উত্তরাঞ্চলের জয়পুরহাট জেলায় শীতের প্রকোপ একটু বেশিই। আর তাই শীত নিবারণে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন লেপ-তোষক কারিগররা। তাদের পাশাপাশি বেশ লাভে আছেন ব্যবসায়ীরাও। মাত্র ২-৩ মাসের শীত মৌসুমে জেলার কয়েক`শ দক্ষ কারিগর লেপ-তোষক তৈরি করে পারিশ্রমিকের সঞ্চয় দিয়েই চালান সারা বছরের সংসার।শীত মৌসুম এলেই নতুন নতুন লেপ-তোষক তৈরি করে শীত নিবারণ করে থাকেন শীত প্রবণ এলাকা বলে পরিচিত উত্তর জনপদের জয়পুরহাট জেলাবাসী। এ জেলার বিভিন্ন হাটে-বাজারেও এ কারণে বসে নানা রকমের তুলাসহ লেপ-তোষকের দোকান। এসব দোকানে লেপ-তোষক তৈরির কারিগররাও আসেন জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে। সারা বছর শেষে মাত্র শীতের ক’মাসই তাদের একটু বাড়তি আয়, আর তা দিয়েই তারা চালান সংসারের ভরণ-পোষণ। স্বাভাবিক কারণে এই ক’মাস বেশ কেনা-বেচাও হয় লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে। লেপ তৈরি করতে আসা ক্রেতা জয়পুরহাট শহরের আদর্শপাড়ার রুহুল আমিন ও ক্ষেতলাল উপজেলার কৃষ্ণ সাহা জানান, শীতের কারণে লেপ-তোষকের কারিগররা খুব ব্যস্ত, বেশি বেশি লেপ-তোষক তৈরি করছেন সাধারণ মানুষ। এ কারণে প্রকার ভেদে লেপ-তোষকের দামেরও কম-বেশি হচ্ছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে। লেপ-তোষক দোকানী আবুল হোসেন ও রমজান আলী বলেন, ডবল লেপ ১০০০ টাকা, সিঙ্গেল লেপ ৫২০ টাকা, বাচ্চাদের লেপ ২৫০ টাকা, তোষক ২০০০-২২০০ টাকা। তবে তুলার প্রকারভেদে লেপ-তোষকের দাম কম-বেশি হয়। এছাড়া দিন-দিন জিনিষপত্রের দাম বেশি হওয়ায় লেপের দাম বেড়ে গেছে।লেপ-তোষক কারিগর আহসান হাবিব ও আরমান হোসেন বলেন, প্রকারভেদে লেপ-তোষক তৈরির মজুরি ১৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত হয়, শীতের সময়টাই শুধু আমাদের চাপটা একটু বেশি তবে অন্যান্য সময় প্রায় আমাদের বসেই থাকতে হয়।জয়পুরহাট জেলার বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক আবু বকর সিদ্দিক জানান, জেলার অগনিত দক্ষ লেপ-তোষক কারীগরদের আয়ের উৎস এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বছরের বেশির ভাগ সময়ে তাদের কেউ অন্য পেশায় চলে যান, কেউ বা কয়েক দিন মজুরীর কাজ, কেউ বা আবার শীত চলে গেলে হয়ে পড়েন বেকার। আর অল্প সংখ্যক কারীগরদের কাজ জোটে শুধু তোষক আর বালিশ তৈরিতে। জেলায় ঠিক কী পরিমাণ লেপ-তোষক কারীগর আছেন তার সংখ্যা-পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নেই তবে এ ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সকল ধরনের আশ্বাসের কথা জানান স্থানীয় এই বিসিক কর্তৃপক্ষ।বছরের বাকি সময়গুলোতে এই দক্ষ শিল্পীদের দিয়ে সাধারণ ও নকশী কাঁথা তৈরি করে তা দেশ-বিদেশের বাজারে বিপণন করার সম্ভাবনা থাকলেও বিসিকের উদাসিনতায় বা সীমাবদ্ধতায় তা সম্ভব হয়নি আজো। তাই এই দক্ষ কারিগরদের জনসম্পদে পরিণত করার দাবি জয়পুরহাটবাসীর। রাশেদুজ্জামান/এফএ/আরআইপি