দেশজুড়ে

২৫ বছর ধরে প্রতিশ্রুতির ফাইলে বন্দি আশুগঞ্জ পৌরসভা

নব্বইয়ের ক্ষমতাসীন জাতীয় পার্টি থেকে শুরু করে পরবর্তী সব সরকার প্রধানরাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জকে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু প্রতিশ্রুতির ২৫ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি আশুগঞ্জ পৌরসভা। এর ফলে প্রতিশ্রুতির ফাইলেই বন্দি হয়ে পড়ে আছে পৌরসভার প্রস্তাবনা ফাইল।সর্বশেষ গত ২০১৩ সালের ২০ জুলাই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের পিডিবি কলোনিতে আয়োজিত এক সুধি সমাবেশে আবারও আশুগঞ্জকে পৌরসভা করার ঘোষণা দেন।জানা যায়, সরকারের পৌরসভা গঠন নীতিমালা-২০০৯ অনুযায়ী নতুন কোনো পৌরসভা গঠনের জন্য প্রস্তাবিত এলাকার জনসংখ্যা কমপক্ষে ৫০ হাজার, কর্মক্ষম জনসংখ্যার শতকরা ৭৫ শতাংশ অকৃষি পেশায় নিয়োজিত এবং তিন বছরের গড় রাজস্ব আয় ২০ লক্ষ টাকা হলেই পৌরসভা গঠনের প্রস্তাব করা যাবে। বর্তমানে আশুগঞ্জ পৌরসভা এলাকার জনসংখ্যা ৫৮ হাজার ৫৮৩ জন ও এখানকার কর্মক্ষম জনসংখ্যার শতকরা ৭৮ শতাংশ মানুষ অকৃষি পেশায় নিয়োজিত রয়েছে। গত তিন বছরের গড় রাজস্ব আয় ২২ লক্ষ টাকা। নীতিমালাজনিত জটিলতার কারণে বারবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে পৌরসভা গঠনের প্রস্তাবনা ফাইলটি ফেরত আসায় থমকে গেছে পৌরসভা বাস্তবায়নের কাজ। এর ফলে হতাশা প্রকাশ করেছেন এখানকার জনগণ।এদিকে চট্টগ্রামের পর দেশের দ্বিতীয় বন্দরনগরী হিসেবে পরিচিত আশুগঞ্জে একের পর এক গড়ে উঠছে সরকারি ও বেসরকারি শিল্প-কারখানা। আশুগঞ্জে রয়েছে আন্তর্জাতিক নৌ-বন্দর, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সার কারখানা, গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড, কমপ্রেসার স্টেশন, খাদ্য গুদাম, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র মৈত্রী সেতু, শহীদ হাবিলদার আব্দুল হালিম রেলওয়ে সেতু, পদ্মা অয়েল ডিপোসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এছাড়াও আশুগঞ্জের মেঘনা নদীতে চলছে দ্বিতীয় রেলওয়ে সেতুর নির্মাণ কাজ।হাওরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ধান ও চালের মোকাম রয়েছে আশুগঞ্জে। পাশপাশি সরকারিভাবে ধান-চাল কেনা-বেচার উল্লেখ্যযোগ্য স্থান হিসাবে পরিচিত আশুগঞ্জ খাদ্য গুদাম। এই উপজেলায় রয়েছে চার শতাধিক চাতাল কল। এসব চাতাল কলে কাজ করছেন ২০ হাজারেরও বেশি শ্রমিক।বর্তমান সরকার আশুগঞ্জকে বিশেষ অর্থনৈতিক জোন হিসাবে ঘোষণা করেছে। এছাড়া প্রতিবছর জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রাখছে আশুগঞ্জ উপজেলা। এত কিছুর পরও আশুগঞ্জ পৌরসভা বাস্তবায়িত না হওয়ায় হাতাশা প্রকাশ করে দ্রুত আশুগঞ্জকে পৌরসভা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করার দাবি জানিছেন উপজেলার দুই লাখ বাসিন্দা।এ ব্যপারে জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, কিছু ঘাটতি থাকার কারণে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে পৌরসভার প্রস্তাবনা ফাইলটি ফেরত পাঠানো হয়েছে। আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে ঘাটতিগুলো তদন্ত সাপেক্ষে যাচাই-বাছাই করে পুনরায় মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা ফাইল পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। অচিরেই আশুগঞ্জ পৌরসভার বাস্তবায়ন কাজ শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।আজিজুল আলম সঞ্চয়/এমজেড/এমএস