দেশজুড়ে

সেতুর অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন লক্ষাধিক মানুষ

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ-খানসামা উপজেলার আত্রাই নদীর জয়গঞ্জ আন্তঃজেলা খেয়া ঘাটের উপর সেতু না থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন দুই জেলার লক্ষাধিক মানুষ। সেতু নির্মাণ হলে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ-খানসামা উপজেলার সঙ্গে ঠাকুরগাঁও ও নীলফামারী সরাসরি যোগাযোগ হবে।সেতুটি নির্মাণ করা হলে ঠাকুরগাঁওয়ের গড়েয়া হাট, দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ, খানসামা, নীলফামারী সদর উপজেলার নীলসাগর দীঘি, ভবানীগঞ্জ হাটের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নে আরো একধাপ এগিয়ে যাবে।খরা মৌসুমে নদীর উপর তৈরি বাঁশের সাঁকো দিয়ে হাজারো সমস্যা নিয়ে নদী পারাপার করছে নদীর ধুই পাশের বিভিন্ন গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। সেতুটি নির্মিত হলে এলাকার লোকজন ঠাকুরগাঁও ও নীলফামারী জেলা শহরের সঙ্গে সরাসরি আসা-যাওয়া করতে পারবেন। ফলে সহজ হয়ে উঠবে শিক্ষা, কৃষি, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুবিধা ভোগ করার।সরেজমিনে দেখা যায়, দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার ৩নং শতগ্রাম ইউনিয়নের ঝাড়বাড়ী চৌরাস্তা মোড় থেকে আত্রাই নদী পার হয়ে পূর্ব দিকের নীলফামারী জেলার ১৭ কিলোমিটারের মধ্যে খানসামা উপজেলা, আত্রাই নদীর পশ্চিমে ঝাড়বাড়ী চৌরাস্তা মোড় থেকে ঠাকুরগাঁও ২২ কিলোমিটার মধ্যে পড়ে ঝাড়বাড়ী হাট, বাহাদুর বাজার ও গড়েয়া হাট। এছাড়া ঝাড়বাড়ী চৌরাস্তা মোড় থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরে দেবীগঞ্জ উপজেলা ও দক্ষিণে বীরগঞ্জ উপজেলার অবস্থান রয়েছে।উত্তরাঞ্চলের ঠাকুরগাঁও জেলার গড়েয়া, শুখানপুকুরী, বালিয়া, আকচা ইউনিয়ন এ বাসিন্দারা আত্রাই নদী পাড়ি দিয়ে নীলফামারী সদর হয়ে বিভাগীয় শহর রংপুরের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন। অপরদিকে বীরগঞ্জ উপজেলার ৩নং শতগ্রাম ইউনিয়ন এর লোকজন আত্রাই নদী পাড়ি দিয়ে বৃটিশ আমল থেকেই ভবানীগঞ্জে লোকজন ঝাড়বাড়ী হাটে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করে আসছেন। অনুরূপভাবে ঝাড়বাড়ী ও ভবানীগঞ্জের শিক্ষার্থীরাও সেই অতীতকাল থেকে ঠাকুরগাঁও, বীরগঞ্জ, ঝাড়বাড়ী ও নীলফামারী সদরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে লেখাপড়া করে আসছে। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে প্রবল স্রােতের মধ্যে লোকজন ঝুঁকি নিয়ে খেয়া নৌকায় নদী পার হয়ে থাকেন। এতে নৌকা ডুবির ঘটনা হরহামেশাই ঘটে।এরকম নানা কারণে আত্রাই নদীর উপর সেতু নির্মাণ এখন এলাকাবাসীর যৌক্তিক দাবিতে পরিণত হয়েছে।  আত্রাই নদীতে গিয়ে দেখা যায়, বীরগঞ্জ উপজেলার ৩নং শতগ্রাম ইউনিয়নের বলদিয়াপাড়া গ্রাম এলাকায় গড়ে ওঠা খেয়াঘাট নামক জয়গঞ্জ ঘাট হয়ে বাশের সাঁকো দিয়ে আত্রাই নদী পার হচ্ছেন শিক্ষার্থী ও শিশুরা।বলদিয়া পাড়া গ্রামের কাপড় ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গাগীর আলম বলেন, আমি সপ্তাহে দুইদিন করে ভবানীগঞ্জ হাট করি। রাতের বেলায় যাতায়াতের অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। জয়গঞ্জ ঘাটের ইজারদার মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, এই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ পারাপার হয়, বিশেষ করে নীলফামারী ও ঠাকুরগাঁও জেলার মানুষ পারাপার হয়ে থাকে, বন্যার সময় আমাদের অনেক ঝুঁকি নিয়ে মানুষ পারাপার করতে হয়। আমি যদিও জয়গঞ্জ আন্তঃজেলা খেয়া ঘাটের ইজারা নিচ্ছি কিন্তু আমি চাই এখানে সেতু নির্মাণ হোক।৩নং শতগ্রাম ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জনাব সৈয়দ আতাউর রহমান বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলা শহর থেকে ঝাড়বাড়ী হয়ে জয়গঞ্জ খেয়া ঘাট পেরিয়ে নিলফামারীর সরাসরি যোগাযোগ ছিল। সে কারণে এই রাস্তাটিও অনেক প্রশস্ত। ১নং আলোকঝাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আ স ম আতাউর রহমান বলেন, জয়গঞ্জ আন্তঃজেলা খেয়া ঘাট দিয়ে অনেক মানুষ  পারাপার হন, এখানে সেতু নির্মাণ হলে বিশেষ করে আশেপাশে কয়টি ইউনিয়নের উন্নতি হবে তাই আমি সরকারে কাছে জোর দাবি জানাই যেন এখানে খুব তাড়াতাড়ি একটি সেতু নির্মাণ করা হয়।এমদাদুল হক মিলন/এফএ/পিআর