রাজনীতি

হাসিনাকে বিশ্বাসই ছিল বড় ভুল : খালেদা

শেখ হাসিনার কথা বিশ্বাস করে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করা বড় ভুল সিদ্ধান্ত ছিল বলে জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোটের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। শুক্রবার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।খালেদা জিয়া বলেন, শেখ হাসিনা বলেছিলেন সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখার স্বার্থে এটি একটি নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে একটা সমঝোতা হলে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নতুন নির্বাচনের দেওয়া হবে। তার এই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আমরা নির্বাচন পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করি।তিনি আরো বলেন, কিন্তু যথারীতি তিনি (শেখ হাসিনা) তার সেই অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছেন। আর শেখ হাসিনার কথা বিশ্বাস করে আমাদের সেই সিদ্ধান্ত (আন্দোলন প্রত্যাহরের) নেয়া যে সঠিক ছিল না তা আমরা অচিরেই বুঝতে পারি। আর এটাই ছিল বড় ভুল।খালেদা জিয়া বলেন, আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করার পর সারা দেশে যৌথবাহিনীর অভিযানের নামে তারা এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। বিচার বহির্ভূত হত্যা, গুম, খুন, অপহরণ ও নির্যাতনের মাধ্যমে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। বিরোধী দলের শত শত নেতা-কর্মীকে হত্যা ও গুম করা হয়। তাদের আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের ওপরেও নির্যাতন চালানো হয়। রাজধানী থেকে প্রত্যন্ত পল্লী পর্যন্ত চলতে থাকে এই হত্যা ও উৎপীড়নের তান্ডব।প্রতিশ্রুতি রক্ষার কোনো দৃষ্টান্ত আওয়ামী লীগের নেই অভিযোগ করে বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, ১৯৮৬ সালে প্রতিশ্রুতি লংঘন করে স্বৈরাচারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিয়ে তারা আত্মস্বীকৃত জাতীয় বেঈমানে পরিণত হয়েছিলেন। ৫৭ বছর বয়সে রাজনীতি থেকে অবসর নেয়ার অঙ্গীকারও অবলীলায় ভঙ্গ করতে দেশবাসী দেখেছে। এ রকম আরো বহু উদাহরণ রয়েছে।বেগম জিয়া বলেন, দেশের সচেতন ও বিবেকবান কোনো নাগরিক সমঝোতার কথা বললেই সরকার তাদের অপমানিত ও লাঞ্ছিত করছে। আমরা আলোচনার ভিত্তি হিসাবে সাত দফা প্রস্তাব দেই। তারা সঙ্গে সঙ্গে তা নাকচ করে দেয়। এই পরিস্থিতিতে সংকট নিরসন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং ভোটাধিকারসহ জনগণের সকল অধিকার ফিরিয়ে আনতে আন্দোলন ছাড়া আর কোনো পথ আমাদের সামনে খোলা রাখেনি সরকার। তাই আমরা বাধ্য হয়ে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়েছি।সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধী রাজনীতি ও ভিন্নমতকে আওয়ামী লীগ দমন করে দেশে কার্যত একদলীয় ব্যবস্থা প্রবর্তন করে ফেলেছে। সংবাদ-মাধ্যমকে ভয় দেখিয়ে নিয়ন্ত্রণ করে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে প্রচারযন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। মানুষের সব অধিকার তারা কেড়ে নিয়েছে। এর বিরুদ্ধে লড়াই না করলে আমাদের স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে। তাই আমরা আন্দোলনের ডাক দিয়েছি। জনগণের সেই গণতান্ত্রিক আন্দোলন এখন চলছে।তিনি বলেন, আন্দোলনে দেশবাসী ও নেতা-কর্মীর কষ্ট ও ক্ষয়ক্ষতির কথা আমরা জানি ও বুঝি। কেবল ক্ষমতাসীনরা তা বুঝে না। জনগণের দুর্দশা লাঘবের চেয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকাই তাদের কাছে বড়।এসআই/আরএস/পিআর