সাগর পাড়ি দিয়ে মানবপাচার প্রকট আকার ধারণ করায় এর সমাধান খুঁজতে আগামী ২৯ মে সম্মেলনের আহ্বান করেছে থাইল্যান্ড সরকার। অপরদিকে উদ্ধার অভিবাসীদের সাগরে ফেরত না পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। গত মঙ্গলবার থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যাংকক সম্মেলন আহ্বান করে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। এদিকে গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে অভিবাসীদের ফেরত না পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ব্যাংকক সম্মেলনে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যোগ দেবেন বলে জানা গেছে। এছাড়া সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন কম্বোডিয়া, লাওস, যুক্তরাষ্ট্র, ভিয়েতনাম ও অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিরাও। এক বিবৃতিতে থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মানবপাচার রোধে আঞ্চলিক সরকারগুলোকে এই বিশেষ বৈঠকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। বর্তমান সংকট নিরসন করতে হলে সবগুলো সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। বৈঠকে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক কমিশন (ইউএনএইচসিআর), ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম), অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংগঠনকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে সম্প্রতি উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশি ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো হবে না বলে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরমানাথা নাসিরের বরাত দিয়ে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। নাসির বলেছেন, ইন্দোনেশিয়া ১৯৫১ সালের উদ্বাস্তুবিষয়ক সম্মেলনে স্বাক্ষর না করলেও অভিবাসীদের ফেরত পাঠাবে না।জানা গেছে, গত সপ্তাহের শেষ দিকে প্রায় ছয়শ’ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা অভিবাসী উদ্ধার করেছে ইন্দোনেশিয়ার কর্তৃপক্ষ। তাদেরকে বর্তমানে আচেহ প্রদেশের উত্তরাঞ্চলে লোকসুকোন শহরের একটি ক্রীড়া কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এ অভিবাসীদের সাগরে প্রায় ডুবন্ত অবস্থা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।এদিকে উদ্ধার অভিবাসীদের পুনর্বাসন করতে ইন্দোনেশিয়ায় একটি বসতিহীন দ্বীপ ঠিক করা হবে বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আইওম) আঞ্চলিক প্রশাসন। মানবপাচারের এ সমস্যার জন্য মিয়ানমার সরকারকে অনেকাংশে দায়ী করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের উপ এশিয়া পরিচালক ফিল রবার্টসন বলেছেন, দেশটির সরকার রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন চালিয়ে সমস্যার জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া এ সমস্যাকে সংকটের দিকে নিয়ে গেছে ঠাণ্ডা মাথায় অভিবাসী বহনকারী নৌকাগুলোকে সাগরে ফিরিয়ে দিয়ে। এরপর অসহায় মানুষগুলোর ক্ষুধা-তৃষ্ণা, অসুস্থতা ও নৌকাডুবিতে মৃত্যুবরণ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। ফিল আরো বলেন, অভিবাসীদের উদ্ধার, মানবিক সহায়তা দান ও পুনর্বাসনে অন্যান্য সরকারগুলোর উচিত এই তিন সরকারকে একত্রে কাজ করতে আহ্বান জানানো।এসএইচএস/বিএ/পিআর