ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়াহ’য় বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কায় ব্যাপক ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযানে তিনজন বাংলাদেশিসহ বহু নাগরিককে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। দেশটির বিভিন্ন বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করতে ভারতীয় নৌ ও বিমানবাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে এনডিআরএফ-এর বিশেষ আরবান সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ দল।
নয়াদিল্লি থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ভারত জানায়, শ্রীলঙ্কা বিমানবাহিনীর সঙ্গে যৌথ সমন্বয়ে আইএনএস বিক্রান্ত থেকে চেতক হেলিকপ্টার এবং ভারতীয় বিমানবাহিনীর এমআই-১৭ হেলিকপ্টারগুলো ব্যাপক উদ্ধার তৎপরতা চালায়। বন্যায় আটকে থাকা অন্তঃসত্ত্বা নারী, নবজাতক, শিশু ও গুরুতর আহতদের তুলে আনা হয়।
উদ্ধারপ্রাপ্তদের মধ্যে শ্রীলঙ্কা ও ভারতের পাশাপাশি জার্মানি, স্লোভেনিয়া, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা, পোল্যান্ড, বেলারুশ, ইরান, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান এবং তিনজন বাংলাদেশের নাগরিকও ছিলেন।
বিবৃতিতে সংখ্যা উল্লেখ না করা হলেও ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন জানায়, উদ্ধারকৃতদের মধ্যে তিনজন বাংলাদেশি।
এ পর্যন্ত যৌথ অভিযানে ১৫০ জনের বেশি মানুষ উদ্ধার হয়েছেন। অভিযান চলমান রয়েছে।
ভারত জানায়, বিপর্যয়ের মাত্রা স্পষ্ট হওয়ার পর ২৮ নভেম্বর ‘অপারেশন সাগরবন্ধু’ চালু করা হয়, যার লক্ষ্য ছিল শ্রীলঙ্কাকে জরুরি অনুসন্ধান, উদ্ধার ও মানবিক ত্রাণসহায়তা দেওয়া।
বিবৃতি অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে কলম্বো বন্দরে নোঙর করা ভারতীয় নৌবাহিনীর দুটি জাহাজ থেকে ৯ দশমিক ৫ টন জরুরি খাদ্যসামগ্রী হস্তান্তর করা হয়। পাশাপাশি ভারতীয় বিমানবাহিনীর তিনটি বিশেষ উড়োজাহাজে পাঠানো হয় ৩১ দশমিক ৫ টন ত্রাণ, যার মধ্যে ছিল টেন্ট, ত্রিপল, কম্বল, হাইজিন কিট, রেডি-টু-ইট খাবার, ওষুধ ও সার্জিক্যাল সরঞ্জাম।
এর সঙ্গে পাঠানো হয় দুটি ‘ভীষ্ম কিউব’, ৫ সদস্যের চিকিৎসক দল, এবং ৮০ সদস্যের এনডিআরএফ-এর আরবান সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ ইউনিট। এছাড়া আইএনএস সুকন্যার মাধ্যমে আরও ১২ টন ত্রাণ পৌঁছায়। সব মিলিয়ে ৫৩ টন সহায়তা শ্রীলঙ্কা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ভারত জানায়, ডিটওয়াহর কারণে শ্রীলঙ্কায় আটকে পড়া ভারতীয় নাগরিকদের বিশেষ বিমানবাহিনীর ফ্লাইট ও বাণিজ্যিক উড়োজাহাজে করে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি ভারতীয়কে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
জেপিআই/এএমএ