দেশজুড়ে

নড়াইলে তৎপর আ.লীগের ২১ প্রার্থী

আসন্ন নড়াইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের ২১ নেতা দলীয় মনোনয়ন পেতে তৎপরতা চালাচ্ছেন। এদের মধ্য থেকে কেন্দ্রীয় আশির্বাদ পুষ্ট যে কেউ দলীয় মনোনয়ন পেতে পারেন। আবার মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে একাধিক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। এছাড়া সদস্য পদের জন্যও আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা চেষ্টা-তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। যেহেতু বিএনপি জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না তাই বিএনপিসহ অন্যান্য দলে নির্বাচন নিয়ে কোনো তৎপরতাও নেই।আগামী ২৮ ডিসেম্বর নড়াইলসহ সারাদেশে জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ১ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা পরিষদের আইন অনুযায়ী ২১ সদস্যবিশিষ্ট জেলা পরিষদে উপমন্ত্রীর মর্যাদায় একজন  চেয়ারম্যান, ১৫ জন সাধারণ সদস্য ও পাঁচজন সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য নির্বাচিত হবেন। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সাধারণ মেম্বার ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা মেম্বাররা এ নির্বাচনের ভোটার হবেন। জেলার ৩৯টি ইউনিয়ন, তিনটি পৌরসভা এবং তিনটি উপজেলায় সর্বমোট ভোটার রয়েছেন ৫৫৫ জন। এ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক দেওয়া না হলেও দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য ইতোমধ্যে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। বসে নেই ওয়ার্ড এবং সংরক্ষিত সদস্যরাও। ইতোমধ্যে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের ২১ জন এবং ১৫টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে শতাধিক প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন কিনেছেন। প্রার্থীরা মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপও শুরু করছেন। নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জেলা পরিষদের ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মনোনয়ন যাচাই-বাছাই করে স্ব-স্ব ওয়ার্ডের একজন সদস্যের নাম প্রস্তাব করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। আরও জানা গেছে, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ সকল সদস্য প্রার্থীদের চূড়ান্ত নামের তালিকা অনুমোদন দেবেন। চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়নের আশায় ক্ষমতাসীন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ ও লবিং গ্রুপিং চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ দীর্ঘ সময় ঢাকায় অবস্থান করে নিজের মনোনয়ন পাওয়ার প্রত্যাশায় কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন। অপরদিকে, নির্বাচনী আচরণবিধির তোয়াক্কা না করেই অনেকে থানা, উপজেলা ও জেলা শহরে বিলবোর্ড টাঙিয়ে কিংবা পত্রিকায় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি ১৫টি ওয়ার্ডে সদস্যপদে নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ নেতাকর্মীরা বেশ তৎপর হয়ে উঠেছেন। তারা নিজেদের প্রার্থীতার বিষয়টি বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে জানান দিচ্ছেন। এমনকি দলের নেতা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে দোয়া ও সহযোগিতা চাচ্ছেন।জানা যায়, ২০১১ সালের ২০ ডিসেম্বর থেকে জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি অ্যাড. সুবাস চন্দ্র বোসকে জেলা পরিষদ প্রশাসক হিসেবে বর্তমান সরকার নিয়োগ দেয়। এরপর থেকে সুবাস চন্দ্র বোস ৫ বছর যাবত দায়িত্ব পালন করছেন। তাকেই আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে নাকি পরিবর্তন হচ্ছে, তা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। বিএনপি এ নির্বাচনে না থাকার ঘোষণা দেয়ায় ধারণা করা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মধ্যেই জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাড. সুভাষ চন্দ্র বোস বলেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন যাকেই দেয়া হোক না কেনো, আমরা তার সঙ্গে সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করবো এবং প্রার্থীকে বিজয়ী করার ব্যাপারে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবো। আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনো গ্রুপিং নেই, নড়াইলের আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু বলেন, দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। মনোনয়ন পেলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো। অন্যথায় দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।হাফিজুল নিলু/এফএ/পিআর