শেখ হাসিনা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা। জননেত্রী, দেশরত্ন, ভাষাকন্যা ইত্যাদি নানা বিশেষণে তাঁকে ভূষিত করা হয়। পুরোনো দিনের মানুষরা একান্ত নিজের মতো করে বলেন, ‘শেখের বেটি’। শেখ হাসিনার কাছে কাজটাই বড় । দেশের সকল জনের কাজ, জাতিবর্ণনির্বিশেষে কাজ। বিশ্বের জ্ঞানী গুণী উচ্চশ্রেণি নয় , মূঢ়, মূক জনগণও নিশ্চিতই বলতে পারে- শেখ হাসিনা আমাদের, শেখ হাসিনার কাজ আমাদের কাজ। শেখ হাসিনার বাংলাদেশের দিকে উন্নত দেশের নেতারা অবাক হয়ে বলেন, আপনিতো উন্নয়নের বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছেন। শেখ হাসিনাচিন্তায় একটা জীবন্ত রুপ আছে। যে মৌল প্রত্যয়গুলো নিয়ে তিনি যাত্রা শুরু করেছিলেন তা কোনোদিনই পরিবর্তিত হয়নি। কয়েকটি মূলসূত্রে এই প্রত্যয়গুলো বিধৃত। সূত্রগুলো এই- মানবতায় বিশ্বাস, শান্তি, প্রীতি, ঐক্য ও সংহতিতে সমাজ- আদর্শের সন্ধান, সর্ববিধ নিপীড়ন, সংকীর্ণতর বিরোধিতা এবং যে পথ সহজ সরল, যে পথ কেন্দ্র থেকে বহুমুখি সে পথকে একমাত্র পথ হিসেবে গণ্য করা । একমাত্র এবং একমাত্র শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ আজ বিশ্ব সভায় স্বমহিমায় উদ্ভাসিত। ১৯৯৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় তৎকালীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব ল’ ডিগ্রি’তে ভূষিত করে। এই উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট জন্ ওয়েসলিং নিন্মে প্রদত্ত প্রমাণপত্র ‘সাইটেশান’ পাঠ করেন- ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ। আপনার পিতা বাংলাদেশের জন্য নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। আর আপনিও বার বার নিজের স্বাধীনতা বিসর্জন দিয়ে এবং নিজের জীবনকে বিপন্ন করে দেশে গণতন্ত্রের পুনর্জন্ম ঘটিয়েছেন।‘সরল অথচ তীক্ষ্ণ বাগ্মিতা দিয়ে আপনি দেশের জনগণের জন্য আপনার সংগ্রামের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেছেন। তা হলো ‘ভাত ও ভোটের অধিকার’। প্রায়ই দেখা যায়, তৃতীয় বিশ্বের জনগণকে ভোটের বিনিময়ে ভাতের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা কিছুই পায় না। অথচ, আপনার সাহসী নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণ ভাত ও ভোট দুটোর নিশ্চয়তাই পাবে।‘বাংলাদেশের জনগণের এবটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো তাদের সাহস, আর এই সাহস কেবল তাদের ধৈর্যের পরিচায়কই নয়, এর দ্বারা নিজেদের সমৃদ্ধিও বয়ে এনেছে তারা।‘যে বছর আপনি জন্মগ্রহণ করেন, সে-বছর জনগণ বৃটিশ শাসন থেকে মুক্ত হলেও পাকিস্তানের নাগপাশ থেকে মুক্ত হতে পারেনি। আর সেই কারণে আপনার পিতা সিকি শতাব্দী ধরে বাংলার স্বায়ত্বশাসনের জন্য আন্দোলন করেন। কিন্তু তাঁকে ও তাঁর জনগণকে একসঙ্গে স্বাধীনতার ফল ভোগ করার সুযোগ বেশি দিন দেওয়া হয়নি। যে সব অফিসার আপনার পিতা, মাতা ও তিন ভাইকে হত্যা করেছে, তারা ভেবেছিল, বাংলার মানুষের প্রতি আপনার পরিবারের সেবা-ভালবাসার সুযোগ তারা খতম করে দিয়েছে এবং দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আশা সুদূরপরাহত করতে পেরেছে। কিন্তু আপনাকে তারা গণনায় আনতে ব্যর্থ হয়েছিল।‘আপনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পরবর্তী বছরগুলোতে বাংলাদেশ অস্থিতিশীল ধারায় প্রকাশ্য ও গোপন সামরিক শাসকদের দ্বারা শাসিত হয়েছে। আর এই অস্থির প্রেক্ষাপটের বিপরীত ধারায় ছিল দুটো জিনিস। প্রথমত, বাংলার জনগণ এবং দ্বিতীয়ত, শেখ হাসিনা। সে সময় সেই গণতন্ত্রের কথা কেউ ভুলে যায়নি, যার প্রেক্ষিতেই জন্ম হয়েছে বাংলাদেশের। আপনার সত্য কথা বলার অবিচল দৃঢ়তা আপনাকে অপশাসকদের কাছে বিপজ্জনক করে তুলেছিল। তারা আপনাকে আপনার পিতার বাসভবনে বন্দি করে রাখলেও আপনার উদ্যমকে, আপনারা চেতনাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। বিশাল দূর্গের মতো পৈত্রিক বাড়ি ও তার উত্তরাধিকারের মধ্যে আটকে থাকলেও আপনার বসবাস ছিল সেই মুক্তির মধ্যে, যে মুক্তি হলো সাহসিকতার মুক্তি। আর আপনার পিতার একটি স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখার সিকি শতাব্দী পর আজ আপনি সেখানে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন।‘হাসিনা বিন্তে মুজিব একজন মহান পিতার সুযোগ্য কন্যা, একটি যোগ্য জনগোষ্ঠির মহান সেবক। বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় গর্বের সঙ্গে আপনাকে ডক্টর অব ল’ ডিগ্রি প্রদান করছে।’ (দৈনিক ভোরের কাগজ, ঢাকা : ৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭)রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ৬৮তম জন্মদিনে লিখেছিলেন , ‘বহু জন্মদিনে গাঁথা আমার জীবনে/দেখিলাম আপনারে বিচিত্র রুপের সমাবেশ।’ ২০১৫ সালেই ইউনিসেফের মহাসচিব ইরিনা বোকাভা শেখ হাসিনার হাতে ‘পিস ট্রি’ পদক তুলে দিয়েছিলেন । তারচেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ইউনিসেফের মহাসচিবের বক্তব্যের সারার্থ । ‘এই সাহসী নারী আলোকবর্তিকা হিসেবে সারা পৃথিবীতে পথ দেখাচ্ছেন।’ সত্যিইতো শেখ হাসিনার জীবন কর্মবহুল ও বৈচিত্র্যে ভরপুর। এখন এটা শুধু একটি নামই নয়, এটা একটি প্রতিষ্ঠান। কবি নির্মলেন্দু গুণ শেখ হাসিনার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সহপাঠি ছিলেন। ১৯৮৮ সালে কবি নির্মলেন্দু গুণকে লেখা শেখ হাসিনার অসাধারণ চিঠি’র কথা সামাজিক গণমাধ্যমের কারণে অনেকেরই নজরে এসেছে। ছোট্ট চিঠিটার হুবহু পাঠকদের জন্যে উৎকলন করছি । বন্ধুবরেষু গুণ,/আপনার অনুরোধে কিছু ছবি পাঠালাম। তবে আমার একটা অনুরোধ রাখবেন। ‘ত্রাণ বিতরণ করছি’ এ ধরনের কোনো ছবি ছাপাবেন না। মানুষের দুর্দশার ছবি যত পারেন ছাপান। আমার ধারণা এ ধরনের অর্থাৎ ত্রাণ বিতরণের ছবি টেলিভিশন ও খবরের কাগজে দেখে দেখে মানুষ বীতশ্রদ্ধ হয়ে গেছে। ওরা গরিব, কিন্তু সেটা কি ওদের অপরাধ? একশ্রেণি যদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ আহরণ না করত তাহলে এরা কি গরিব হতো? কার ধন কাকে বিলাচ্ছে? যা কিছু আছে সকলে মিলে ভাগ করে ভোগ করলে একের কাছে অপরের হাত পাতার প্রয়োজন হতো না। ওদেরই সম্পদ লুট করে সম্পদশালী হয়ে আবার ওদেরই দুর্দশার সুযোগ নিয়ে সাহায্য দানের নামে হাতে তুলে দিয়ে ছবি ছাপিয়ে ব্যক্তিগত ইমেজ অথবা প্রতিষ্ঠা লাভের প্রয়াস আমি মানসিকভাবে কিছুতেই মেনে নিতে পারি না। আমার বিবেকে বাধে। তবুও অনেক সময় পারিপার্শ্বিক চাপে পড়ে অনেক কিছুই করতে হয়। আমিও করি। বিবেকের টুঁটি চেপে ধরে অনেক সময় সমাজ রক্ষার তাগিদে, সাথীদের অনুরোধ বা অপরের মান রক্ষার জন্য এ ধরনের কাজ বা ছবি তুলতে হয় বৈকি। তবে যে যাই দান করুক না কেন, বিলি করুক না কেন, এটা তো ওই গরিব মানুষগুলোর অধিকার, তাদেরই প্রাপ্য। ক্ষমতার দাপটে কেড়ে নেওয়া ওদেরই সম্পদ অথবা ওদের পেটের ক্ষুধা দেখিয়ে দেশ-বিদেশ থেকে ভিক্ষে এনে এদের দান করা। এখানে ‘ক্রেডিট’ নেওয়ার সুযোগ কোথায়? এই ‘ক্রেডিট’ নিতে যাওয়াটা কি দুর্বলতা নয়? আত্মপ্রবঞ্চনা নয়? কতকাল আর বিবেককে ফাঁকি দেবে? এই গরিব মানুষগুলোর মুখের গ্রাস কেড়ে খেয়ে আবার এদেরই হাতে ভিক্ষে তুলে দিয়ে ছবি ছাপিয়ে ইমেজ তৈরির পদ্ধতি আমি পছন্দ করি না। আমি মনে করি যা দান করব তা নীরবে করব, গোপনে করব। কারণ এটা লজ্জার ব্যাপার, গর্ব করার ব্যাপার মোটেই নয়। গর্ব করার মতো কাজ হতো যদি এই সমাজটাকে ভেঙে নতুন সমাজ গড়া যেত। গর্ব করার মতো হতো যদি একখানা কাঙালের হাতও সাহায্যের জন্য বাড়িয়ে না দিত। ফুটপাথে কঙ্কালসার দেহ নিয়ে ভিক্ষের হাত না বাড়াতে সেটাই গর্ব করার মতো হতো। যে স্বপ্ন আমার বাবা দেখেছিলেন, সে দিন কবে আসবে? আমার অনুরোধ আপনার কাছে, সেই ছবি ছাপাবেন না যে ছবি হাত বাড়িয়েছে সাহায্য চেয়ে, আর সেই হাতে কিছু তুলে দিচ্ছি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে। অনেকেই তুলে থাকেন। আমার বড় অপরাধী মনে হয় নিজেকে। লজ্জা হয় গরিব মানুষদের কাছে মুখ দেখাতে। আমরা সমাজে বাস করি। দুবেলা পেট পুরে খেতে পারি।ভালোভাবে বাঁচতে পারি। কিন্তু ওরা কি পাচ্ছে? ওদের নিয়ে এ ধরনের উপহাস করা কেন? ওরা বরদাশত করবে না একদিন জেগে উঠবেই সেদিন কেউ রেহাই পাবে না।আমার অনুরোধ আশা করি রাখবেন।শুভেচ্ছান্তে শেখ হাসিনা৯.১০.৮৮শেখ হাসিনাকে অনেকে বলে থাকেন ‘ভীষণ একগুয়ে ’ স্বভাবের । তা ঠিক । দৃঢ়তা ও জেদ তাঁকে মহান করেছে । ১৯৮০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর বৃটেনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের তদন্তের জন্যে বৃটিশ সংসদীয় কমিটি গঠন করা হয়েছিল । স্যার টমাস্ উইলিয়ামস্ কিউসি ( এমপি ) , শ্যেন ম্যাকব্রাইড, জেফরি থমাস্ , কিউসি প্রমুখ ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল । শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কারণে এই আর্ন্তজাতিক কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়েছিল। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হওয়ার আগেই নিরবছিন্নভাবে কাজ করে গেছেন। জানি না, কোন এক অজানা কারণে অনেক কিছু অনেক কিছুর সাথে মিলে যায়। কোনো এক জন্মদিনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন, ‘ সত্তা আমার, জানি না সে কোথা থেকে/ হল উত্থিত নিত্যধাবিত স্রোতে ’। আজ নির্দ্বিধায় বলা যায় শেখ হাসিনা একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক, রাজনীতিবিদ, সংগঠক ও সৃজনশীল লেখক। বিশ্বে সকল নামীদামি আন্তর্জাতিক সংস্থা আজ স্বীকৃতি দিচ্ছে। এক বিশিষ্ট জন একবার শেখ হাসিনার জন্মদিনের লেখায় বলেছিলেন শেখ হাসিনা বোধহয় খুব ভাল করে আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের চিলেকোঠার সিপাই এবং খোয়াবনামা উপন্যাস পড়েছেন, খুব ভাল করে শওকত ওসমানের বনী আদম এবং জননী উপন্যাস পড়েছেন, এবং পড়েছেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুর্ভিক্ষ বিষয়ক গল্প। পড়তে পড়তে ভেবেছেন মানুষ, গ্রামবাংলার হতদরিদ্র মানুষ কিভাবে ভাতের জন্যে লড়াই করে, সুযোগ পেলেই ভাতের লড়াইকে ভোটের লড়াইয়ের দিকে নিয়ে আসে। তারা লড়াকু মানুষ, অজেয় মানুষ, অমর মানুষ, এই মানুষজনের কাছে শেখ হাসিনার দায়ভাগ আছে। এই দায়ভাগই শেখ হাসিনার রাজনীতি কিংবা তাঁর নিয়তি। তাঁর সাফল্যের পেছনে রয়েছে তাঁর মহান পিতার জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামমুখর জীবনের অমলিন শিক্ষা, দেশ ও জনগণের প্রতি গভীর অনুরাগ, সুদৃঢ় রাজনৈতিক অঙ্গীকার, প্রবল ইচ্ছাশক্তি, অক্লান্ত পরিশ্রম, অধ্যবসায় এবং অসাধারণ আত্মবিশ্বাস। শেখ হাসিনা দৃঢ়তার সাথে বিশ্বাস করেন মূল্যবোধ সাময়িকভাবে বর্জন করে বা মূল্যবোধের নীতি থেকে সরে এসে মূল্যবোধ অর্জন করা যায় না। শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে ১৭ মে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। কুর্মিটোলা বিমান বন্দরে সেদিন জনসমুদ্রে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, “সবকিছু হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে ফিরে এসেছি। বাংলার মানুষের পাশে থেকে মুক্তি সংগ্রামে অংশ নেয়ার জন্য আমি এসেছি। আমি আওয়ামী লীগের নেত্রী হওয়ার জন্য আসিনি। আপনাদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে আমি আপনাদের সাথে থাকতে চাই।” ১৯৯৭ সালের ৪ জুলাই জাপানের বিখ্যাত ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয় শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ডক্টর অব লজ ডিগ্রি প্রদান করে। ডিগ্রি প্রদান অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, “আমি এমন একটি দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি, যে দেশের জন্য আমার পিতা, আমাদের মহান নেতা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান অশ্রুপাত করেছেন, ঘাম ঝরিয়েছেন ও বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছেন। ব্যক্তিগত সকল কিছু জলাঞ্জলি দিয়ে আমি এখন আমার দেশের কোটি কোটি মানুষের সাথে একই কণ্ঠে উচ্চারণ করি-আমাদের কাছে গণতন্ত্রের চেয়ে বড় কোনো আদর্শ নেই। গণতন্ত্রের জন্য স্বাধীনতার চেয়ে বড় কোনো ভিত্তি নেই এবং আইনের শাসন ছাড়া স্বাধীনতার জন্য বড় কোনো গ্যারান্টি নেই।’শেখ হাসিনা ভণিতা করেন না। যা কিছু বলেন সোজা সাপটা বলেন। যে কারণে তাঁর বন্ধু ভাগ্য ঈর্ষাযোগ্য শত্রুভাগ্য শোচনীয়। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন , “দেশে জন্মালেই দেশ আপন হয় না। যতক্ষণ দেশকে না জানি ... ততক্ষণ সে দেশ আপনার নয় ।” শেখ হাসিনারও বিশ্বাস দেশকে ভালবাসবার প্রথম লক্ষণ ও প্রথম কর্তব্য দেশকে জানা । ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার দরিদ্র রিকশা-ভ্যানচালক হাসমত আলী। আওয়ামী লীগের একজন অন্ধভক্ত। আওয়ামী লীগের মিছিল-মিটিংয়ের কথা শুনলেই ছুটে যেতেন। নৌকা আর বঙ্গবন্ধু নিয়েই মেতে থাকতেন সারা দিন। হাড়ভাঙা পরিশ্রমের আয় দিয়ে কোনোমতে সংসার চালান আর অল্প অল্প করে টাকা জমান। একদিন সেই টাকা দিয়ে নিজের স্ত্রীর নামে নয়, সন্তানের নামে নয়; দরিদ্র হাসমত একখণ্ড জমি কেনেন শেখ হাসিনার নামে। তিনি বলতেন, ‘শেখ হাসিনা আমার মেয়ে। মেয়েটা এখন এতিম। তাই ওর নামে এই জমি কিনে রেখে গেলাম।’ রমিজা খাতুন বলেন, তাঁর স্বামী নিজের ছেলেকে যতটা না ভালোবাসতেন, তার চেয়ে বেশি ভালোবাসতেন শেখ হাসিনাকে। শেখ হাসিনাকে মেয়ে সম্বোধন করে প্রায়ই বলতেন, বঙ্গবন্ধুকে রাজাকাররা পরিকল্পিতভাবে সপরিবারে হত্যা করেছে। এখন তাঁর মেয়ে শেখ হাসিনাকেও হত্যার ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি প্রতিদিন নামাজ পড়ে শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করতেন আর বলতেন, ‘শেখ হাসিনা আমার মেয়ে। এই মেয়েটার জন্য কিছু একটা করা দরকার।’ ‘হাসমত আলীর মতো আওয়ামী লীগের সমর্থক যত দিন বাংলাদেশের মাটিতে থাকবে, তত দিন আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে না। সারা দেশের এমন হাসমত আলীদের দোয়া আর ভালোবাসার কারণেই আমি সন্ত্রাসীদের গ্রেনেড হামলা থেকে বেঁচে গেছি।’ - শেখ হাসিনাশেখ হাসিনার ৭০তম জন্মদিনে তাই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৬৮তম জন্মদিনে তাঁর নিজের লেখা অংশটুকু অনেকখানি প্রাসঙ্গিক হবে ।‘বহু জন্মদিনে গাঁথা আমার জীবনেদেখিলাম আপনারে বিচিত্র রুপের সমাবেশে ’। জয় জয় শেখ হাসিনার জয় লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষকsuvassingho@gmail.comএইচআর/পিআর