‘প্রতিপক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বাদী মামলা করে থাকতে পারে’ বলে অভিযোগ করলেন অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীর আইনজীবী তুহিন হাওলাদার। এক মামলায় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী ও তার ভাই আলিসান চৌধুরী আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। তাদের বিরুদ্ধে জারি থাকা গ্রেফতারি পরোয়ানার পর বোরবার (১৬ নভেম্বর) ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৩-এ তারা আত্মসমর্পণ করেন।
সন্ধ্যা ৬টার দিকে মেহজাবীন ঢাকা জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে আসেন। এরপর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিজের আবেদন শেষে এই জামিন পান। এসময় তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। পরে তার আইনজীবী তুহিন হাওলাদার গণমাধ্যমে কথা বলেন।
আইনজীবী তুহিন হাওলাদার বলেন, ‘হয়রানি করার উদ্দেশ্যে বাদী এই ঘটনা সাজিয়ে মামলা করেছেন। যাতে আমাদের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়, আমরা হয়রানির শিকার হই। কারণ প্রতিটি মানুষের পেশাগত জীবনে, ব্যক্তি জীবনে প্রতিপক্ষ থাকতে পারে।’
এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘বাদীর সঙ্গে মেহজাবীন বা তার ভাইয়ের আগে কখনো পরিচয় বা কোনো কথাবার্তা হয়নি। তারা তাকে চেনে না। আর ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়ের যে দাবি করা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন।’
বিভিন্ন ধরনের কারচুপির আশ্রয় নেওয়ার কথা উল্লেখ করে তুহিন হাওলাদার বলেন, ‘বাদী মামলা ও নানান কারচুপির আশ্রয় নিয়েছেন। বিশেষ করে তিনি তার জাতীয় পরিচয়পত্র যুক্ত করেননি এবং মামলার পক্ষে কোনো প্রমাণ জমা দেননি। যেই ২৭ লাখ টাকার কথা বলা হচ্ছে তা তিনি কোন বিকাশ নাম্বারে কিভাবে পাঠিয়েছেন, যে কেউ প্রমাণ করতে পারবে- এটি কার? মামলার ঘটনাস্থল হাতিরঝিল উল্লেখ করা হলেও মামলাটি ভাটারা থানায় দেখানো হয়েছে। আবার ঠিকানা ব্যবহার করেছে সেখানেও বাদীর অবস্থান আমরা পাইনি। তেমনি মেহজাবীন ও তার ভাইয়েরও যে ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে সেটিও সঠিক নয়।’
মামলার বাদী আমিরুল ইসলামের করা অভিযোগে বলা হয়েছিল, দীর্ঘদিনের পরিচয়ের সুবাদে বিভিন্ন সময়ে নতুন পারিবারিক ব্যবসায় পার্টনার করার আশ্বাস দিয়ে নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে মোট ২৭ লাখ টাকা নেন মেহজাবীন ও তার ভাই। পরে ব্যবসা শুরু না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে কালক্ষেপণ করা হয়। এ ছাড়া হাতিরঝিলের একটি রেস্টুরেন্টে ডেকে নিয়ে তাকে গালিগালাজ করা ও জীবননাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
ঘটনার পর ভাটারা থানায় গেলে বাদীকে আদালতে মামলা করতে বলা হয়। পরে তিনি ২৪ মার্চ ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৭/১১৭(৩) ধারায় মামলা করেন। নির্ধারিত তারিখে হাজির না হওয়ায় ৩ নভেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
পরোয়ানা জারির পর তারা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন জানান। এ মামলায় গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী দিন ধার্য রয়েছে ১৮ ডিসেম্বর।
গ্রেফতারি পরোয়ানার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর মেহজাবীন তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানান, অনলাইনে তার নাম ব্যবহার করে ভিত্তিহীন কিছু মামলা সংক্রান্ত সংবাদ ছড়ানো হচ্ছে। তিনি সাংবাদিকদের যাচাই ছাড়া কোনো সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান।
এমডিএএ/এমএমএফ/জিকেএস