নরসিংদীতে দীর্ঘ ১৪ বছর পর আগামীকাল রোববার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলনকে ঘিরে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন দলের নেতাকর্মীরা। লবিং-তদবিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন পদ প্রত্যাশীরা। নতুন সাজে সাজানো হয়েছে পুরো শহরকে। নেতাকর্মীদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে নবজাগরণ। সফল ও সুন্দর সম্মেলন উপহার দিতে বিদ্যুৎ, খনিজ ও জ্বালানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদসহ কেন্দ্রীয় নেতারা সার্বিক খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।
জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালের ২৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল জেলা যুবলীগের সম্মেলন। দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পর সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও পেরিয়ে গেছে দীর্ঘ ১৪ বছর। এরই মধ্যে আগামী নির্বাচনসহ দল গোছানোর সিদ্ধান্ত নেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা। বলিষ্ট নেতৃত্ব তৈরি করতে জেলা-উপজেলা, শহর থেকে ওয়ার্ড পযর্ন্ত সকল পর্যায়ের অঙ্গ-সংগঠনকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেয় নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগ। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ৭ মে জেলা যুবলীগের সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এদিকে জেলা যুবলীগের সম্মেলনের দিন ঠিক হওয়ার পর দুই শীর্ষ পদে একাধিক প্রার্থীর নাম আলোচিত হচ্ছে। এদের মধ্যে সভাপতি পদে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামী, সদর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও শীলমান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল বাকির, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবদুল বাছেদ ভূঞা এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম নেওয়াজ ও পলাশ উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদ তুষারের নাম আলোচনায় রয়েছে।
জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামী বলেন, বিগত ১৪ বছর যুবলীগকে নরসিংদীর প্রতিটি উপজেলা থেকে শুরু করে গ্রামে বিস্তৃত করেছি। দলের আন্দোলন-সংগ্রামে নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে সোচ্ছার ছিলাম। জেলার শীর্ষ নেতৃত্ব যদি আমাকে দায়িত্ব দেয় তাহলে জীবন বাজি রেখে রাজপথে থেকে যুবলীগেকে ঢেলে সাজাবো।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামীম নেওয়াজ বলেন, আমি বিগত দিনে নরসিংদী সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদ ও জেলা ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিয়েছি। অতীতে সারা জেলায় যেভাবে ছাত্রলীগের জোয়ার তুলেছিলাম, যুবলীগের নেতৃত্ব পেলে আগামী দিনে যুবলীগেরও জোয়ার বইবে। এই সম্মেলন হবে সারা বাংলাদেশের জন্য মডেল সম্মেলন। আসছে রোববার পুরো নরসিংদীতে তারুণ্যের জোয়ার বইবে।
নরসিংদী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লা বলেন, বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামী দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত নেতা। বিগত দিনে রাজনীতির মাঠে তার বলিষ্ঠ পদচারণা ছিল। অপরদিকে শামীম নেওয়াজও জনপ্রিয় ছাত্রনেতা। তারা দুজন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন। অন্য কেউ তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যাবে না বলে আমার বিশ্বাস।
এদিকে সম্মেলনকে ঘিরে বর্ণিল সাজে সেজেছে মোসলেহ উদ্দিন ভূঞা স্টেডিয়াম। পুরো স্টেডিয়ামে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। সম্মেলনকে আকর্ষণীয় করতে নৌকার আদলে ১২০ দৈর্ঘ্য ও ৪২ ফুট প্রস্থ বিশাল আকার মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে। সড়ক-মহাসড়কে নির্মাণ করা হচ্ছে শতাধিক তোরণ। শহরজুড়ে পদ প্রত্যাশী প্রার্থীরা ব্যানার-ফেস্টুন লাগিয়েছে। সড়ক মহাসড়কে তৈরি করা হয়েছে শতাধিক তোরণ। তবে সভাপতি পদে বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামী ও সাধারণ সম্পাদক পদে শামীম নেওয়াজ ছাড়া অন্য কারও প্রচারনা দেখা যায়নি।
রোববার জেলা যুবলীগের এ সম্মেলন উদ্বোধন করবেন যুবলীগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হীরু (বীর প্রতীক), নরসিংদী-৫ আসনের সাংসদ রাজিউদ্দিন আহম্মেদ রাজু ও নরসিংদী ০৪ আসনের সাংসদ অ্যাডভোকেট নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ। জেলা যুবলীগের সভাপতি একরামুল ইসলাম এতে সভাপতিত্ব করবেন।
সঞ্জিত সাহা/আরএআর/আরআইপি