অনির্বচনীয়
এমন কোনো কলম কি আছে!যা দিয়ে তোমাকে লেখা যায়?তোমাকে পড়া যায় কোনো বর্ণমালায়;আমার ঠোঁটের বাঁকে মিছে-মিছেঅজস্র কথামালা দোল খায়;রংতুলির সব রং শুকিয়ে-শুকিয়ে মিশে যায়সুদূর নিলীমায়,প্রশ্নগুলো কড়া নাড়ে হৃদয় দরজায়এত রূপ কোথা থেকে পেলে?বসফরাসের জল রোদের গন্ধে মিলায়পরিযায়ী কল্পনাগুলো ডানা মেলেস্বপ্নের চিল ওড়ে ইথারের ছায়ায়;তোমার স্পর্শ মিশে লাজুক দুপুরেচুপিচুপি বাঁশি বাজে এই অবেলায়;আমি ল্যাম্পপোস্ট হয়ে দাঁড়িয়ে থাকি, তোমার শহরে;এমন কোনো বিশ্বাসকোষ কি আছে!যা দিয়ে তোমাকে বর্ণনা করা যায়?
খোলাচুল হাওয়ায় দোলেদখিনা জানালায়;আকাশী শাড়ির আঁচল ছন্দ তোলেসারা মহল্লায়;তোমার শরীরের সুবাস কস্তুরীমৃগ ক্লান্তিময় দিনের করে অবসান;তাবৎ পৃথিবী খুঁজে পায় স্বর্ণমৃগলেখে নতুন আফসান,এমন কোনো স্পর্শ কি আছে!যা দিয়ে তোমাকে ভোলা যায়?
জীবন ছায়াপথে তোমার রূপের রেণুমাখাদিবস-রজনী স্মৃতির ডায়েরি খুলে;খুঁজে ফিরি, সবই যেন আজও অদেখাজাগতিক কোলাহল সবকিছু ভুলে;তোমাকে দেখার তৃষ্ণা পাখা মেলেহাত রাখি তোমার খোলা চুলে!সূর্যের মতো নিয়ম করে হেসে খেলেতোমার চুলের ঘ্রাণ নিই;এক চিমটি কাজল গুঁজে দিইমায়াবী চোখের পাঁপড়িতে;তারপর তোমার কপোলের টোলআভা ছড়ায়, শহর, জনপদ, সমগ্র নগরীতে;এমন কোনো কবিতা কি আছে!যা দিয়ে তোমাকে অলঙ্কৃত করা যায়?
*****
ভীষণ একা
যেভাবে ভাবি যখন ভাবিআসলে আমি ভীষণ একাএকলা সকাল, একলা বিকেলএকলা পায়ের নূপুর যেমনভীষণ একা;একলা শালিক দিনের শেষে;রাতের শেষে-চুপটি করে থাকে একাআমি তেমন ভীষণ একা!ভীষণ একা, ভীষণ একা।
রাত পোহালে সকাল যেমননদীর জলে শ্যাওলা যেমনকাকচক্ষু জলের নিচেকানাবগি চক্ষু মেলেযেমন করে একলা আকাশবয়ে চলে জীবনব্যাপী;যেমন করে রোদের ঘ্রাণেডানা শুকোয় একলা বিকেলআমি তেমন ভীষণ একাভীষণ একা, ভীষণ একা।
দিবস কাটে একলা আমাররাত্রি কাটে একলা আমারনাইতে গেলে দিঘির জলেকত শত প্রশ্ন জাগে!শাপলা-শালুক, শামুক-ঝিনুকসবাই বুঝি একলা এমন!কষ্ট লুকোয় বুকের কোণেঅশ্রুবিহীন চোখের কোণেসবাই কেন একলা চলে!পৃথিবীটা একলা যেমনআকাশের চাঁদ একলা যেমনআমি তেমন ভীষণ একাভীষণ একা, ভীষণ একা।
এসইউ/এএসএম