামাজ তার ওপর ফরজ থাকে। মাথার ইশারায় নামাজ আদায় করতে পারলে তার কর্তব্য নামাজ আদায় করার চেষ্টা করা, আগে কাজা হওয়া নামাজগুলোও কাজা করার চেষ্টা করা। ইশারায় নামাজ আদায় করার সক্ষমতা থাকা অবস্থায় ওই সময়ের নামাজ বা আগের কাজা নামাজের জন্য ফিদিয়া আদায় করা যাবে না।
তবে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে সন্তান বা উত্তরাধিকারীদের অসিয়ত করে যাওয়া যায় যে, এত ওয়াক্ত নামাজ তার কাজা হয়েছে, কাজা আদায় করার আগে মারা গেলে তারা যেন এই নামাজগুলোর ফিদিয়া আদায় করে দেয়।
নামাজের ফিদিয়া দেওয়ার নিয়ম হলো প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ ও বিতরের নামাজসহ ছয় ওয়াক্ত নামাজের প্রতিটির জন্য পৌনে দুই সের গম অথবা এর বাজারমূল্য দান করা অথবা প্রতি ওয়াক্তের বদলে একজন দরিদ্র ব্যক্তিকে দুই বেলা পেটপুরে খাবার খাওয়ানো। (হেদায়া ১/২২২)
ওএফএফ/জেআইএম