বিনোদন

শুভ জন্মদিন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়

বাংলা চলচ্চিত্রে চিরতরুণ নায়ক সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ৮০ বছর পূর্ণ করে ৮১’তে পা রেখেছেন আজ। ৫৫ বছরের ক্যারিয়ারে তিন শতাধিক ছবিতে অভিনয় করার পরও তিনি মনে করেন, ইন্ডাস্ট্রি থেকে যতই পাই না কেন আমি কখনও আমার জায়গা আঁকড়ে বসে থাকি না। ওটা করে আমি মোটেই পরিতৃপ্ত নই। অভিনেতা হিসেবে আমার একটা দায়িত্ব থেকেই যায়। আমাকে কাজ করে যেতেই হবে। থেমে থাকলে চলবে না। ভাবনা থামিয়ে দিলে চলবে না। কাজ নিয়ে নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যেতে হবে। সেই কাজটিই তিনি করে চলেছেন এই বয়সে এসেও। সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেনদের সঙ্গে যেমন তিনি কাজ করেছেন তেমনি কাজ করেছেন বর্তমান সময়ের প্রায় সব পরিচালকের সঙ্গে। এক কথায় তিন প্রজন্মের সঙ্গে তিনি সমানতালে কাজ করে চলেছেন। তবে তিনি জানিয়েছেন, মাত্র একবারই এক পরিচালক আমার কাজের প্রশংসা করেননি। খুব খারাপ লেগেছিল আমার। সেই ছবিটার কথা আজও ভুলতে পারিনি। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় একই সঙ্গে অভিনেতা, নট ও  নাট্যকার, বাচিক শিল্পী এবং কবি। তার চিত্রশিল্পী পরিচয়ও সবাইকে মুগ্ধ করেছে। একসময় ‘এক্ষণ’ নামের একটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনার কাজেও গভীরভাবে যুক্ত ছিলেন। ১৯৫৮-তে ‘অপুর সংসার’ ছবিতে তিনি প্রথম অভিনয় করেন। এরপর সত্যজিতের ১৪টি ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন। ‘দেবী’, ‘তিনকন্যা’, ‘অভিযান’, ‘চারুলতা’, ‘অশনি সংকেত’ থেকে শাখা প্রশাখা। তপন সিনহার ‘ক্ষুধিত পাষাণ’, ‘ঝিন্দের বন্দী’,  অসিত সেনের ‘স্বয়ংম্ভরা’, পাশাপাশি মৃণাল সেনের ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’, ‘আকাশকুসুম’, ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘অসুখ’ ছবিতে নানা ধরনের চরিত্রে সৌমিত্র অনায়াস বিচরণ করেছেন। ১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি কবি ও নাট্যকার  দ্বীজেন্দ্রলাল রায়ের শহর নদীয়ার কৃষ্ণনগরে তার জন্ম। নাট্যচর্চার এই তীর্থক্ষেত্রেই গড়ে উঠেছিল তার নাটক করার মানসিকতা। ছাত্রজীবনেই নাটকে অভিনয় শুরু। কলেজ জীবনে অহীন্দ্র চৌধুরী ও পরবর্তী সময়ে নাট্যাচার্য  শিশির কুমার ভাদুড়ির সান্নিধ্যে এসে অভিনয়কে পেশা হিসেবে নেয়ার ব্যাপারে সৌমিত্র মনস্থির করে নিয়েছিলেন। তবে প্রথমে আকাশবাণীতে কিছুদিনের জন্য ঘোষক হিসেবে কাজ করেছিলেন এই বাংলা চলচ্চিত্রে চিরতরুণ নায়ক।