আলোচিত ব্যবসায়ী এস আলমের দুই ছেলে আশরাফুল আলম ও আসাদুল আলমকে অবৈধভাবে ৭৫ কোটি টাকা কর ফাঁকির সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় যুগ্ম কর কমিশনার এ কে এম শামসুজ্জামানের বেতন দুই ধাপ অবনমিত করার দণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তার সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের সই করা আদেশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। বুধবার (১২ নভেম্বর) এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার ইস্যু হওয়া আদেশে বলা হয়েছে, যুগ্ম কর কমিশনার এ কে এম শামসুজ্জামান এর আগে যুগ্ম কর কমিশনার হিসেবে পরিদর্শী রেঞ্জ-৪, কর অঞ্চল-১, চট্টগ্রামে কর্মরত ছিলেন। অফিসে কর্মরত থাকাকালে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ১৯এএএএএ ধারার বিধান অনুযায়ী ২০২১ সালের ৩০ জুনের মধ্যে আশরাফুল আলম এবং আসাদুল আলম মাহি নামের করদাতার দাখিল করা ২০২০-২১ করবর্ষের সর্বজনীন স্ব-নির্ধারণী আয়কর রিটার্নের বিপরীতে প্রযোজ্য ৭৫ কোটি টাকার কর সরকারি কোষাগারে জমা হয়নি। অথচ দাখিল করা পে-অর্ডার যাচাইয়ের নামে আইন-বহির্ভূতভাবে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি সাধন করেছেন।
আরও পড়ুনচট্টগ্রামে হবে বিশ্বমানের কনটেইনার টার্মিনাল, ধারণক্ষমতা ৮ লাখনতুন পে-স্কেলের ফ্রেমওয়ার্ক দিয়ে যাবে বর্তমান সরকার
শুধু তাই নয়, তাদের সহযোগিতা করতে গিয়ে ওই দুই করদাতার মিথ্যা শুনানির বক্তব্য আয়কর ফাইলে যুক্ত করেছেন। ওই অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করে কৈফিয়ত তলব করা হয়। গত ৬ নভেম্বর তার বিভাগীয় মামলার বিষয়ে ব্যক্তিগত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে তার জবাব এবং বিভাগীয় মামলা সংশ্লিষ্ট নথি ও অন্যান্য কাগজপত্র পর্যালোচনা করে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ পাওয়া যায়।
এতে আরও বলা হয়, এসব কারণে বিধিমালার ৪(২) (ঘ) বিধি অনুযায়ী যুগ্ম কর কমিশনারকে বেতন গ্রেডের দুই ধাপ অবনমিত করে অর্থাৎ বর্তমান মূল বেতন ৬১ হাজার ২০০ টাকার দুই ধাপ নিম্নে ৫৬ হাজার ৩০ টাকা মূল বেতনে লঘুদণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সঙ্গে তার সাময়িক বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
২০২৪ সালের ১৭ অক্টোবর বিতর্কিত আশরাফুল আলম ও আসাদুল আলমকে অবৈধ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগে শামসুজ্জামানসহ তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। এছাড়া শামসুজ্জামানসহ অতিরিক্ত কর কমিশনার সাইফুল আলম ও সহকারী কর কমিশনার আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে আশরাফুর আলম ও আসাদুল আলমের অপ্রদর্শিত ৫০০ কোটি টাকার সম্পদ বৈধতা দেওয়ার অভিযাগে পৃথক অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এসএম/কেএসআর/এমএস