ধর্ম

জানের বদলে জান সদকা করার ব্যাপারে ইসলাম কী বলে?

প্রশ্ন: জানের বদলে জান সদকা করা অর্থাৎ কারও সুস্থতা কামনায় মুরগি, ছাগল, গরু সদকা করার ব্যাপারে ইসলাম কী বলে?

উত্তর: সদকা করলে আল্লাহ তাআলা খুশি হন, বিপদ-আপদ দূর হয়। হাদিসে এসেছে, বিপদাপদ সদকাকে অতিক্রম করতে পারে না। আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা অতিসত্বর সদকার দিকে ধাবিত হও, কারণ বিপদ-আপদ সদকাকে অতিক্রম করতে পারে না। (শুআবুল ইমান: ৩০৮২) আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি বর্ণনায় এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, সদকা আল্লাহ তাআলার ক্রোধ প্রশমিত করে এবং খারাপ মৃত্যু থেকে রক্ষা করে। (সুুনানে তিরমিজি: ৬৬৪)

সুতরাং কারও সুস্থতা কামনায় মুরগি, ছাগল, গরুসহ যে কোনো রকম খাবার বা অর্থ দান করা যেতে পারে। যে কোনো রকম সদকার বিনিময়েই আল্লাহ তাআলা যদি চান অসুস্থতা দূর করে দেবেন বলে আশা করা যায়।

জানের বদলে জান অর্থাৎ মুরগি, গরু, ছাগল ইত্যাদি সদকা করার বিশেষ কোনো ফজিলত বা উপকারিতা কোরআনে বা কোনো হাদিসে বর্ণিত হয়নি। জানের বদলে জান সদকা করলে আল্লাহ তাআলা সুস্থতা দান করবেন বা হায়াত বৃদ্ধি করে দেবেন, এরকম প্রতিশ্রুতিও কোথাও নেই। তবে অন্য যে কোনো সদকার মতো সদকা হিসেবে এর বদলায় আল্লাহ তাআলা সুস্থতা দান করতে পারেন, বিপদ দূর করে দিতে পারেন।

পবিত্র কোরআনে সদকার ফজিলত

সদকা ইসলামে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল। পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে সদকার ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। সুরা বাকারায় আল্লাহ তাআলা তার সন্তুষ্টির জন্য সদকাকারীদের তার সন্তুষ্টি, সওয়াব ও জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, যারা আল্লাহর রাস্তায় তাদের সম্পদ ব্যয় করে, তারপর তারা যা ব্যয় করেছে, তার পেছনে খোঁটা দেয় না এবং কোনো কষ্টও দেয় না, তাদের জন্য তাদের রবের কাছে প্রতিদান রয়েছে এবং তাদের কোনো ভয় নেই, আর তারা চিন্তিতও হবে না। (সুরা বাকারা: ২৬২)

সুরা বাকারার আরেক আয়াতে মানুষের দান-সদকার প্রতিদান সাতশ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, যারা আল্লাহর পথে তাদের সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উপমা একটি বীজের মতো, যা উৎপন্ন করল সাতটি শীষ, প্রতিটি শীষে রয়েছে একশ দানা। আর আল্লাহ যাকে চান তার জন্য বাড়িয়ে দেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। (সুরা বাকারা: ২৬১)

কোরআনের কিছু আয়াতে মুমিনের বৈশিষ্ট্য হিসেবে নামাজের সাথে সদকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন সুরা আনফালের শুরুতে আল্লাহ তাআলা বলেন, সন্দেহ নেই, মুমিন তো তারাই, আল্লাহর নাম উচ্চারিত হলে যাদের অন্তর ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে, যখন তাদের নিকট তাঁর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয় তখন তা তাদের ইমানকে বাড়িয়ে দেয় এবং তারা তাদের রবের ওপর ভরসা করে; যারা যথারীতি নামাজ আদায় করে এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে তারা ব্যয় করে। এরাই হচ্ছে প্রকৃত মুমিন। তাদের জন্য তাদের প্রভুর নিকট রয়েছে সুউচ্চ মর্যাদা, ক্ষমা ও সম্মানজনক রিজিক। (সুরা আনফাল: ২-৪)

ওএফএফ