দেশজুড়ে

রায়পুরায় সংঘর্ষে আহত আরেকজনের মৃত্যু

নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চল বাঁশগাড়িতে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ফের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দা, টেঁটা, বল্লম ও আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পুনরায় সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা চালায় গ্রামবাসী।

এদিকে, বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এই নিয়ে সংঘর্ষে দুইজন নিহত ও অর্ধ-শতাধিক লোক আহত হয়েছেন।

নিহত মাসুদ মিয়া (২৬) স্থানীয় বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের বীরকান্দী গ্রামের শরিফ মিয়ার ছেলে।

বৃহস্পতিবারও দু’পক্ষ টেঁটা ও অস্ত্র নিয়ে ফের সংঘর্ষে জড়ানোর চেষ্টা করে। পরে পুলিশ উভয়পক্ষকে সরিয়ে দেয়।

এর আগে গত বুধবার দিনভর সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শারফিন মিয়া (২০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান সাহেদ সরকার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সিরাজুল হকের সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বিগত ইউপি নির্বাচনের সময় বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান সাহেদ সরকার। কিন্তু নির্বাচনে স্থানীয় সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর পছন্দের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সিরাজুল হক চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়।

এরপর থেকে দু’পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুই ব্যক্তি নিহত ও অর্ধশত মানুষ আহত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সাহেদ সরকারের কয়েকশত সমর্থক এলাকা ছাড়া হতে বাধ্য হন।

গত কয়েকদিন যাবৎ তারা এলাকায় ফেরার চেষ্টা করে। কিন্তু সিরাজুল হকের পক্ষ বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি। এরই জের ধরে বুধবার সকাল থেকে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দিনভর সংঘর্ষে শারফিন মিয়া নামে একজন নিহত ও অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। এরই প্রেক্ষিতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে উভয়পক্ষ ফের টেঁটা ও অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ানোর চেষ্টা করে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে সরিয়ে দেয়। তবে উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান করায় যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে।

বিকেলে সংঘর্ষে আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মাসুদ মিয়ার মৃত্যু হয়। তিনি চেয়ারম্যান সিরাজুল হকের সমর্থক ছিলেন। নিহতের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহতের খবরে বাঁশগাড়িতে ফের উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

রায়পুরা থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত দু’জন নিহত হয়েছেন। তবে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায় রায়পুরা থানায় কোনো পক্ষই মামলা দায়ের করেনি।

উল্টো উভয়পক্ষ আবারও হামলা ও সংঘর্ষের চেষ্টা করছে। অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে।

সঞ্জিত সাহা/এআরএ/জেআইএম