রাজনীতি

এতিমদের কাছে টেনে নিলেন খালেদা

এতিম ও ওলামা-মাশায়েখদের সঙ্গে পবিত্র মাহে রমজানের প্রথম রোজার ইফতার করলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। রাজধানীর ইস্কাটনে লেডিস ক্লাবে বিএনপি চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে রোববার এ ইফতারের অায়োজন করা হয়।

বিগত বছরগুলোতেও রমজানের প্রথম রোজার ইফতার ওলামা-মাশায়েখ ও এতিমদের সঙ্গে করে আসছেন বেগম জিয়া। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

ইফতার মাহফিলে মদিনাতুল উলুম মহিলা কামিল মাদরাসা, রহমতে আলম মিশন (তেজগাঁও), শান্তিনগর বাজার মসজিদ মাদরাসা ও এতিমখানা এবং ফকিরাপুল মাদরাসা ও এতিমখানার দুইশতাধিক এতিম শিক্ষার্থী অংশ নেয়।

রোববার বিকেল ৬টা ২৫ মিনিয়ে খালেদা জিয়া লেডিস ক্লাবে উপস্থিত হয়ে আগত এতিম ও ওলামা-মাশায়েখদের টেবিলে ঘুরে ঘুরে তাদের খোঁজ-খবর নেন। এরপর মঞ্চে তার নির্ধারিত আসনে বসেন তিনি।

মঞ্চে খালেদা জিয়ার দুই পাশের চেয়ারে বসেছিল দুই এতিম শিশু। খালেদা জিয়ার চেয়ার থেকে দুই এতিম শিশুর বসার চেয়ারটা কিছুটা দূরে ছিল। কিন্তু নিজ আসনে বসার পর এতিম শিশুদের দূরে বসার বিষয়টি মানতে পারেননি খালেদা। তাই তিনি মূল মঞ্চে উঠেই দুই পাশে থাকা এতিম দুই শিশুকে তার কাছে নিয়ে আসেন।

বাবা-মা ছাড়া বেড়ে ওঠা এই এতিম শিশুরা খালেদা জিয়ার পাশে বসে তৃপ্তি নিয়ে ইফতারি করে। বেশ কয়েকজন এতিম শিশুর সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়।

তারা জানায়, খালেদা জিয়ার ইফতারে কারা অংশ নেবে এতিমখানায় যখন তাদেরকে এমনটা বলা হয়েছিল তখন অনেক শিক্ষার্থী তাদের হাত তুলে সম্মতিজ্ঞাপন করলেও সবাইকে এখানে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি।

আজ যারা সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ইফতারিতে অংশ নেয়ার সুযোগ পেয়েছে তাদের আনন্দের সীমা ছিল না। খালেদা জিয়ার এই ইফতারি আয়োজনে খেজুর, পেঁয়াজু, বেগুনি, ছোলা, জিলাপি, মোরগ পোলাও ও ডিম দেয়া হয়েছিল।

এদিকে খালেদা জিয়ার বিগত বছরগুলোর ইফতারে চরম অব্যবস্থাপনা থাকলেও এবার কিছুটা কমেছে।

ইফতারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, তরিকুল ইসলাম, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ড.আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল কাইয়ুম, আব্দুস সালাম, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক বদরুজ্জামান খান খসরু, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল বারী ড্যানী, জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের সভাপতি মাওলানা হাফেজ আব্দুল মালেক, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলানা শাহ নেছারুল হক প্রমুখ অংশ নেন।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মাওলানা সাইয়্যেদ কামাল উদ্দিন জাফরী, সোবহানবাগ জামে মসজিদের খতিব  মাওলানা শাহ ওয়ালী উল্লাহ, বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের সাধারণ সম্পাদক ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) পীর সাহেব মাওলানা আব্দুল মোমেন নাছেরী, মাদরাসা-ই-নূরীয়ার মোহাদ্দিস (কামরাঙ্গীরচর) মাওলানা মুজিবর রহমান হামিদী, যুদ্ধাপরাধ মামলায় আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাইদীর ছেলে শামীম সাইদী প্রমুখ।

ইফতারে মোনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের সভাপতি মাওলানা হাফেজ আব্দুল মালেক। মোনাজাতে খালেদা জিয়ার ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়। এছাড়াও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়।

এদিকে মাহে রমজানের দ্বিতীয় দিন (সোমবার) গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে ঢাকায় অবস্থানরত মুসলিম দেশসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে ইফতার করবেন খালেদা জিয়া।

এছাড়া বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারের নবরাত্রীতে ৩ জুন বিএনপির নেতাকর্মী, ৪ জুন পেশাজীবী এবং ৫  জুন রাজনীতিবিদদের সম্মানে ইফতার পার্টি দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

এমএম/জেডএ/আরআইপি