ক্যাম্পাস

ছাত্রদলের ৭ জনের বিরুদ্ধে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধরের অভিযোগ

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) এক ঘণ্টার ব্যবধানে চার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মারধর ও হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ হোসেনসহ সাত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে প্রশাসনিক ভবনের পাশে এই ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্তরা হলেন মারুফ (১৮-১৯ সেশন), মিজবাহ (১৫-১৬ সেশন), ফরহাদ হোসেন (১৮ ব্যাচ), দানিয়েল (১৬-১৭ সেশন), ফুয়াদ (২১ ব্যাচ) মিরাজ (২১ ব্যাচ) ও রচ্চি (২৩ ব্যাচ)। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, অভিযুক্তরা ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্ত ফরহাদ, মারুফ ও দানিয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ড্রপআউট হওয়া শিক্ষার্থী‌। এছাড়াও নির্ধারিত সময়ে স্নাতক সম্পন্ন করতে না পারায় মারুফের ছাত্রত্ব শেষ হয়ে গেলেও তিনি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে হলে সিট দখল করে বসবাস করছেন। নবীন শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে বাধ্য করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত অন্য কয়েকজনের বিরুদ্ধেও ক্যাম্পাসে মাদক সেবনের অভিযোগ রয়েছে‌।

ভুক্তভোগীরা জানান, তাদের আগের ছবি দেখিয়ে অশ্লীল গালিগালাজ ও মারধর করতে এগিয়ে আসে এবং মারধর করা হয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত রচ্চির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি সেখানে আমার এক স্যারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। পরে সেখানে এইসব খেয়াল করেছি।

তবে প্রতক্ষ্যদর্শী ও সিসিটিভি ফুটেজ মতে, তিনি তাদের সঙ্গেই ঘটনাস্থলে আসেন এবং মারধরের সময় তিনি তাদের পাশেই অবস্থান করেন। পরবর্তীতে প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ বলেন, আওয়ামী লীগের দোসর যারা ছিল তাদের বিরুদ্ধে আমরা এই অবস্থান নিয়েছি। ৫ আগস্টের পর এক বছর পরে এসে মারামারির বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের আশ্বাস দিয়েছিল সুষ্ঠু বিচার করবে, কিন্তু এখনো বিচার করেনি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আহমেদুল কবির তাপশ বলেন, মারুফ, ফরহাদসহ যারা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল তাদের বিষয়ে নানা ধরনের অভিযোগ এর আগে থেকেই ছিল। যদিও এক সময়ে তারা ছাত্রদলের সঙ্গে চলাফেরা করতো, তবে বহু পূর্ব থেকে তারা ছাত্রদলের ব্যানারের বাইরে গিয়ে নিজস্ব স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে যা ছাত্রদলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মারধরের এই অপ্রীতিকর ঘটনার দায়ভার কোনোভাবেই ছাত্রদল নেবে না। বরং, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের পরামর্শ সাপেক্ষে এই বিষয়ে ছাত্রদল প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেবে।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. আরফান আলী বলেন, খবর পেয়ে প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে মিজবাহ, মারুফ ও ফরহাদকে পেয়েছি। জিজ্ঞাসা করলে তারা দাবি করে ভুক্তভোগীরা আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। জানতে পেরেছি তারা (অভিযুক্তরা) আরও কয়েকজন কর্মচারীর সঙ্গেও খারাপ আচরণ করে। ক্যাম্পাসে ভয়ভীতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। প্রশাসন এটি কোনোভাবেই হতে দেবে না। পুলিশকে অবহিত করা হবে এবং প্রশাসনিকভাবেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমএসএ/এএমএ/জিকেএস