জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘গণভোটের মাধ্যমে ভোটের চরিত্র পাল্টাতে হবে।’
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ্ ময়দানে অনুষ্ঠিত আট দলের বিভাগীয় সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘অতীতে চোর-ডাকাতদের মতো ভোটের বাক্সগুলো চুরি-ডাকাতি হয়েছে। ২০১৪ সালে বিনাভোটে নির্বাচন হয়েছে। ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে হয়েছে। আর ২০২৪ এ কেউ ভোট দিতেও যায়নি, কেউ ভোটে দাঁড়াতেও (প্রতিদ্বন্দ্বিতা) চায়নি। সাংবাদিকরা রিপোর্ট করেছিল, ভোটকেন্দ্রে মানুষ নেই কুত্তা (কুকুর) কয়েকটা শুয়ে আছে। কুত্তা শুয়ে থাকার নির্বাচন আমরা আর বাংলাদেশে চলতে দিতে চাই না।’
জামায়াতের শীর্ষ এ নেতা বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো একমত হতে পারছে না বলে গণভোট হচ্ছে। এ গণভোট হওয়া জাতির জন্য ভালো লক্ষণ আর না হওয়াটা খারাপ লক্ষণ। যারা গণভোট হতে দিতে চায়, তারা জনগণের জন্য ভালো কিছু করতে চায়। আর যারা গণভোট হতে দিতে চায় না অথবা গণভোটের রেজাল্ট যাতে না আসে সেজন্য তারা নির্বাচনের দিকে গণভোট চায়। এখন গণভোট আগে হোক আর পরে হোক আমরা গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়যুক্ত হয়েছে, এটা প্রমাণ করব ইনশাআল্লাহ্। যারা গণভোট চায় না তাদের পরাজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।’
মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আরেকটা যুদ্ধ বাকি আছে। ইসলাম কায়েম করার যুদ্ধ। বদর, উহুদ, খন্দকে সাহাবায়ে কেরাম যেভাবে জীবন দিয়ে কোরআনের আইন চালু করেছেন। সেই সাহাবিদের অনুসরণে আপনাদের আমাদের যুদ্ধ করতে হবে। হাত উঁচিয়ে আল্লাহকে দেখান, বাংলাদেশের মাটিতে কোরআনের আইনের জন্য আমরা যুদ্ধ করব ইনশাআল্লাহ।’
তিনি বলেন, ‘মানুষের কল্যাণের জন্য আমাদের রাজনীতি করতে হবে। সমস্ত কাজের কেন্দ্রবিন্দু হবে মানুষের কল্যাণ করা। ব্যক্তি কল্যাণ, স্বার্থপরতা, চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ_এ সমস্ত খারাপ কাজ করলে আখিরাতে কোনো কল্যাণ পাওয়া যাবে না। ৫৪ বছর ধরে কয়েকটা সরকার এসেছে, কোনো সরকার মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করে নাই। হয় ব্যক্তির জন্য, না হয় দলের জন্য কল্যাণ করেছে। আর না হয় দুনিয়ায় কিছু মানুষের উপকার করার জন্য কাজ করেছে। তারা আখিরাতের কল্যাণের জন্য কাজ করেনি।’
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আল্লাহ্ তায়ালা ইসলামী রাষ্ট্র কায়েমের জন্য চারটি কাজের কথাও বলেছেন। নামাজ কায়েম করে মানুষের চরিত্রকে ভালো করে দিতে হবে। জাকাত চালু করে মানুষের ক্ষুধা-দরিদ্রতা দূর করে দিতে হবে। ভালো কাজ চালু করে মানুষের জীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। খারাপ কাজ বন্ধ করে মানুষকে অশান্তির হাত থেকে রক্ষা করতে হবে ‘
জামায়াতের এ নেতা বলেন, ‘আবু সাঈদের যুদ্ধের টার্গেট ছিল ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’-আমরা সুবিচার চাই। ইসলাম কায়েম ছাড়া দেশে সুবিচার নিশ্চিত হতে পারে না। জাস্টিস হতে হলে ইসলাম কায়েম করতে হবে, দ্বীন কায়েম করতে হবে। দুনিয়ার যত দেশ আছে, কোনো দেশে জাস্টিস নাই। বাংলাদেশে জাস্টিস তো হয়নি, জুলুম-অত্যাচার, নির্যাতন করা হয়েছে।’
সমাবেশ জামায়াতের নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সালাহউদ্দিন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল মাজেদ আতহারী, সাংগঠনিক সচিব হাফেজ মাওলানা আবু তাহের খান, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, সংগঠক মুফতি মাহমুদুল হাসান, জাগপার সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জিতু কবীর/আরএইচ/এমএস