নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চল চানপুরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে ২০ জন। সোমবার সকালে চানপুর ইউনিয়নের সওদাগর কান্দি গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তি হলেন, সওদাগর কান্দি গ্রামের মৃত আবদুল রহিমের ছেলে আবদুল কাদির (৪২)। আহতদেরকে নরসিংদী ও নবীনগরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, প্রভাব বিস্তার নিয়ে দির্ঘদিন যাবৎ নরসিংদীর নদীবেষ্টিত সীমান্ত এলাকা চানপুর ইউনিয়নের দুর্গম চরাঞ্চল সওদাগর কান্দি গ্রামের আওয়ামী লীগ সমর্থিত আব্দুল্লাবাড়ি ও খান্নাবাড়ির মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে।
গত প্রায় এক বছর আগে খান্নাবাড়ির সামসু হাজীর ছেলে খোরশেদকে (৩৫) ধরে নিয়ে আব্দুল্লাবাড়ির লোকেরা হাত-পায়ের রগ কেটে কুপিয়ে আহত করে। এতে খোরশেদ প্রাণে বেঁচে গেলেও চিরতরে পঙ্গু হয়ে যায়। এ ঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা কবীর মিয়াসহ ২৫/৩০ জনকে আসামি করে রায়পুরা থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় রায়পুরা থানা পুলিশ আদালতে চার্জশিটও প্রেরণ করেছেন।
গত কয়েকদিন আগে কুয়েত প্রবাসী লিয়াকত মিয়া দেশে ফিরলে উভয় পক্ষের মধ্যে আপোষ মিমাংসার উদ্যোগ নেয়। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক আজ সোমবার সকাল ১০টায় সওদাগরকান্দি নদীর পাড়ে মিমাংসার জন্য বসেন উভয় পক্ষ। এরই এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের সমর্থদের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা ও টেটাযুদ্ধ বেধে যায়।
এতে খান্নাহবাড়ির সামসু হাজীর সমর্থক আবদুল কাদির বুকে টেটাবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আহত হন কমপক্ষে ২০ জন। আহতদের নরসিংদী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় ভূট্টো নামে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তবে অপর একটি সূত্র জানায়, গতকাল সামসু গ্রুপের জিয়া নামে এক লোক চানপুর থেকে ভৈরব যাচ্ছিল। সওদাগরকান্দী লঞ্চঘাটে তাকে গতিরোধ করে তার গলায় কবির লোকেরা দা ধরে। এরই জের ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় চানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোমেন সরকার সাংবাদিকদের বলেন, সকালে সংঘঠিত সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে এক জনের মৃত্যু হয়, আহত হয় কমপক্ষে ২০ থেকে ২২ জন। এদের মধ্যে মুমূর্ষ অবস্থায় ভূট্টো নামে একজনকে নবিনগর নেয়া হলে তার মৃত্যু হয়েছে বলে এলাকায় সংবাদ ছড়ায়। কিন্তু সর্বশেষ আমরা জানতে পেরেছি তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় বাজিরতপুর জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাহারুল ইসলাম সরকার বলেন, এলাকার দুটি গ্রুপ সালিশ দরবারে কথা কাটাকাটি নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়েছে বলে জানতে পেরেছি। পুলিশ ঘটনাস্থলে রওনা হয়েছে। পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর বিস্তারিত জানানো সম্ভব হবে।
সঞ্জিত সাহা/এফএ/এমএস