যশোর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) গণশুনানিতে ‘ঘুস নয়, পাকা কলা খাওয়া’র কথা স্বীকার করা জেলা পরিষদের উচ্চমান সহকারী আলমগীর হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) জেলা পরিষদ তার বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়।
এর আগে গত ২৬ অক্টোবর তাকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্তের আদেশ দিয়েছিলেন দুদক চেয়ারম্যান। তাৎক্ষণিক বরখাস্ত ছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন যশোর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম শাহীন।সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২৬ অক্টোবর যশোরে দুদকের গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন ও কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী।
গণশুনানিতে বাগআঁচড়া এলাকার বাসিন্দা আনোয়ারুল ইসলাম অভিযোগ করেন, জেলা পরিষদের দোকান বরাদ্দের নামে পরিষদের উচ্চমান সহকারী আলমগীর হোসেন তার কাছে ১০ হাজার টাকা ঘুস নিয়েছেন এবং আরও ছয় লাখ টাকা দাবি করেন। ঘুস না দেওয়ায় দোকানের ডিসিআর রসিদ ফেরত নিয়ে গেছেন।অভিযোগের জবাবে যশোর জেলা পরিষদের উচ্চমান সহকারী আলমগীর হোসেন দাবি করেন, তিনি ঘুস খাননি। আনোয়ারুল ইসলাম ছেলের বিয়েতে দাওয়াত দিয়েছিলেন। তাই দাওয়াত খেতে গিয়েছিলেন। আর আনোয়ারুল ইসলাম তাকে ‘পাকা কলা’ দিয়েছেন। তিনি কলা খেয়েছেন।
এসময় মিলনায়তনে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগের বিষয়টি উঠে আসে। পরে দুদক চেয়ারম্যান দোকান বরাদ্দের নামে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে সাময়িক বরখাস্ত করে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম শাহীনকে অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন। এসময় জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম শাহীন উপস্থিত ছিলেন।জেলা পরিষদ সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ওই দোকান বরাদ্দে ঘুস নেওয়া ছাড়াও উচ্চমান সহকারী আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে ডিসিআর প্রদান নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। ২৬ অক্টোবর গণশুনানিতে দুদক চেয়ারম্যান তাকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দিলেও ৫ নভেম্বর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য উচ্চমান সহকারী আলমগীর হোসেনকে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
যশোর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম শাহীন বলেন, উচ্চমান সহকারী আলমগীর হোসেনকে ৫ নভেম্বর সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক ছুটিতে থাকায় দাপ্তরিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে নির্দেশ কার্যকর করতে সময় লেগেছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। মামলার পর তদন্ত শুরু হবে।
মিলন রহমান/এসআর/জিকেএস