চীনের তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মডেলগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে অবস্থিত সিলিকন ভ্যালিতে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কোম্পানির কার্যক্রমে এসব এআই মডেল এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এছাড়াও প্রযুক্তি জগতের বহু শীর্ষ ব্যক্তির প্রশংসাও পাচ্ছে চীনের এসব এআই মডেল।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানের তুলনায় অনেক কম খরচ এবং ব্যবহারে সহজ হওয়ার কারণে বাজারে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাচ্ছে এসব চীনা মডেলগুলো। এছাড়া চীনের মডেলগুলো ওপেন-ওয়েট, অর্থাৎ তাদের প্রশিক্ষিত ডেটা সবার জন্য উন্মুক্ত। এতে যে কেউ মডেলটি ডাউনলোড করে ব্যবহার বা উন্নয়ন করতে পারে।
অন্যদিকে, বেইজিংভিত্তিক জেড ডট এআই ও হাংঝু-ভিত্তিক ডিপসিক পুরোনো প্রজন্মের চিপ ব্যবহার করায় যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হচ্ছে না। এতে প্রশিক্ষণ ও পরিচালনা ব্যয় অনেক কমে গেছে, ফলে তারা মার্কিন কোম্পানির তুলনায় অনেক সস্তায় সেবা দিতে পারছে। জানা গেছে, ডিপসিক এর মডেলগুলো ওপেন এআই-এর তুলনায় প্রায় ৪০ গুণ সস্তা।
ডেটা প্ল্যাটফর্ম ওপেন রাউটার-এর তথ্যমতে, গত সপ্তাহে সর্বাধিক ব্যবহৃত ২০টি এআই মডেলের মধ্যে ৭টি ছিল চীনা কোম্পানির। প্রোগ্রামিং-সংক্রান্ত শীর্ষ ১০ মডেলের মধ্যে ৪টি তৈরি করেছে চীনা প্রতিষ্ঠান।
অ্যাটম প্রোজেক্টের-এর বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত চীনা ওপেন মডেলগুলোর মোট ডাউনলোড সংখ্যা ৫৪০ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে যা যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় অনেক বেশি।
২০২৫ সালে এয়ারবিএনবি এর প্রধান নির্বাহী ব্রায়ান চেস্কি জানান, তার প্রতিষ্ঠান ওপেন এআই এর চ্যাটজিপিটির পরিবর্তে আলিবাবার কোয়েন ব্যবহার করছে, কারণ এটি দ্রুত ও সাশ্রয়ী।একই সময়ে সোশ্যাল ক্যাপিটাল-এর সিইও চামাথ পলিহাপিতিয়া বলেন, তারা কাজের বড়ো অংশ মুনশট এর কিমি কে২ এ স্থানান্তর করেছেন , কারণ এটি অনেক বেশি কার্যকর ও অত্যন্ত সস্তা।
প্রোগ্রামারদের মধ্যে গুঞ্জন উঠেছে, যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় কোডিং অ্যাসিস্ট্যান্ট কম্পোজার ও উইন্ডসার্ফ আসলে চীনা মডেলের উপর ভিত্তি করে তৈরি। যদিও তাদের নির্মাতারা আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি স্বীকার করেননি।
টেক বাজ চায়না-এর প্রতিষ্ঠাতা রুই মা মনে করেন, এআই প্রযুক্তির বিকাশ অ্যান্ড্রয়েড বনাম আইফোন-এর মতো পথে যেতে পারে। যেখানে অ্যান্ড্রয়েডের ব্যবহারকারী অনেক বেশি হলেও, প্রিমিয়াম বাজারে আইফোনের প্রভাব বেশি।
সূত্র : আল-জাজিরা
কেএম