আন্তর্জাতিক

সুদানে আরএসএফ-এর বিরুদ্ধে ৩২ নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ

সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় এল-ফাশের শহরের দখল নেওয়ার পর জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালোর নেতৃত্বে থাকা আধা-সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) সদস্যদের মাধ্যমে ৩২টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সুদান ডক্টর্স নেটওয়ার্ক রোববার (১৬ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কিছু মেয়েকে আরএসএফ দখলে থাকা এল-ফাশের শহরের ভেতরেই ধর্ষণ করা হয়েছে এবং অন্যদের ওই শহর থেকে তাওইলা শহরে পালানোর পথে ধর্ষণ করা হয়েছে। গত ১ সপ্তাহে অন্তত ৩২টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

এসব ধর্ষণ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন যা যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল বলে নিন্দা জানিয়েছে সংগঠনটি।

এতে আরও বলা হয়, এসব অপরাধ আরএসএফ নিয়ন্ত্রিত এলাকায় নারীদের ওপর চরম বিশৃঙ্খলা, নিরাপত্তাহীনতা ও পদ্ধতিগত নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরেছে। চিকিৎসক সংগঠনটি আরএসএফ–কে সম্পূর্ণভাবে দায়ী করে জরুরি ভিত্তিতে স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত, বেঁচে যাওয়া ভুক্তভোগী ও সাক্ষীদের তাৎক্ষণিক সুরক্ষা, চিকিৎসা, মানসিক সহায়তা ও আইনি সহায়তার জন্য মানবিক সংস্থাগুলোর নির্বিঘ্ন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে চলমান সংঘাতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪০,০০০ মানুষ নিহত এবং ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও)।

গত মাসে আরএসএফ উত্তর দারফুরের রাজধানী এল-ফাশার দখল করে যেখানে তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে আরএসএস সুদানের ১৮টি রাজ্যের মধ্যে দারফুরের পাঁচটিই নিয়ন্ত্রণ করছে।

সুদানে এখন যে গৃহযুদ্ধ চলছে, তার শুরুটা হয়েছিল ২০১৯ সালে তিন দশক ধরে প্রেসিডেন্ট থাকা ওমর আল-বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করার মধ্য দিয়ে। ১৯৮৯ সালে সেনা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সুদানের ক্ষমতায় আসা ওমর আল-বশিরকে পদ থেকে সরাতে ২০১৯ সালে সুদানে ব্যাপক হারে বিক্ষোভ হয়। এর ধারাবাহিকতায় সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের পতন ঘটায়।

দেশের ক্ষমতায় আসে সেনাবাহিনী। তবে সাধারণ মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে। বিক্ষোভের মুখে সেনাবাহিনী ও বেসামরিক প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে সরকার প্রতিষ্ঠা হয়, কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবরে আরেকটি অভ্যুত্থানে ওই সরকারও ক্ষমতাচ্যুত হয়।

ওই অভ্যুত্থানের পেছনে মূলত যে দুইজন ব্যক্তি ছিলেন, তারাই সুদানে চলমান সংঘাতের পেছনে রয়েছেন। এরা হলেন- জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো। জেনারেল আল-বুরহান সুদানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান এবং সে কারণে তিনিই দেশটির প্রেসিডেন্ট।

অন্যদিকে দেশটির উপ-নেতা জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো কুখ্যাত আধা-সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস বা আরএসএফের কমান্ডার। তিনি হেমেডটি নামেই বেশি পরিচিত।

সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি

কেএম