আন্তর্জাতিক

ট্রাম্পের ঘোষণাকে ‘ঔপনিবেশিক হুমকি’ হিসেবে দেখছে ভেনেজুয়েলা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার ওপর ও চারপাশের আকাশসীমাকে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ঘোষণা করায় দুই দেশের উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। কারাকাস ট্রাম্পের এমন ঘোষণার কঠোর নিন্দা জানিয়েছে।

ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ট্রাম্পের বক্তব্য ঔপনিবেশিক হুমকির সমতুল্য।

বিবৃতিতে বলা হয়, ভেনেজুয়েলার আকাশসীমার সার্বভৌমত্বকে ক্ষতিগ্রস্ত করার এই ঔপনিবেশিক হুমকিকে আমরা নিন্দা জানাই। এটি ভেনেজুয়েলাবাসীর বিরুদ্ধে আরেকটি অদ্ভুত, বেআইনি ও অযৌক্তিক আগ্রাসন।

এর আগে শনিবার সকালে ট্রাম্প তার ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে লিখেন, সব এয়ারলাইন, পাইলট, মাদক ব্যবসায়ী ও মানবপাচারকারীদের উদ্দেশে বলছি, ভেনেজুয়েলার ওপর ও চারপাশের আকাশসীমা সম্পূর্ণ বন্ধ হিসেবে বিবেচনা করুন।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো–বিরোধী যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য ও হুমকি বেড়েই চলেছে।

ওয়াশিংটন দাবি করছে, এই পদক্ষেপ মাদক পাচার দমনের অংশ। তবে বিশ্লেষক ও মানবাধিকার পর্যবেক্ষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র আসলে মাদুরো সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য ভিত্তি তৈরি করছে।

মার্কিন সেনাবাহিনী এরই মধ্যে ক্যারিবিয়ান সাগরে একটি বিমানবাহী রণতরী মোতায়েন করেছে এবং মাদকবাহী বলে অভিযুক্ত বেশ কয়েকটি জাহাজে বোমা হামলা চালিয়েছে। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এসব হামলাকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলে উল্লেখ করেছেন।

সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্প আরও বলেন, খুব শিগগিরই ভেনেজুয়েলায় স্থলভিত্তিক অভিযান চলবে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় টেলিভিশনে ভাষণে মাদুরো বলেন, ভেনেজুয়েলাকে ভয় দেখানো যাবে না। তিনি অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্র মিথ্যা অজুহাত তৈরি করে ভেনেজুয়েলায় হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে—এবং ট্রাম্পের সর্বশেষ ঘোষণা সেই প্রচেষ্টারই অংশ।

যুক্তরাষ্ট্র গত কয়েক মাস ধরে মাদুরো সরকারের ওপর ধারাবাহিকভাবে চাপ বাড়াচ্ছে।

আগস্টে ওয়াশিংটন মাদুরোর গ্রেফতারি তথ্যের জন্য ঘোষণা করা পুরস্কার দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৫০ মিলিয়ন ডলার করেছে। আর চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র কার্টেল দে লোস সোলেস নামে পরিচিত এক গোষ্ঠীকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে—যা মাদুরোর ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করা হয়।

এদিকে নিউইয়র্ক টাইমস শুক্রবার জানায়, ট্রাম্প গত সপ্তাহে মাদুরোর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে দুই নেতার সম্ভাব্য সাক্ষাৎ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। যদিও এমন বৈঠকের কোনো আনুষ্ঠানিক পরিকল্পনা নেই।

নিউম্যান বলেন, ভেনেজুয়েলা নিয়ে ট্রাম্প মাঝে গরম, মাঝে ঠান্ডা আচরণ করছেন।তার ভাষায়, এয়ারস্পেস বন্ধ ঘোষণাটি কার্যত বড় ধরনের তীব্র হুঁশিয়ারি। এটি বাস্তবে সামরিক আক্রমণে রূপ নেবে কি না, সেটাই এখন প্রশ্ন।

এরই মধ্যে মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) ভেনেজুয়েলার আকাশসীমায় নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি ও বর্ধিত সামরিক তৎপরতার কথা জানিয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছে। এরপর দক্ষিণ আমেরিকার বেশ কয়েকটি প্রধান এয়ারলাইন ভেনেজুয়েলায় ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়।

সূত্র: আল-জাজিরা

এমএসএম