পাকিস্তানের আফগানিস্তান সীমান্তের কাছে রাস্তার পাশে পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে তিন পুলিশ সদস্য নিহত ও দুইজন আহত হয়েছেন। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) অস্থিতিশীল খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এ বিস্ফোরণ হয়েছে।
বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় এএসআই গুল আলম, কনস্টেবল রফিক এবং মোবাইল ভ্যানের চালক সাখি জান নিহত হয়েছেন।
এর আগে মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) বন্নু শহরে বন্দুকধারীদের হামলায় একজন স্থানীয় প্রশাসক ও দুই পুলিশ নিহত হয়। স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্য মতে, টিটিপি গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেছে।
দেরা ইসমাইল খান শহরের পুলিশ কর্মকর্তা আলি হামজা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ঘটনাটি ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) দিয়ে ঘটানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি।
এদিকে বোমা হামলার জন্য তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)কে দোষারোপ করেছেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি। দীর্ঘদিন ধরে প্রদেশটিতে হামলা চালিয়ে আসছে এই সংগঠনটি। ইসলামাবাদ অভিযোগ করে আসছে, ২০২১ সালে আফগান তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে টিটিপিকে নিরাপদ আশ্রয় দিচ্ছে কাবুল যা তালেবান কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করে।
সীমান্তে হামলা নিয়ে অক্টোবর মাসে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ চরমে পৌঁছায়। এ সংঘর্ষে দুই পক্ষের ১৫০ জনের বেশি নিহত হয়েছে। যদিও যুদ্ধবিরতি আপাতত কার্যকর আছে, সীমান্তে এখনো তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।
কাবুলের দাবি, পাকিস্তান তাদের পূর্বাঞ্চলে বিমান হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানও সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে একের পর এক বিচ্ছিন্ন হামলার শিকার হচ্ছে। ইসলামাবাদের আদালত প্রাঙ্গণে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১২ জন নিহত এবং পেশোয়ারে একটি প্যারামিলিটারি সদর দফতরে আক্রমণের জন্য টিটিপিকে দায়ী করা হয়েছে।
অক্টোবর মাসে দোহায় দুই দেশ যুদ্ধবিরতি চুক্তি করে। তবে নভেম্বর মাসে ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দফা আলোচনায় কোনো দীর্ঘমেয়াদি সমঝোতা হয়নি। পাকিস্তানের দাবি, আফগানিস্তানকে টিটিপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য মতে, সৌদি আরবে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের প্রতিনিধিরা আবারও শান্তি আলোচনা শুরু করেছে। উভয় পক্ষই বিদ্যমান যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে সম্মত হয়েছে এবং কাবুলের পক্ষ থেকে আরও বৈঠক করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
সূত্র : আল-জাজিরা
কেএম