একযুগেরও বেশি সময় পর আগামী ৬ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ১৯৮৪ সালে স্থাপিত এই সংগঠনে দীর্ঘদিন পর নেতৃত্ব নির্বাচনের সুযোগ আসায় জেলার ব্যবসায়ী ও সচেতন মহলে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, একটি স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে তারা যোগ্য নেতৃত্ব খুঁজে পাবেন, যারা সংগঠনের রাজনৈতিক বলয় ভেঙে ব্যবসায়ীদের স্বার্থে কাজ করবে।
চেম্বার নির্বাচন বোর্ড সূত্র জানায়, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৬ ডিসেম্বর নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ নির্বাচনে অর্ডিনারি ও অ্যাসোসিয়েট গ্রুপের ২৪টি পদে মোট ৬৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এতে একজন সভাপতি, একজন সিনিয়র সহ-সভাপতি, দুজন সহ-সভাপতি ও ২০ জন পরিচালক ৫০৭ জন সদস্যের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবেন।
এদিকে নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসায় প্রার্থীরা ভোটারদের মন জয়ে নিয়মিতভাবে মতবিনিময় সভায় প্রীতিভোজের আয়োজন করছে। শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত দুই গ্রুপের প্রার্থীরা।
সংগঠনটির অর্ডিনারি গ্রুপে সভাপতি পদে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু এবং মেসার্স সিদ্দিক ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী রুহুল আমিন সিদ্দিক (খসরু) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে আনিছুর রহমান, অমর কৃষ্ণ দাস, আলাউদ্দিন আল আজাদ। আর সহ-সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন আব্দুল কাদের শেখ, মোজাহিদুল ইসলাম দুদু ও আল-আমিন খন্দকার রয়েছেন। এ গ্রুপ থেকে ১৪টি পদের বিপরীতে পরিচালক পদে লড়ছেন ৪৪ জন ব্যবসায়ী।
অপরদিকে অ্যাসোসিয়েট গ্রুপের সহ-সভাপতি পদে একজনের বিপরীতে রয়েছেন জাহিদুল ইসলাম, লিটন সাহা ও এম রেজাউল করিম রঞ্জু। এছাড়া ছয়টি পদের বিপরীতে ৮ জন পরিচালক পদে প্রার্থী হয়েছেন।
জানা যায়, সর্বশেষ সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের ভোট হয়েছিল ২০১৩ সালে। এরপর গত এক যুগে পাঁচটি পরিচালনা পর্ষদের নেতৃত্ব নির্বাচিত হয় বিনা ভোটে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ চেম্বারকে পারিবারিক চেম্বারে পরিণত করেছিল। যোগ্য নেতৃত্ব না থাকায় সিরাজগঞ্জ বাণিজ্যিক এলাকা হলেও কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি এই সংগঠন।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাজনৈতিক ও পারিবারিক বলয় থেকে বেরিয়ে আগামী দিনে সিরাজগঞ্জ চেম্বারকে ব্যবসায়ীদের প্লাটফর্ম হিসেবে দেখতে চান তারা।
মেসার্স প্রত্যয় ব্রিকসের মালিক জুয়েল রানা জাগো নিউজকে বলেন, আমি নিজেও অর্ডিনারি গ্রুপ থেকে পরিচালক পদে প্রার্থী হয়েছি। আমরা চাই, চেম্বারে এমন নেতৃত্ব আসুক যারা ব্যবসায়ীদের স্বার্থে বিভিন্ন দাবি দাওয়া পূরণ করবেন।
মেসার্স কাজী বিজনেস মার্টের স্বত্বাধিকারী কাজী সোহেল রানা জাগো নিউজকে বলেন, বিগত আওয়ামী লীগের আমলে চেম্বারে ভোট ছাড়াই পরিচালনা পর্ষদ গঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীরা দলের পছন্দের ব্যক্তিকেই চেম্বারে বারবার বসিয়েছেন। আর এ কারণে তারা কখনও ব্যবসায়ীদের স্বার্থ নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায়নি। আমরা আশাবাদী, আগামীতে যারা নেতৃত্বে আসবেন তারা নিশ্চয় ব্যবসায়ীদের স্বার্থেই কাজ করবেন।
এম এ মালেক/কেএইচকে/জেআইএম