কারাভোগের পর ১৪ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে মায়ানমার। মঙ্গলবার দুপুরে মায়ানমারের ১ নম্বর পয়েন্ট অব এন্ট্রি অ্যান্ড এক্সিট এলাকায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদেরকে ফেরত দেয়া হয়। তারা পৃথক সময়ে মায়ানমারে অনুপ্রবেশের দায়ে আটক ও সাজাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। টেকনাফ ৪২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল আবু জার আল জাহিদ জাগো নিউজকে জানান, ব্যাটালিয়নের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার মো. জাকারিয়ার নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের একটি দল সকালে মায়ানমার যান। তাদের সঙ্গে ১ নম্বর পয়েন্ট অব এন্ট্রি অ্যান্ড এক্সিট এলাকায় বৈঠকে মিলিত হন মায়ানমারের কাস্টমস অ্যান্ড ইমিগ্রেশন বিভাগের সহকারি পরিচালক ইউ হাটং হাটং এর নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি দল। সৌহার্দপূর্ণ বৈঠক শেষে মায়ানমার কর্তৃপক্ষ সাজা শেষ হওয়া ১৪ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করেন। তারা হলেন, কক্সবাজারের মহেশখালীর তাজিয়াকাটা দক্ষিণপাড়ার মৃত ছৈয়দ আহমদের ছেলে আবদুর রহিম, উখিয়ার পশ্চিম পালংখালীর বশির আহমদের ছেলে জয়নাল আবেদীন, শফিকুর রহমানের ছেলে এবাদুল্লাহ, নুর হাশিমের ছেলে নুর কবির, ঢাকার দোহার মকসুদপুর এলাকার বাবুল খানের ছেলে রাজিব খান, চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চরম্বা ওয়াহিদেরপাড়ার আবুল কাশেমের ছেলে জসিম উদ্দিন, ফজল কবিরের ছেলে বাদশা মিয়া, সাতকানিয়ার বাজালিয়ার আবু বক্করের ছেলে আবদুর রহিম বদি, বান্দরবানের নাইক্ষ্যাংছড়ির বাবুল খেয়াং এর ইউ মং কোর ছেলে ইউ ক্য মং, আলীকদমের হাজী গুরামিয়াপাড়ার মুহাম্মদ জামালের ছেলে মুহাম্মদ আমিন, বান্দরবান ডুলুপাড়ার জাফর আহমদের ছেলে মুহাম্মদ ইউনূস, টেকনাফের গোদারবিল এলাকার আবদু শুক্কুরের ছেলে নুরুল আমিন, হ্নীলার লেদা এলাকার কালু মিয়ার ছেলে ইউছুফ ও নাজিরপাড়ার মৃত জাফর আহমদের ছেলে ছৈয়দ আলম। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল বেলা ২টায় ফেরত নাগরিকসহ টেকনাফ বিজিবি সীমান্ত ফাঁড়ির জেটি ঘাটে পৌঁছে। ৬ বছর সাজা ভোগ করে ফেরত ঢাকার দোহার মকসুদপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. রাজিব খান জাগো নিউজকে জানান, ২০০৯ সালে মানবপাচার চক্রের খপ্পরে পড়ে সাগর পথে মালয়েশিয়া পাড়ি দিতে গিয়ে ৮৮ মালয়েশিয়া যাত্রীসহ বিকল ট্রলারটি আটক করে মিয়ানমার নৌ-বাহিনী ও কোস্ট গার্ড সদস্যরা। পরে মিয়ানমার প্রশাসন তাদের বিভিন্ন মেয়াদের সাজা দেয়।তিনি আরও জানান, মিয়ানমার কারাগারে আমার মত অনেক বাংলাদেশি মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। তাদেরকেও যেন দেশে নিয়ে আশা হয় এ ব্যাপারে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন এ ভুক্তভোগী। প্রতিনিধি দলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষে সহকারি কমিশনার মো. মোবারক হোসেন, পুলিশ সুপারের পক্ষে টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) কবির হোসেনও অংশ নেন। ফেরত আনা ১৪ বাংলাদেশিকে হস্তান্তরের জন্য টেকনাফ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে এ বিজিবি কর্মকর্তা বলেন, ফেরত আনাদের মধ্যে ১১ জন মালয়েশিয়াগামী ও বাকি ৩ জন মাছ শিকারে যাওয়া জেলে ছিলেন। তিনি আরও জানান, মিয়ানমার কারাগারে আরও ১০০ বাংলাদেশি রয়েছেন। তাদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে। টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান খন্দকার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, ফেরত আসাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। সায়ীদ আলমগীর/এমজেড/পিআর