জাতীয় দলের সাবেক নারী ক্রিকেটার জাহানারা আলমের অভিযোগের তীর যার দিকে, সেই নারী দলের সাবেক কর্তা মঞ্জুরুল ইসলাম এখন চীনে। ক্রিকেট উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। তার আগে তিনি কিছুটা সময় বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সাথেও কাজ করেছেন। সেই সময় তার আচরণ, কথাবার্তা ছিল অসংলগ্ন এবং নারী ক্রিকেটারদের জন্য অপমানজনক, লাঞ্ছনামূলক।
জাতীয় নারী দলের সাবেক অধিনায়ক জাহানারা আলম রীতিমতো মঞ্জুরুল ইসলামের বিপক্ষে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন। এক সাক্ষাৎকারে জাহানারা মঞ্জুরুলের বিপক্ষে সরাসরি ওই অভিযোগ করেন। জাহানারার সেই অভিযোগের ভাষায় তোলপাড় দেশের নারী ক্রিকেট অঙ্গন।
সবার একটাই প্রশ্ন-জাতীয় দলের একজন সাবেক ক্রিকেটার, তিনি তাদের ছোট বোনতুল্য নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে কীভাবে এমন যৌন নিপীড়নমূলক কথাবার্তা বলতে পারেন? কেমন করে অশ্লীল ইঙ্গিত দিতে পারেন?
ঘটনাটি পুরোনো। জাহানারা তখন বিসিবিতে নাকি লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। তবে এখন, অর্থাৎ বর্তমান বোর্ডের কাছে জাহানারা কিংবা কোনো নারী ক্রিকেটারই কারও বিপক্ষে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ করেননি।
এমনটা জানিয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘অনেক কিছুই তো দেখছি। তবে আমাদের যদি কেউ কোনো অভিযোগ করে সেটা বোর্ডে লিখিতও আসতে পারে বা মৌখিকভাবেও আসতে পারে। তখন বোর্ড ব্যাপারটা আরও সিরিয়াসলি দেখবে। এখন নিউজ তো অনেক কিছুই থাকে। আমরা বলছি না অসত্য বা সত্য। জাহানারার যেই অভিযোগ, সেটা লিখিত এসেছিল ২১ সালে। ২১ সালেই সম্ভবত সেটা রিজলভ হয়ে গিয়েছিল। এটা আবার যে নতুনভাবে এসেছে, সেটা আমাদের কাছে কিছু আসেনি এখনো।’
তারপরও জাহানারা আলমের অভিযোগের ভিত্তিতে বিসিবি দ্রুত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সবার উন্মুখ অপেক্ষা, সেই তদন্ত কমিটি যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত করে রিপোর্ট দেবে। প্রকৃত দোষী কঠোর শাস্তি পাবে।
তদন্ত কমিটি তার কাজ করবে। বিসিবি এমন ঘৃণ্য যৌন নির্যাতনের ঘটনাকে কীভাবে দেখছে? নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে এমন জঘন্য আচরণ, অশ্লীল ভাষা ব্যবহার ও কুপ্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে বোর্ডের মনোভাব কী?
আইসিসি সভায় যোগদানের কারণে আরব আমিরাতে থাকায় বিসিবি প্রধান আমিনুল ইসলাম বুলবুল ওই ঘটনার প্রকাশের পরপরই তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে পারেননি।
তবে আজ রোববার বিসিবির কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিসিবির বিগ বস আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে খুব কঠোর মনে হলো। সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিলেন, জাহানারা আলম এবং নারী ক্রিকেটারদের যৌন হয়রানির মতো অভিযোগে বোর্ডের অবস্থান কী? এমন ঘৃণ্য আচরণকারী ও কথাবার্তা বলা কেউ যদি বোর্ডের লোক কিংবা অন্য কেউ হন, তাহলে বিসিবি কী করবে?
বিসিবি প্রধান আমিনুল ইসলাম বুলবুলের এক কথার উত্তর, ‘জিরো টলারেন্স।’
এআরবি/এমএমআর/জিকেএস