খুলানায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির নেতাদের রাজপথে কখনও একসঙ্গে দেখা না গেলে এক স্থানে তাদের গলায় গলায় পিরিত। শুধু রূপসার তীর দখলে এ দুই দলের স্থানীয় নেতারা একাট্টা। সরেজমিনে এমন তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস সাত্তার খলিফা রূপসা নদীর তীরে প্রায় ৩৫ ফুট বাই ১৭০ ফুট জায়গা দখল করে ইটের গোলা বসিয়েছেন। ইটের গোলা ঢুকে গেছে নদীর ভেতরেও। তার পাশেই ৫৮ ফুট বাই ১৬৭ ফুট জায়গা দখল করে ইট ও বালুর ব্যবসা করছেন ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি ইয়াকুব আলী খান পলাশ। তিনি কোনো ডিসিআরই দাখিল করেননি। শুধু আবদুস সাত্তার খলিফা বা ইয়াকুব আলী পলাশই নন; নগরীর ১ নম্বর কাস্টম ঘাট এলাকায় রূপসা নদীর তীর ও কয়েক জায়গায় নদী দখল করে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছেন প্রভাবশালীরা। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ, বিএনপি নেতারা যেমন আছেন, আছেন সাবেক সংসদ সদস্য, কাউন্সিলর ও নাগরিক নেতারাও। প্রায় ৬ একর সরকারি সম্পত্তি দখল করে ব্যবসা করছেন ৬১ জন প্রভাবশালী ব্যক্তি। নদীর তীরের বিশাল এলাকা দখল করে কেউ ইটের গোলা, কেউ বালু ও পাথরের ব্যবসা করছেন। অনেকে নদীর ভেতরের জায়গাও দখল করে রেখেছেন। নদী দখল করে তৈরি করা হয়েছে বিশাল ডকইয়ার্ড। সেখানে নির্বিঘেœ চলছে আগুন দিয়ে লোহা কাটা ও জোড়া লাগানোর কাজ। দখলদারদের মধ্যে ২৩ জন বাংলা ১৪১৯ সন পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের (ডিসিআর কেটেছেন) অনুমোদন নিয়েছেন। বাকিরা কোনো ডিসিআর ছাড়াই ভোগদখল করছেন।আবদুস সাত্তার খলিফা বলেন, আমরা ডিসিআর কেটেই দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছি। ১৪১৯ সনের পর সরকার ডিসিআর দিচ্ছে না। এখানকার সব ব্যবসায়ীরই একই অবস্থা।ইয়াকুব আলী খান পলাশ বলেন, জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়েই আমরা ব্যবসা করছি। আমাদের সবারই ডিসিআর কাটা আছে। এখানে কেউ অবৈধ দখলদার নন।এদিকে, রূপসা নদীর তীরবর্তী সরকারি জমি অবৈধভাবে দখল করে থাকা ব্যবসায়ীদের তালিকা সম্প্রতি তৈরি করেছে জেলা প্রশাসন। তালিকা তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্ত জেলা প্রশাসনের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) মো. ফরিদ হোসেন বলেন, সরকারি সিদ্ধান্তের কারণে বাংলা ১৪১৯ সনের পর থেকে নদীর তীরে কাউকে ডিসিআর দেওয়া হচ্ছে না। এজন্য এখন সবাই অবৈধ। সম্প্রতি আমরা ৬৫ জন অবৈধ দখলদারের তালিকা তৈরি করেছি। এর মধ্যে ৪টি সরকারি প্রতিষ্ঠান, বাকি ৬১টি ব্যক্তি মালিকানা।অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আবু দাউদ মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, কিছু তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এখন নদীর সীমানা চিহ্নিত করাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। শিগগিরই নদীতে সীমানা পিলার স্থাপনের কাজ শুরু হবে। এর সঙ্গে চলবে দখলদারদের নামের তালিকা তৈরির কাজ।এএইচ/পিআর