শিক্ষা ক্যাডারে অবশেষে পদোন্নতি জট খুলেছে। একদিনে দুই হাজার ৭০৬ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ৯৯৫ জন। আর সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন এক হাজার ৭১১ জন।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জারি করা পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপন থেকে এ পদোন্নতির তথ্য পাওয়া গেছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপন দুটিতে সই করেছেন যথাক্রমে উপসচিব মো. আব্দুল কুদদূস ও উপসচিব (সরকারি কলেজ-২) তানিয়া ফেরদৌস।
সহযোগী অধ্যাপক হওয়া কর্মকর্তাদের জন্য বিবেচ্যসহকারী থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে দেওয়া পদোন্নতির প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিসিএসে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সহকারী অধ্যাপক পর্যায়ের ১ হাজার ৭১১ জন কর্মকর্তাকে জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ অনুযায়ী পঞ্চম গ্রেড (৪৩০০০-৬৯৮৫০ টাকা) বেতনক্রমে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হলো।
সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাওয়াদের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে যোগদান করে পূর্ববর্তী পদে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে।
তাদের বিমুক্তি ও যোগদান প্রক্রিয়া অনলাইনে সম্পন্ন করতে হবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাওয়াদের ক্ষেত্রে যত শর্তঅন্যদিকে, সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সহযোগী অধ্যাপক পর্যায়ের ৯৯৫ জন কর্মকর্তাকে ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেল (৫০০০০-৭১২০০ টাকা) বেতনক্রমে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হলো।
অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে কেউ লিয়েনে বা শিক্ষাছুটিতে থাকলে তার লিয়েন বা ছুটি শেষে যোগদান সাপেক্ষে পদোন্নতি আদেশ জারি করা হবে।
পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা মাউশির বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করে বর্তমান কর্মস্থলে ইনসিটু হিসেবে পদায়িত বলে গণ্য হবেন এবং পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই কর্মস্থল থেকে বেতন-ভাতা গ্রহণ করবেন।
পদোন্নতি পাওয়াদের মধ্যে পরবর্তীতে কারও পদোন্নতি বারিত করার মতো কোনো বিষয় উত্থাপিত হলে তার পদোন্নতি বিষয়ক আদেশ বাতিল করা হবে। জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
তবে এ আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো কর্মকর্তা নিজ প্রতিষ্ঠানের উচ্চতর পদে বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে পদায়নের জন্য স্বতঃসিদ্ধভাবে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বলে বিবেচিত হবেন না।
গত ৮ ডিসেম্বর ‘শিক্ষকদের পদোন্নতি দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনীহা, বাড়ছে ক্ষোভ’ শিরোনামে জাগো নিউজকে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনা, একই সঙ্গে যোগ দিলেও অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের এগিয়ে যাওয়াসহ নানা বিষয় তুলে ধরা হয়।
এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে পদোন্নতির তালিকা পাঠানো হলেও মন্ত্রণালয় তা কারণ ছাড়াই ঝুলিয়ে রাখে বলে শিক্ষকদের অভিযোগের বিষয় তুলে ধরা হয়। এরপর ৯ ও ১০ ডিসেম্বর শিক্ষকদের পদোন্নতি সংক্রান্ত একাধিক সভা হয়। তাতে ঝুলে থাকা সব পদোন্নতির তালিকায় অনুমোদন দেয় মন্ত্রণালয়।
এএএইচ/এমএএইচ/