অর্থনীতি

শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন, লেনদেন নামলো ২০০ কোটির ঘরে

এক কার্যদিবস কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলার পর দেশের শেয়ারবাজারে আবার ঢালাও দরপতন হয়েছে। বুধবার (১২ নভেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। একই সঙ্গে লেনদেন কমে ২০০ কোটি টাকার ঘরে নেমেছে।

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট রয়েছে। ফলে বাজারটিতে মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে সিএসইতে টানা ৯ কার্যদিবস মূল্যসূচক কমলো।

এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। কিন্তু লেনদেনের শেষ দিকে বাজারে ঢালাও দরপতন হয়। ফলে মূল্যসূচকের বড় পতন দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে মাত্র ৫৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৩০১টির। আর ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২২টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৭২টির দাম কমেছে এবং ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৪টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৭১টির দাম কমেছে এবং ৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৭টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৮টির এবং ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর ৩৫টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে একটির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ২৭টির দাম কমেছে এবং ৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪৭ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৮২৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৯৮ পয়েন্টে নেমে গেছে।

সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৯০ কোটি ১৩ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৩৯ কোটি ৭৫ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৪৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে গত ২৩ জুনের পর ডিএসইতে সবচেয়ে কম লেনদেন হলো।

এই লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে সামিট এলায়েন্স পোর্টের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৩ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ৫৪ লাখ টাকার। ৭ কোটি ৭০ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশি শিপিং করপোরেশন, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, মনোস্পুল পেপার, রানার অটোমোবাইল, ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং ও শাহজিবাজার পাওয়ার।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১২০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৬৫ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২০টির এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।

এমএএস/এমকেআর/জেআইএম