দেশজুড়ে

অসহায় নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করাই তার কাজ

মমতাজ হাই শোভা একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। ‘অপরাজিতা হোম ক্রাফটস’- এর মালিক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়েও চাকরির পেছনে ছুটেননি।চেয়েছেন নিজে নিজে স্বনির্ভর হবেন এবং পিছিয়ে পড়া অসহায় নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে তাদেরকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলবেন। তার সেই স্বপ্ন আজ সফল হয়েছে। তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন নারীদের স্বনির্ভর করার স্বপ্নকে বাস্তবরূপ দিতে। ময়মনসিংহ সদর উপজেলার সুতিয়াখালি ইউনিয়নে তার জন্মভূমি। ময়মনসিংহ শহরের নাটকঘরে অবস্থিত তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান ‘অপরাজিতা হোম ক্রাফটস’-এর মালিক। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২০১৫ সালের জয়িতা অন্বেষণ কার্যক্রমের আওতায়, ‘তোমরাই বাংলাদেশের বাতিঘর।’ এই স্লোগানের অর্থনৈতিকভাবে সফলতা অর্জনকারী নারী ক্যাটাগরিতে ১৭ জেলার সফল নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান লাভ করে ‘জয়িতা’ পুরস্কার লাভ করেন মমতাজ হাই শোভা।মমতাজ হাই শোভা এমবিএ পাস করে নিজেকে স্বাবলম্বী করার প্রচেষ্টা শুরু করেন। ঘরে বসেই তিনি হ্যান্ডিক্রাফটসহ টেইলারিংয়ের কাজ শুরু করে। প্রথমে এলাকায় ও পরে জেলা শহরে তার তৈরি মেয়েদের পোশাক বিক্রি শুরু হয়। পরে আরও বড় আকারে তার কার্যক্রম শুরু করার জন্য ময়মনসিংহের আরেক সফল নারী উদ্যোক্তা আইনুন নাহারের সহযোগিতা ও পরামর্শে তিনি মহিলাদের সেলাই ও হ্যান্ডিক্রাফটের কাজে প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু করেন। শোভা ২০১৩ সালে শহরে কাঁচিঝুলিতে তার প্রতিষ্ঠানের শো-রুম ও কারখানা স্থাপন করেন। তিনি ৪০ জন নারী কর্মীকে প্রশিক্ষিত করে তার প্রতিষ্ঠানেই বিভিন্ন কাজ দেন। তারা আজ আর্থিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। তার প্রতিষ্ঠানে ৪০টি পরিবার আর্থিকভাবে সফল হয়েছে। প্রথম দিকে ৪০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে শো-রুম ও কারখানা শুরু করি। পরে ব্যাংক থেকে আরও ৪ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ব্যবসাকে সম্প্রসারিত করি। এভাবে আজ নিজেই একটা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি। নিজের সফলতার কথাগুলো এভাবে প্রকাশ করলেন শোভা।‘অপরাজিতা হোম ক্রাফটস’র তৈরি সোফার কুশন, কভার, মহিলাদের হাতের ব্যাগ, পর্দা, জুট ব্যাগ শোপিচ, শাড়িতে সুতার কাজ, এপলিক, মেয়েদের সালোয়ার-কামিজ, পুরুষদের ফতোয়া তৈরি হয়।তার প্রতিষ্ঠানের তৈরি অনেক সামগ্রী বিভিন্ন দেশে রফতানি হয়ে থাকে। তার কাজের সাফল্যের কারণে ময়মনসিংহসহ ময়মনসিংহ বিভাগের নারী উদ্যোক্তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ময়মনসিংহ জেলা নারী উদ্যোক্তা ও উন্নয়নফোরামের মমতাজ হোই শোভা সাধারণ সম্পাদক। এই সংগঠনের সভাপতি হচ্ছেন তার কাজের প্রেরণাদানকারী সফল নারী উদ্যোক্তা আইনুন নাহার।মমতাজ জানান, তিনি এই কাজ করে নিজেকে খুব সুখি মনে করেন। কারণ পিছিয়ে পড়া নারীদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার সুযোগ পেয়েছেন। এটা তার একটি সামাজিক ও নৈতিক দায়িত্ব মনে করেন। তার আশা ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে আরও বৃহৎ আকারে তার কারখানাকে প্রতিষ্ঠা করে আরও অসংখ্য নারীকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে সক্ষম হবেন। আতাউল করিম খোকন/এএম/এমএস