গভীর রাতে চার বছরের ঘুমন্ত শিশুকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে কলকাতার কাছাকাছি হুগলির তারকেশ্বরে। শনিবার (৮ নভেম্বর) ভোরে খবরটি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় এরই মধ্যে পকসো আইনে মামলা হয়েছে ও এতে জড়িত সন্দেহ শিশুটির দাদাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাতে শিশুটি তারকেশ্বর রেলওয়ে শেডের নিচে তার দাদির পাশে শুয়ে ঘুমাচ্ছিল। ঘুমন্ত অবস্থাতেই মশারি কেটে তুলে নিয়ে যান অভিযুক্ত। এরপর শিশুটিকে তিনি ধর্ষণ করেন। শিশুটি বর্তমানে তারকেশ্বরের একটি হাসপাতালে ভর্তি, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এদিকে, তদন্তে নেমে পুলিশের প্রথমেই সন্দেহ যায় শিশুটির দাদার ওপর। তার আচরণ সন্দেহজনক ছিল বলে দাবি পুলিশের। শিশুটিকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন তার দেখা পাওয়া যায়নি। সন্দেহের কারণেই তাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদের সময়ই দাদুর কথায় অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এরই মধ্যে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। পুলিশের অনুমান, ঘটনার সময় তিনি মদ্যপ ছিলেন।
ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবারের দাবি, শনিবার ভোর থেকে মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সারা সকাল বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন তারা। শেষমেশ দুপুরে স্টেশন সংলগ্ন একটি নর্দমা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে। তার যৌনাঙ্গ থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। গালে কামড়ের ক্ষত ছিল। শরীরের একাধিক অংশে ছিল আঘাতের চিহ্ন।
এ বিষয়ে তারকেশ্বরের বিধায়ক রামেন্দু সিংহ রায় বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। যে জায়গায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি রেল পুলিশের অন্তর্গত। আমার মনে হয়, রেল পুলিশের দেওয়া নিরাপত্তার যথেষ্ট অভাব রয়েছে।
পরিবারের অভিযোগ, গুরুতর আহত অবস্থায় ওই শিশুকে প্রথমে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তারে ভাল করে পরীক্ষা করেননি। প্রাথমিক চিকিৎসার পরই ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে ওই অবস্থায় শিশুটিকে নিয়ে থানায় যান বাবা-মা। তার পরে আবার তার শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। পরিবারের তরফে অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত শুরু করে পুলিশ। শুরু হয় অভিযুক্তদের খোঁজ। ওই শিশুকন্যাকে চন্দননগর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
এই টালবাহানা নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতালের ভিতরেই বিক্ষোভ দেখান বিজেপির নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি, শুরুতেই কেন হাসপাতাল থেকে পুলিশে খবর দেওয়া হলো না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
স্থানীয় বিজেপি নেতাদের দাবি, চার বছরের শিশুটির ওপর অত্যাচার চালানোর অভিযোগ পেয়েও শুরুতে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ। যে বা যারা এটি ঘটিয়েছে, তাদের খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
যদিও তারকেশ্বর থানার পুলিশের দাবি, শিশুটির পরিবারের তরফে মৌখিক অভিযোগ পেয়েই তদন্ত শুরু হয়। শিশুটির শারীরিক পরীক্ষারও ব্যবস্থা করা হয়। শিগগিরই দোষীদের শনাক্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্র: এনডিটিভি, আনন্দবাজার
এসএএইচ