যদিও খেলা মাঠে গড়ানোর এখনো বাকি আছে দুই সপ্তাহেরও বেশি। তারপরও কাউন্ট-ডাউন চলছে। সবাই প্রহর গুনছেন। আর পাশাপাশি হিসেব কষছেন নিলাম শেষে কেমন দাঁড়ালো দলগুলোর অবস্থা?
স্থানীয় ও বিদেশী ক্রিকেটারদের সরাসরি সই করা ও নিলামে ক্রিকেটার দলে টানার পর কোন দলের শক্তি কী দাঁড়ালো? এসব প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে ক্রিকেট অনুরাগীদের মনে।
রংপুর রাইডার্সের প্রধান সহকারী প্রশিক্ষক মোহাম্মদ আশরাফুল মনে করেন, তার দল রংপুর রাইডার্স কাগজে-কলমে এক নম্বর দল। আশরাফুলের চোখে, শক্তিতে রংপুরের খুব কাছেই আছে রাজশাহী ওয়ারিয়র্স ও সিলেট টাইটান্স। তারপর পরই নোয়াখালী।
এদিকে রাজশাহীর হেড কোচ হান্নান সরকার মনে করেন, কাগজে-কলমে তার দল রাজশাহী ও রংপুর রাইডার্স বাকিদের চেয়ে এগিয়ে। জাগোনিউজের সাথে নিজের দল নিয়ে একান্তে কথা বলতে গিয়ে রাজশাহী হেড কোচের মূল্যায়ন, ‘টিম কম্বিনেশন ও ব্যালান্সের জায়গা থেকে সেভাবে বিশ্লেষণ করার সুযোগ পাইনি এখনো।’
কেন? হান্নানের জবাব, ‘আপনি জানেন যে আমি বাংলাদেশ অনূর্ধ-১৭ দলের হেড কোচ। শ্রীলঙ্কার সাথে খেলা চলছে। নিলামের পরদিনই বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কার অনূর্ধ-১৭ দলের খেলা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়তে হয়েছে। তাই ক্রিকেটার তুলনা করে আর পজিশন ধরে ধরে অত চুলচেরা বিশ্লেষণের সুযোগ পাইনি। তবে ওভারঅল রাজশাহী আর রংপুর বাকিদের চেয়ে এগিয়ে। বাকিরা শক্তিতে পিছিয়ে। তবে সব দলের সামনেই ঘাটতি পোষানোর পাশাপাশি দলগত শক্তি বাড়ানোর সুযোগ আছে।’
সেটা কিভাবে? হান্নানের ব্যাখ্যা, ‘বিদেশী ক্রিকেটার দিয়ে। স্টিল লং ওয়ে টু গো। ভিনদেশি ক্রিকেটারের সংযোজন ঘটলে বোঝা যাবে আসলে কোন দলের শক্তি কতটা। তবে এখনকার অবস্থায় রাজশাহী ও রংপুর এগিয়ে।’
কেমন হলো রাজশাহী স্কোয়াড? হান্নানের কথা, ‘আমাদের জায়গা থেকে বেস্ট ট্রাই করেছি। আমরা কোয়াইট হ্যাপি। যেভাবে চিন্তা করেছি অ্যাভেইলেবলদের মধ্যে ৯০ ভাগ ক্রিকেটারকে নিতে পেরেছি। এরচেয়ে বেশি রিচ করা ছিল ভেরি চ্যালেঞ্জিং। বাকিটা সময়ের সঙ্গে নেয়ার চেষ্টা থাকবে। সো ফার হ্যাপি।’
এমন কেউ কি মিস হয়েছে, যাকে চেয়েও পাননি? রাজশাহী কোচের উত্তর, ‘দেখেন নিলামে তো আপনি আপনার পছন্দের সবাইকে একসঙ্গে পাবেন না। ১০০ ভাগ মিট করা সম্ভব না। তবে আমরা ৯০ ভাগ অ্যাচিভ করেছি। দু’একজন মিস হয়েছে। আমি কারো নাম বলবো না। বাট অন্য দলগুলোওতো তাদের নিতে চেয়েছে। সেদিক থেকে হিসেব কষে বললে এক থেকে দুটি প্লেয়ার হয়ত মিস হয়েছে আমাদের। তারপরও আমরা যাদের মিস করেছি, অন্যদিক থেকে তাদের বিকল্প নেয়ার চেষ্টা করেছি। আমরা রিকভার করতে পেরেছি। উই আর লাকি ফর দ্যাট।’
হান্নান মনে করেন, টিম কম্বিনেশনে ফরেন ক্রিকেটাররা একটা ভাইটাল পার্ট। সরাসরি সাইন করা দু’জন (সাহিবজাদা ফারহান ও মোহাম্মদ নাওয়াজ) ছাড়া রাজশাহীর বাকি ফরেন রিক্রুট কারা? নাম বলতে নারাজ হান্নান। ‘নাম এখনই বলছি না। আরও কিছু নাম ও অপশন আসতেই পারে।’
তার চোখে, ‘রাজশাহী এরই মধ্যে বেশ ভারসাম্যপূর্ণ। নির্দিষ্ট কোনো জায়গায় তেমন ঘাটতি নেই। পেস বোলিংয়ে আমাদের অপশন আছে ভাল। স্পিন বোলিংয়েও আমাদের বিকল্প আছে। আমরা ব্যালেন্স করার চেষ্টা করেছি। তবে আসলটা বোঝা যাবে আমরা যখন ম্যাচ খেলবো তখন।’
মুশফিকুর রহিমকে দলে পেয়ে দারুন খুশি রাজশাহী হেড কোচ, ‘এমন সিনিয়র প্লেয়ার যে কোন দলের জন্য সম্পদ। আবার মুশফিক কিন্তু পরপর দুই বিপিএলের চাম্পিয়ন টিমেরও প্লেয়ার। এমন প্লেয়ার দলে আসাটা সবার জন্যই খুশির। আনন্দের। সন্তুষ্টির। এটা একটা বাড়তি অ্যাডভান্টেজ। মুশফিক আসায় ব্যালেন্সের জায়গাটা আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। শক্তিও বেড়েছে। আমি অবশ্যই লাকি, অকশনে বিশেষ পরিস্থিতিতে আমরা লাকিলি মুশফিককে পেয়ে গেছি। তার সাথে কথা বলে মনে হয়েছে মুশফিকও পজিটিভ। ওভারঅল মুশফিকের অন্তর্ভুক্তি আমাদের দলকে করেছে সমৃদ্ধ। শক্তিও বেড়েছে অনেকটা।’
এআরবি/আইএইচএস