ফিচার

জামালপুরের জামাই মেলা

জামালপুরে জমে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী ‘জামাই মেলা’। সদর উপজেলার ঝাওলা গোপালপুরে প্রায় দুইশ বছর থেকে চলে আসছে এই মেলা। মেলায় জামালপুর সদরের ৪টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামে গেরস্থের বাড়িতে বাড়িতে এখন মেয়ে-জামাই নিয়ে চলছে উৎসবের আমেজ। জামালপুরে ঝাওলা গোপালপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ৭ দিনব্যাপী এই ঐতিহ্যবাহী ‘জামাই মেলা’ রোববার থেকে শুরু হয়েছে। মেলাকে ঘিরে পূর্ব জামালপুরের বাঁশচড়া, নরুন্দি, ইটাইল, ঘোড়াধাপ ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামে এখন চলছে উৎসবের আমেজ। নরুন্দি গ্রামের ষাটোর্ধ্ব মনসুর আলী জানান, গ্রামের গেরস্থরা মেলা উপলক্ষে মেয়ে-জামাইকে নাইওর নিয়ে এসেছে। ৭ দিন মেয়ে-জামাইকে নানা উপহার, সেলামি দেয়া ছাড়াও সব ধরণের মিষ্টান্ন দিয়ে আপ্যায়ন করা হবে। এই উৎসব আনন্দে শরিক হতে দূরে বিয়ে দেয়া মেয়ে আর জামাইরা অপেক্ষায় থাকে সারা বছর। মেলা উপলক্ষে শশুড়বাড়ি এসে সবকিছুকে ছাড়িয়ে জামাইরা মন ভরে উপভোগ করে শ্বশুড়বাড়ির আদর-আপ্যায়ন।বাঁশচড়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আবুল হোসেন জানান, প্রায় দুইশত বছর আগে এই মেলার প্রচলন করেছিলেন এই অঞ্চলে বসবাসকারী সনাতনী হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। ভারত বিভক্তির আগ পর্যন্ত বারুনি স্নান উপলক্ষে এখানে চৈত্র মেলা বসতো। মেলাকে ঘিরে হিন্দু-মুসলিম সকলেই মেতে উঠতো নানা উৎসব অনুষ্ঠানে। গেরস্থের বাড়িতে জামাই আগমনের সূত্র ধরে ভারত বিভক্তির পর এই মেলা পরিচিতি পায় জামাই মেলা হিসেবে। এবার বিশাল এলাকা জুড়ে বসা এই মেলায় গ্রামীণ ঐতিহ্যের সবকিছুর সাথে গেরস্থের প্রয়োজনীয় তৈজসপত্র, ফার্নিচার ছাড়াও ঐতিহ্যবাহী গোপালপুরের বিখ্যাত নানা রকমের মিষ্টির পসরা নিয়ে বসেছে দোকানিরা। বিশেষ করে মেলার এক কেজি ওজনের বালিশ মিষ্টি দৃষ্টি কেড়েছে সবার। আগামী শনিবার পর্যন্ত এই মেলা চলবে।মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারেক জানান, এই মেলা আমাদের ঝাওলা গোপালপুরের ঐহিত্যবাহী মেলা। পূর্বে এই মেলার নাম চৈত্র মেলা হলেও কালের পরিক্রমায় এটি জামাই মেলা হিসেবেই পরিচিতি পয়েছে। এবারের মেলায় দুই হাজারের অধিক স্টল স্থান পেয়েছে। এএ