ছেলেকে নিজ হাতে রান্না করে গরুর মাংস খাওয়ানোর ইচ্ছা ছিল রুমি বেগমের (৬৫)। কিন্তু তার শেষ ইচ্ছা আর পূরণ হলো না। কক্সবাজারের চকরিয়ায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে তিনিও রয়েছেন। ওই দুর্ঘটনায় তিনিসহ মেয়ে, পুত্রবধূ, ছেলের শাশুড়ি ও ছেলের শ্যালিকা মারা যান।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকালে নিহতদের মরদেহ দাফন করা হয়। দাফন শেষে রুমি বেগমের ছোট ছেলে মনিরুল হক কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার চান্দিশকরা গ্রামে জাগো নিউজের কাছে মায়ের স্মৃতিচারণ করেন।
মনিরুল হক বলেন, ‘আম্মার সঙ্গে সবশেষ কথা হয় কক্সবাজার যাওয়ার আগে। তিনি আমাকে বলেছিলেন, তারা কক্সবাজার থেকে আসার পর অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসতে। মা নিজ হাতে আমাকে গরুর মাংস রান্না করে খাওয়াবেন। মায়ের এই স্মৃতি খুব মিস করবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পরিবারের সবার অন্তত ১৫ দিন আগে কক্সবাজারে যাওয়া পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু ভাতিজা সামাদের মাথায় আঘাতের কারণে তা পিছিয়ে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাতে ঢাকা থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওয়ানা হন ভাই, ভাবি, ভাতিজা ও ভাইয়ের শ্যালক। পরিকল্পনা অনুযায়ী মধ্যরাতে চৌদ্দগ্রাম থেকে আম্মা, বোন, ভাইয়ের শাশুড়ি ও শ্যালিকাকে চৌদ্দগ্রাম থেকে গাড়িতে তুলে নেন।’
‘গাড়িটি চালাচ্ছিলেন ভাই নিজেই। বুধবার সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীর ঢালা এলাকায় পৌঁছালে বেপরোয়া গতিতে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে তাদের মাইক্রোবাসটির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই বড় ভাই উদয় পাটোয়ারীর স্ত্রী ফারজানা মজুমদার লিজা (২৮), মা রুমি বেগম (৬৫), বোন সাদিয়া হক পাটোয়ারী (২৪), তার শাশুড়ি রিজওয়ানা মজুমদার শিল্পী (৫৫) ও শ্যালিকা ফারহানা মজুমদার টিজা (২৫) মারা যান’, যোগ করেন মনিরুল হক।
এ ঘটনায় আহত হন সাদিয়ার ভাই উদয় পাটোয়ারী (৪৩), ভাইয়ের ছেলে সামাদ পাটোয়ারী (৪) ও শ্যালক শাহেদ মজুমদার লিশান আহত হন। এদের মধ্যে লিশানের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
জাহিদ পাটোয়ারী/এসআর/জিকেএস